গু চ্ছ ক বি তা
লাফিয়ে নেমেছি করতলে!
রেখা থেকে আরেক রেখায়
যেতে-যেতে খড় গোঁজা শীতল শালিখ
রাধামাধবের অশ্রু, বাতাসা-নির্ভর দুটি প্রাণ
যেতে-যেতে ধুলোর স্বভাব
মাটিতে নামানো শিরস্ত্রাণ
ছদ্মবেশী প্রতারক টানা চুপিসারে
রয়েছে সে,
দেখি বারেবারে—
সে কখন খুন করবে অথবা সে আবার উধাও
ধরা সে দেবে না জানি, তাও
ধাওয়া করব পিছু-পিছু—
বুনো-আল, করতল থেকে করতলে
রেখাবাষ্প বিপর্যয় অহরহ উপেক্ষা-অঞ্চলে!
পথে যে গোচর নয়,
সেই ক্রিয়া অবসাদে গত
অকস্মাৎ জেগে ওঠা চক্রাকারে, শীর্ণ তৃণদলে
মাংসাশী প্রাণীর ঠোঁটে স্মৃতিহীন পবনে উদ্যত
কী হঠাৎ বাড়িঘর, বাক্যহারা কী হঠাৎ শাঁস
তরলের সেতু ধরে হেঁটে-হেঁটে পিপাসা উদ্ধার
পথে-পথে সাধনামঙ্গল
আর যত অপতিত আলোকণা, দু’জনের জানালা প্রয়াস!
বাসনার বাতি জ্বলে। নিভন্ত সংসারে
ত্রস্ত ছাই জ্বলে ওঠে মধুপে-মধুপে
এত যে হরিণী হও শিকারিনী হও একা-একা
না-বলে যে চলে গেছে
আজও সেই অসফল রূপে প্রাণ পাও
নিপীত কুশিতে পড়ে থাকো একাগ্র অঙ্গুরি
যদি কেউ ছুঁয়ে দেখে গাঢ় মেঘ, বৃন্তচ্যুত কুঁড়ি!
অচল আধুলি নিয়ে থাকা।
বাণিজ্যে দুরাশা পাই— ঘুরে মরি দরজায়-দরজায়
সারাদিন হতাশা অলংকার।
সুধাবৃন্দ সারাদিন কেবল বিহ্বল করে রাখে
সূর্যাবস্থা পার হয় একা যে ফকির—
চোখে-মুখে ঘুমন্ত সংসার
তাকে কেন স্থির দাও, বলো হে বিদ্রুপ
তাকে কেন দাও অবশেষ
ঝনাৎ ঝনাৎ করে সমস্ত শরীর—
মিলনের আগে অচল আধুলিগুলি
ঝরে যায় পতঙ্গ-গহ্বরে!
অনঘ সে হাসি আবিষ্কার!
তোলপাড়, তোলপাড় চঞ্চু, বক্র সিঁড়ি, বোঁটা
অর্ধেক গোপন ইচ্ছে— আজন্ম লালিত
বর্ষা দিয়ে হেঁটে গেলে তুমি
নীচু মুখ, চকিত ও স্মিত
মৃতকল্পে ঝড় ওঠে খাঁ-খাঁ ঝড় শূন্যতা শোভিত
তাতে যে হরণ হবে ঝরোঝরো ধাবিত গ্রহণে
সেটুকু হরণ আজ দূরে বনে-বনে
অধিক উজ্জ্বল হয় নির্বিকল্প পুড়ে যেতে-যেতে
ছায়াপত্রে লেখা জল, স্বপ্নাদ্য সংকেতে!
সংকেত কুড়িয়ে পাই আশ্চর্য অধরে তার, নাব্য বসতিতে।
দুর্গম সম্বন্ধ যত ঠোঙাভর্তি আলোর আঙুল
কুড়িয়ে-কুড়িয়ে রাখি, যদি তুমি ডাক দাও ফের
যদি তুমি ভবিতব্য পার হয়ে চলে আসো কাছে
হাতে বাটি পায়েসান্ন গোবিন্দভোগের
কিঞ্চিৎ শুনশান দেহ। ভাঙা চুড়ি। ভাঙা-ভাঙা ভয়।
ধুকপুক ধুকপুক করে অলিন্দ-নিলয়
যদি কেউ দেখে ফেলে, গিঁট বাঁধে কেউ যদি অহেতুক ত্রাসে
নিজেকে টাঙিয়ে রাখি আহত পলাশে
ললাটে অতল শোক, সেই মর্মে রয়ে যেতে চায়—
যে তোমায় খুব ভালবাসে!
শ্বাসের দোকানে উঁকি, গ্রিল ধরে ঝোলা!
বেঁকেছে যে রঙিন ক্রন্দন দু’হাতের ভূমিকায়
তাকে কেন আরও কাছে টানো!
ছল-চাতুরিতে কেন বনের কাজল ধরে ডাক
মৃৎপাত্রে প্রসিদ্ধ মূর্তি ধীরে-ধীরে উড়ন্ত কাঁসর
আকাশে আরতি হবে—
মনস্তাপে, কুমারসম্ভবে
স্নানাতুরা রমনীর উদার বন্ধনী মনে হবে শ্বাসের মলাট
পাতা উল্টে ধরা পড়বে ছোট কমা, সমাহিত খাট
ব্যাকুল শরমধ্বনি শিথিল লবণ
ঘুরে মরবে পবনপল্লবে
দাঁড়িপাল্লা কেঁপে উঠবে অশনি-সফল কোনও নভে!
শিরোনামে শেষ হলে কাগজের কৃশ কৃতাঞ্জলি
দুপাশে বধির মাত্রা শিথিল উৎসুক
কেউ নেই কোনওখানে,
অস্বীকার পার হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধু সে-ই
তোমার বিনিদ্র মুখ
গাছের গার্হস্থ্য, কিছু ঝর্ণা-সঞ্চালন
ঊর্ধ্বমুখে পিছুডাক, অতর্কিতে উড়েছে জোনাকি
ঝলমল ঝলমল করছে ক্ষুধা—
সেই নিয়ে অবিচল বেঁচেবর্তে থাকি!
সংসার হয়নি। চিন্তাহরণের কালে
স্বভাব নীরব হয়ে কপালে উঠেছে।
সামর্থ্যে জোটেনি সে তো, অসামর্থ্যে তার আগমন
পুরনো জোনাকি খুলে দেখি দিনক্ষণ
কতদিন আসা-যাওয়া, খসে-খসে পড়া বারেবারে
পুকুরে অসুখ রাখি, রাখি প্রান্ত, মেঘের গর্জন
সলিলে পায়ের ছাপ
দিন গোনা পুকুরের চূড়ায়-চূড়ায়
নীবিবন্ধে সন্ধ্যাভাষা কোনওদিন ফুরাবে না তবু
খালি বলে,
শেষ হয়ে গেছি আমি একেবারে শেষ
অসম্ভব প্রেমের বয়েস!
অশান্ত তোমার মন—
শরীরে পদ্মের ডাক, সেই পদ্মে ঠাঁই
বাহিরে দর্পণ জ্বলে শোণিতের অববাহিকায়
ঝাঁক-ঝাঁক পাখির বসত
অলস-লতার জল!
খুঁটিনাটি আগমন, শাখায়-শাখায় দোলে ভাঙা মনোরথ
ঠোঁটে ওষ্ঠ, ওষ্ঠে দীঘি ঘনিয়েছে দায়ে-অনাদায়ে
শরীরে পদ্মের ডাক—
শ্রীচুম্বন রেখে যাই পায়ে!