Hello Testing

4th Year | 2nd Issue

৩১শে বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 15th May, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

স্মরণ । নাসের হোসেন

ড.   চ ন্দ ন   বা ঙ্গা ল

রুট ওভার নাসের হোসেন

নদী তো ভাঙবেই। কেননা নদীর ধাতু প্রকৃতি জুড়ে আছে ভাঙন আর প্রবাহ, প্রবাহ আর ভাঙন। আমরা কেবলই পাড় ভাঙার হিসেব নিই, গল্প বলি, মন খারাপ করি, নিজেদের ভেতরে ঠেলে গুঁজে পুরে দিই বিচ্ছিন্নতা হাহাকার। ভবিতব্য মেনে নিয়ে বিচ্ছিন্নতার সঙ্গে কুটুম্বিতা করি। উড়িয়ায়, নাকি বাংলায়, নাকি অহমিয়ায় চাটিলপাদ জন্মেছিলেন। তিনি ভাঙা পাড়ের গোলাপ-পার্কে বসে বাদামের খোসা ছাড়ানোর কোনো গল্প না, তৈরি করেছিলেন, ভাঙা দু-দুটো পাড়ের মধ্যে সাঁকো। সেতুবন্ধন। যাতায়াত। ভাঙন-ভাস্কর্য।

কবি নাসের হোসেন এই চাটিলের যোগ্য উত্তরসূরি। তিনি, সেতুবন্ধন, যাতায়াত, ভাঙন ভাস্কর্যের কবি। তাঁর কাব্যভুবনে কোনো পাড় ভাঙার গল্প নেই। জীবজগতের যা-কিছু বৈপরীত্য সেসবকে একসূত্রে গেঁথে বেঁধে জীবনের প্রবহমানতার সঙ্গে মিশিয়ে নাসের হোসেন বাংলা কবিতায় নির্মাণ করেছেন স্বতন্ত্র, আশ্চর্য এক কবিতা জগত। সহজ সত্য সুন্দরের মত বিরাজিত এই কবির মাথার উপরে বিস্তৃত এক ব্রহ্মাণ্ড, চারপাশে দিগন্তরেখা ছুঁয়ে গভীর শূন্যতা। অথচ তিনি কখনোই ব্রহ্মাণ্ড ও শূন্যতা নিয়ে ‘অপার হয়ে বসে’ থাকেননি। গত প্রায় পঞ্চাশ বছরের কবিতা যাপনে তিনি তৈরি করেছেন এক অলীক সাঁকো এক অলীক যাতায়াত। এই যাতায়াতে যেমন আছে-‘ডানা’, ‘জামার ভুবন’, ‘আলপিননামা’, ‘জবরদখল’, ‘ছায়াপুরাণ’, ‘কপিলা ও পিতৃতন্ত্র’ তেমনিই রয়েছে ‘অপারেশান থিয়েটার’, ‘কৃষ্ণগহ্বর’, ‘কোমা’, ‘গ্যাব্রিয়েল বলো’।এসবকে কেন্দ্র করে নাসেরের কবিতায় ধুয়ার মতো বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে মানুষ এবং মাটির গান। সমর সেন কিংবা বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এঁদের মতোই নাসেরের কবিতায় উপজীব্য মানুষ এবং মাটি । কিন্তু তাঁর কবিতায় মানুষ এবং মাটি যতোটা অনুভবের, ঠিক ততটা যেন দৃষ্টিগ্রাহ্য নয়। আশ্চর্যের বিষয় এগুলো নিয়ে তাঁর কোনো শপথ নেই। মানুষের জন্য সকলের ‘তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা/ পরের তরে’ এই ধরনের কোনো আপ্তবাক্য তাহার কবিতায় ধ্বনিত হয় নি। মন্ত্রের মতো নাসের উচ্চারণ করে গেছেন, আনন্দের- বেদনার, সুখের-দুঃখের, জীবন-মৃত্যুর, নিঃশ্বাসের-প্রশ্বাসের, আলোর-আধারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষকে।

এই কবির কাব্যভুবন জুড়ে যে মাটির কথা ধ্বনিত হয়েছে, সে মাটি শুধু অস্তিত্ব নয়-ক্ষুধা ও সৌন্দর্যের আধারও।

আটের দশকের অগ্রগণ্য আলোচ্য কবির বিশিষ্টতা শুধু এখানেই নয়। কবিতার আরও বেশকিছু ক্ষেত্রে তিনি যথেষ্ট স্বতন্ত্রতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রথমেই আসি পঙক্তি বিন্যাসের কথায়। বিবৃতিমূলক, টানা গদ্য ফর্মে লেখা হলেও বাংলা কবিতার প্রচলিত ও জনপ্রিয় পংক্তি বিন্যাস রীতি থেকে নাসের সরে গেছেন। কবিতার ভাব শুধু নয়, তাঁর কবিতার শব্দও প্রচলিত নিয়মে  যে পঙক্তিতে থাকবার কথা, তা না থেকে পরবর্তী পঙক্তিতে এসে শেষ হয়ছে নতুবা নতুন পঙক্তি সঙ্গে মিশে গেছে। পাঠক লক্ষ্য করুন-

‘যখন সেই বাতাস আমাকে মৃদুস্বরে বলল যে বেশি
ভালোবাসা ভালো নয়, আমি উত্তরে জানালাম যে কেন
নয়, ভালোবাসা বেশি বেশি বেশি, অনেক বেশি হলেও
ভালো, আমার ভালোবাসায় কোন ধ্বংস কার্য হয় না
সে বললো, হয়, বেশি আদরে স্বভাব নষ্ট হওয়ার

মতো, মাথায় চড়ে বসার মতো, যে যাই বলুক না কেন
আমি আমার সিদ্ধান্তে অবিচল: ভালোবাসা বেশি হোক
বেশি বেশি করে হোক, আমার বিশ্বাস তাদের স্বভাব
উন্নত হয়, এবং মাথায় নয়, মানুষ মানুষের পাশেই থাকে
যে মন পাহারা, যেরকম একে অপরকে রক্ষা করে, অবিকল’
                                                            (পাহারা, যেরকম )

আজকের বেশিরভাগ কবিদের কবিতা পোয়েটিক হ্যাং-ওভার রোগাক্রান্ত। খুবই সাধারণভাবে কিছু কথা বলে গেলেন, কবিতার শেষে দেখা যায় এমন কিছু বললেন বা লিখলেন যাতে করে পাঠককে চমকে যেতে হয়‌। নাসিরের কবিতা এ ধরনের স্টান্টবাজি থেকে মুক্ত। তিনি যা দেখেছেন, তাঁর চোখের পাতা ঘেঁষে যা কিছু ঘটেছে সেগুলোকেই তিনি এক মরমিয়া সাধকের মত লিরিক্যাল রূপ দিয়েছেন।

আলোচ্য কবির কবিতার নামকরণের প্রকৃতিও স্বতন্ত্র রকমের। সাধারণভাবে নাসেরের কবিতার শিরোনাম হয় কোনো শব্দবন্ধ। আবার অনেক সময়  দুটি শব্দকে কমা চিহ্ন দিয়ে পৃথক করে রাখা হয়, কখনো আবার দুটি পৃথক শব্দকে একই সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় । যেমন-‘চলো, তাড়াতাড়ি’ , ‘নবীন, ভালোবাসা’, ‘সমস্যা, চিরদিনের’, ‘থাকে, তবে’, ‘যুদ্ধ, সারাদিন’, ‘উন্মত্ত, এরকম’, ‘ওঠো, দ্যাখো’, ‘কাছেই, নিসর্গের’, ‘আছে, এত’, ‘মুহুর্তে, সুন্দর’, ‘শরীরে, অসংখ্য’, ‘ভিতর, ক্রমশ’, ‘যাচ্ছে, মাটিতে’  কিম্বা ‘খাওয়াদাওয়া’, ‘চিরনতুন সুন্দর’, ‘শিল্পীদের বাড়ি’, ‘জবরদখল’, ‘কাঁধে পাখি’, ‘বন্দী করো’, ‘পাথরের চোখ’ ইত্যাদি। নাসেরের কবিতাপাঠের অন্যতম মজা এখানেই, দুটি শব্দবন্ধের যেকোনো একটি শব্দকে শিরোনাম হিসেবে ধরে নিয়ে, একই কবিতাকে পৃথক-পৃথকভাবে পাঠ করা যেতে পারে। এর ফলে পাঠক দু’ধরনের পাঠ আস্বাদন করতে পারেন।
যেমন- যে কবিতার নাম ‘নবীন, ভালোবাসা’

কত কিছু ভেঙে যাওয়ার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে সংগীত পিরিচ
পিরিত ভেঙে যাওয়ার মতোই মনে হয়, কৃষ্ণ রাধার পিরিত কি ভেঙে যায় নি

 অচিরেই, অথবা কিছুই ভাঙে না সবই থেকে যায় অক্ষত অম্লান
নবীন, ভালোবাসা কাকে বলে এই প্রশ্নের সমাধান অতএব চাওয়ারও
কোনো মানে হয় না কেননা হিমেল গাছের থেকে যে পাতা ঝড়ে পড়ে

প্রেমিকপ্রেমিকার শরীরে, তাতে তাদের মৃতদেহের আচ্ছাদন খুব ভালো হয়

কিন্তু বেঁচে থাকাকে কোনোভাবে বাঁচানো যায় না, বেঁচে থাকা আরো কিছু

শুশ্রূষা প্রার্থনা করে, বেঁচে থাকার অনুযোগ নানাপ্রকার

 নানান আকারে ইঙ্গিতে সে বলে, বাঁচাও বাঁচাও জীবনের স্পন্দন যেন কোনদিনও

না বন্ধ হয়, বেঁচে থাক সন্তান-সন্ততি, তাদের শিল্পবোধ ও প্রেরণা অবিচ্ছেদ্য

নাসেরের কবিতায় যতি চিহ্ন হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে কমা চিহ্নটি।অবশ্য কখনো-সখনো সমাসবদ্ধ শব্দের ক্ষেত্রে হাইফেন চিহ্ন ব্যবহার করেছেন। কমা মানে অল্প একটু থেমে এগিয়ে যাওয়া। ঠিক যেমন আমাদের জীবন।সময়ের সাথে সাথে অনেক ঘাত প্রতিঘাত আসে।তাতে জীবনের গতি চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যায় না। একটু থেমে জীবন আবার এগিয়ে চলে। নাসের তাঁর কবিতায় জীবনের গতিময়তাকে সঞ্চারিত করেছেন কমা চিহ্ন ব্যবহার করে। এমনকি তাঁর কবিতার শেষও উল্লেখযোগ্যভাবে পূর্ণচ্ছেদ চিহ্ন বর্জিত। বেশিরভাগ কবিতা শেষ হয়েছে কমা চিহ্নের পর একটি মাত্র শব্দ, অথবা একটিমাত্র বাক্য দিয়ে-

কতটা মাত্রা ছেড়ে দিলে মানুষের কাছাকাছি যাওয়া যায়, ভেবে

দেখেছো, কতটা মাটি মুঠোতে নিয়ে যেতে হয় মাটির প্রেম
পেতে হলে, এইসবই জানা কথা, অজানা নয় কিছু তবুও

অন্বেষণ জারি থাকে, কতকগুলো নির্বাক দৃশ্য থেকে অন্য

কিছু নির্বাক দৃশ্য গঠিত হয় মানুষের মুখ ভেসে ওঠে তার

মধ্যে হাঁকে এ তুমুল উদ্ভাস, হাঁকে বিস্তৃত প্রতিভাস, ভালোবাসার

জন্য যাবতীয় আন্তরিকতা বকুলফুলের মতো ছড়িয়ে থাকে

পথে পথে, পরক্ষণেই ভেসে ওঠে একটি কুকুরের মুখ, হাঁকে,

ভেসে ওঠে বিড়ালের মুখ, হাঁকে, ভেসে ওঠে ঘোড়ার মুখ,

হাঁকে, ভেসে ওঠে গাছের সবুজ পাতারা ক্লোজআপে, হাঁকে

দুরন্ত ধুলোর মতো চারিদিকে বয়ে যেতে থাকে পাগল হাওয়া,

এক সময় এসবও মেটে, হয়তো এরই নাম মিটে যাওয়া,

বৃষ্টি নেমে আসে, ভেজা গন্ধে স্তিমিত হয় চারপাশ, যাবতীয় রেনু

দিয়ে পড়তে থাকে

        (আসে, ভেজা)

সাধারণভাবে এক প্রসঙ্গ থেকে অন্য প্রসঙ্গে যাওয়ার জন্য কবিতায় স্পেস চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু লক্ষ্য করুন, নাসের হোসেন তাঁর কবিতায় স্পেস চিহ্ন ব্যবহার করেছেন প্রথম স্তবক এর সঙ্গে দ্বিতীয় স্তবকের সংযোগ তৈরি করে।লক্ষ্য করুন দেখতে পাবেন একটি স্তবকের বাক্য অনেক সময় যেন শেষ হচ্ছে পরবর্তী স্তবকের সূচনাতেই, মাঝখানে স্পেস চিহ্ন। এই স্টাইলে নাসেরের কবিতার উল্লেখযোগ্য দিক।

আলোচ্য এই কবির বেশ কিছু কবিতায় সিনেমেটিক-দৃশ্য চোখে পড়ার মতো-

ছবি ছিড়ে বাইসন ছুটে যাচ্ছে, ঊর্ধ্বশ্বাস

বাঁকানো শিং, চকচকে শরীর, উত্তাল পেশীর তীব্র

বাইসন ছুটে যাচ্ছে

বড়ো দীর্ঘ এরিনা, উঁচুতে সার গ্যালারি

ও লোকজন, কিছু মহামান্য ব্যক্তিও

আমার হাতে লাল কাপড়

হাততালি উল্লাস অথবা চকিত
আমি ছুটে যাচ্ছি, ছুটে, এগিয়ে, কোনো না কোনো ভাবে

মেলে ধরেছি লাল জামা

ক্রুদ্ধ চোখ, বাঁকানো শিং, মুখ দিয়ে ফেনা বেরোচ্ছে

যে করেই হোক ওর পিঠে চড়তে হবে

বাইসনের পিঠে যে চড়েনি সে বুঝবে না

ব্যাপারটা কতটা দালির কতটা পিকাসোর কতটা

আমার

এখন আমার বুক থেকে পিঠ থেকে কাঁধ থেকে

ছুটে বেরোচ্ছে অজস্র বাইসন

                (বাইসন)

এই কবি কবিতায় ইংরেজি শব্দ খুব বেশি ব্যবহার করেননি। কিন্তু বাংলা বেশকিছু শব্দ ও বানান তিনি এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন তিনি ইংরেজি শব্দকে প্রবেশাধিকার দিয়েছেন। এর ফলে তাঁর কবিতা অন্য মাত্রা পেয়েছে। বিশেষত কবি যখন উচ্চারণ অনুযায়ী বাংলা বানান লেখার পক্ষপাতি।আমরা বেশিরভাগক্ষেত্রেই দেখেছি তিনি ‘দ্যাখো’, ‘ক্যানো’ ইত্যাদি উচ্চারণ অনুযায়ী বাংলা বানান ব্যবহার করেছেন। যেমন ‘কোন’ এখানে পাঠক শব্দটিকে কোনো অথবা ইংরেজি Angel বসিয়েও পড়তে পারেন।আবার যেখানে তিনি লিখছেন সুন্দর, সেখানে Beauty পড়লে সুন্দরের পরিবর্তে বিউটি ব্যক্তিনাম এসে যায়। এইভাবে নাসেরের কবিতার পরবর্তী পাঠে কবিতার সমগ্র আবহ যেন বদলে যায়। কবিতায় ধরা পরে বহুমাত্রিকতা। কবি পাঠকের জন্য খুলে দেন তাঁর কবিতা-দুয়ার।

নাগার্জুনের শূন্যতাবাদ কিংবা চন্দ্র কীর্তি আচার্যের মধ্যমকবৃত্তির ১৮০ ডিগ্রি বিপরীতে দাঁড়িয়ে কবিতা রচনা করেছেন এই কবি। শূন্য শুধু শূন্য নয়, এর ভেতরেই রয়েছে পূর্ণতার ইঙ্গিত। এই চিন্তা চেতনার প্রতিফলন তার কাব্য ভুবনের অসংখ্য কবিতাতেই পাওয়া যাবে।

আটের দশকে এরকমই এক শক্তিশালী ব্যতিক্রমী স্বতন্ত্র কবি চলে গেলেন ৯ই ডিসেম্বর কোঠারি হাসপাতালে।
১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২ জানুয়ারি কবি নাসির হোসেন জন্মগ্রহণ করেন কলকাতা শহরে। তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ১৯৭০-এ। অকালপ্রয়াত এই কবির মোট কাব্যগ্রন্থ প্রায় ২১টি। কবিতা পাক্ষিক পত্রিকায় তিনি ধারাবাহিকভাবে কবিতা সংবাদ লিখতেন অর্জুন মিশ্র ছদ্মনামে।কৃষ্ণনাথ কলেজে পড়ার সময় ‘দ্য লাস্ট পেজ’ নামে একটি পত্রিকাও তিনি সম্পাদনা করতেন। পরবর্তীকালে সম্পাদনা করেছেন রৌরব। দীর্ঘ চার বছর ধরে নাসের কবিতা পাক্ষিক পত্রিকার সহ সম্পাদক ছিলেন।

চিত্রশিল্পী হিসেবে ও নাসের হোসেন ছিলেন অনন্য। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে কৃষ্ণনাথ কলেজে তার ছবি প্রথম  প্রদর্শিত হয়। ১৯৮৪-তে বিড়লা একাডেমি অফ্ ফাইন আর্টস অ্যাণ্ড কালচার-এ তার একক চিত্র প্রদর্শনী ‘দেবী ও পোড়া শহর’ প্রদর্শিত হয়।এই প্রদর্শনীর মুগ্ধ দর্শক ছিলেন চিত্রকলার কিংবদন্তি মকবুল ফিদা হুসেন।

অনেকেই কবি নাসের হোসেনকে শুধুমাত্র পোস্টমডার্ন কবি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, কিংবা করতে চাইছেন। আমরা এর ঘোর বিরোধী। যারা এই ধরনের ঔপনিবেশিক তকমায় বিশ্বাস করেন, তাঁরা কবিকে সমগ্রতার পরিবর্তে খন্ডিত রূপে দেখতে চান। সুকান্ত কি সত্যিই কিশোর কবি? নজরুল কি তাঁর সমস্ত কাব্য জগৎ জুড়ে শুধু বিদ্রোহ ঘোষণা করে গেছেন? কাস্তে কবির বাইরে বাংলার কবিতা পাঠক কি দীনেশ দাসের আর কোন অন্য পরিচয় খুঁজে পাননি? সুভাষ মুখোপাধ্যায় কি শুধুই পদাতিক কবি? প্রিয় পাঠক মনে হয় ভাববার সময় এসে গেছে। প্রায় পঞ্চাশ বছরের কবিতা যাপনকালে নাসের হোসেনের যতটা চর্চা হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি। এর কারণ কী? প্রিয় পাঠক, ভাববেন না আপনি? 

আরও পড়ুন...