অ নু বা দ
১৯০৭-এ জন্ম। ১১ বছর বয়সে পিতৃহীন হওয়ার পর খুব কষ্টে জীবনধারণ করতে হয় তাঁকে। মোটামুটি এই সময়েই তাঁর কবিতা লেখার শুরু। যখন তাঁর কুড়ি বছর, তাঁর কবিতা পড়ে মুগ্ধ পল এল্যুয়ার নিজেই এসেছিলেন তাঁকে অভিনন্দন জানাতে। এই সময়েই এল্যুয়ার, ব্রঁতো আর আরাগঁ তাঁকে যুক্ত করে নিলেন স্যুররিয়ালিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে। “র্যাঁবোর পর র্যনে শ্যর-এর মতো ক্ষমতাসম্পন্ন কবি আর কেউ নেই।” – কাম্যু বিশ্বাস করতেন আর জোরের সঙ্গে ঘোষণা করতেন এই কথা।
ফ্রান্সের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন নিজের নাম গোপন করে। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যতদিন না জার্মান বাহিনী পরাজিত হচ্ছে, ততোদিন কবিতা প্রকাশ করবেন না তিনি। এই সময় অসংখ্য চূর্ণ কবিতা টুকরো টুকরো কাগজে লিখে রাখতেন, বৃক্ষহীন কোনো দ্বীপে শব্দ-বীজ ছড়িয়ে দেবার মতো।
১
পিটিয়ে মেরে ফেলা রাত্রির দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে আস্তে আস্তে আমরা বদলে নিই আমাদের।
২
ঘটনা প্রকৃতি আর কবি মাঝরাতে জেগে উঠে খোঁজে
রাত্রি খাবার আনে তাদের জন্য আর সূর্য মার্জিত করে তাদের শরীর।
৩
আমাদের অর্জন তুলে রাখা হয় তাদের জন্য পরে যারা অনুসরণ করবে আমাদের।
৪
অসীমতা আক্রমণ করে, কিন্তু একটা মেঘ এসে বাঁচিয়ে দেয় শেষ পর্যন্ত।
৫
সেই সব জীবনই শুধু রাত্রির বন্ধু যারা বসন্তে নিজেদের শেষ করে উড়ে যাবার কথা ভাবছে।
৬
তার বাগানের দরজা খুলে দিতে রাজি হবার আগে রাত্রি তার শরীরে মরচে মেখে নেয়।
৭
ভুতুড়ে কোনো ছত্রাক হয়ে ওঠে স্বপ্নরা, যখন জেগে উঠে রাত্রি তাদের দিকে তাকায়।
৮
আলো জ্বেলোনা রাত্রির কেন্দ্রে। সেখানে অন্ধকারই একমাত্র শাসক, যেখানে সকালের শিশির লিখে রাখে নিজেকে।
৯
শুধু রাত্রিই আসে রাত্রির পেছনে, স্বার্থপরের মতো যে সহ্য করে সূর্যের ঘন্টাঘর।
১০
রহস্যের সাথে রাত্রিই আমাদের আলাপ করিয়ে দেয়
এছাড়াও, আমাদের স্নানঘরের দেখভাল করে।
১১
আমাদের নিষ্পাপ আর অতীতকে নগ্ন করে দেয় রাত্রি,
চশমা কাত করে তাকায় বর্তমানের দিকে, আর চিন্তায় রাখে ভবিষ্যতকে।
১২
অপার্থিব পৃথিবী দিয়ে একদিন আমি ঠিক ভর্তি করে নেব নিজেকে।
১৩
যেখানে চোখ মিটমিট করেনা আদবকায়দা না জানা স্বপ্নদের,
সেই অফুরন্ত রাত্রিই বাঁচিয়ে রাখে আমার ভালবাসা।