ক বি তা
কায়াবনে সন্ধ্যা লেগেছে। জটিলবাসার যাবতীয় হ্যাপা ছেড়ে পাখিটি তারার ঘরে ফিরে যেতে চায়। লন্ঠন জ্বেলে পাকুড়ের দপ্তরে যাতায়াত করে অতি ব্যস্ত জোনাকিবাবুরা। পাকা তালের ঘ্রাণে গর্ভবতী মেয়েটির মতো একা একা গান গায় শ্রীমতিবাতাস।
নদীর বিলাস থেকে ফিরে আসে আমার উপ-রাধিকারা। তাদের পাপড়ির মতো ভেজা স্তনে শিশিরের মতো জল। কাস্তের মতো নাভি নুয়ে আছে শস্যের দুধে। আমি তাদের ডেকে বলি, কোথায় যাও? আমার যে আজও যমুনা শেষ হল না; তরঙ্গরা টাটকা আছে; তাজা রেখেছি ডুবে মরার জল।
চোখের অতল হেনে উপ-রাধিকারা বলে, গোটা-বাঁশি তুলে দেবার কথা ছিল তোমার, আমাদের ঠোঁটে। ঘরে আধখানা বাঁশি নিরাপদ রেখে, আমাদের অর্ধেক দিলে! আটআনায় শখ মেটে না। নগদ এক টাকাই চাই। ভেল্কির যুগ মুছে গেছে, তাঁবু তুলে ফিরে যাও ঘরে
আমার আধভাঙা বাঁশি শাবল-গাঁথা সাপের মতো শরীরতলায় ছটরফটর করে
বকফুল ঝরে যায়। বুকের ভেতরে ঝিঁঝিঁ ডাকে। হাড়ের প্রদীপ জ্বলে; ভিজে যাওয়া স্বপ্নেরা ঝিম হয়ে নেশা করে নোনাধরা পূরবীর বাঁকে। গাজর মেঘের বুকে নৌকার ভাটিয়ালি পাখা। প্রেতিনী চাঁদের গায়ে চিনা ছবি এঁকে যায় শ্যামরায় গামারের শাখা।
নকুলদানাটি মুখে পিঁপড়েরা ফিরে যায় দেওয়ালের বালি-ঝরা দেশে। মাঠ পথ ধান চোখ পান-খাওয়া গাঢ় ঠোঁট খড়েঢাকা আলপথে মেশে। তার পাশে বসুদের ঘাটভাঙা পুকুরের পানা। সুপুরিগাছের ঝাঁক বাতাসের চুমা খেয়ে আহলাদে ঝাপটায় ডানা। হারুদের দালানের কান ঘেঁষে নিষিদ্ধ গলি।
বাঁশির ভাঁড়ার ঘরে কী কী ঘটেছিল আজ তোমার বরকে ডেকে বলি?