বাং লা দে শে র ক বি তা
পৃথিবীতে তখন ‘মানুষ’কাল। আমরা পরেছিলাম
উল্লুকের পোশাক। মাথার মধ্যে ভূতের বাড়ি।
সদর দরোজায় টাঙানো থাকতো ধর্ম। আমাদের
জানালার পাশ দিয়ে বয়ে যেতো রাজনীতি।
পর্নোগ্রাফি।
অর্থনীতি বলতে অস্ত্র ব্যবসা। শরণার্থী বাণিজ্য।
সেই ক্ষুধার রাজ্যে তিনবেলা পেটভরে খাওয়ানো
হতো জলবায়ু পরিবর্তন। টেকসই উন্নয়ন।
পৃথিবীতে তখন মানুষকাল। আমাদের তবু
বেঁচে থাকতে হয়েছিলো। ধৈর্য ধরতে হয়েছিলো।
বৃক্ষ হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিলো
পরবর্তী বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত।
১
গতকাল রাতে আমার সাথে
এক পর্তুগিজ বাদ্যযন্ত্র বিশারদের দ্যাখা
হয়েছিল— স্বপ্নে।
মাতাল ছিলো লোকটা। মাথায় ছিলো সামুদ্রিক টুপি।
চুল বেয়ে অন্ধকার
আর হতাশা পাশাপাশি হাঁটছিলো। লোকটা করুণ।
আমাকে বললো, সিগারেট খাবেন?
আমি তাকে একটা ব্যাঙ অফার করলাম
সাথে এক বোতল সাঁওতালি মদ।
সে তার যাদুর মতো লম্বা পোশাকটা সরিয়ে
দ্যাখালো— একটা অন্ধকার কলোনি।
নির্জন। চলুন বসি।
২
আড়াইশো বছর আগে এখানে একটা বিদ্রোহ
হয়েছিলো। সাঁওতাল বিদ্রোহ। ১৮৫৫।
তারও আটশো বছর আগে হয়েছিলো
কৈবর্ত্য বিদ্রোহ।
আমাদের কিছু করার ছিলো না।
জন্মগতভাবেই মানুষকে মরতে হয়। মারতে হয়।
‘উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা যা কিছু পেয়েছিলাম
তার মধ্যে
সবচেয়ে সুন্দর হচ্ছে— মৃত্যু।
এবং সংগীত।‘
আপনি গান পারেন?
৩
একটা সবুজ গানের সুর প্রায় কেটে যেতে যেতে
দু’জনই দু’জনকে বললাম,
মানুষের বুদ্ধি আছে বলেই বিভাজন এদের
সহজাত সৌহার্দ্য।
আচ্ছা, মানুষেরা ক্যানো পতাকা এতো পছন্দ করে?
থামুন আপনি!
সহজাত বুদ্ধি দিয়ে পতাকা প্রতিষ্ঠা যেখানে
এতো রোমাঞ্চকর! এতো মুখরোচক!
সেখানে বুদ্ধির উৎকর্ষের কর্ষণে পতাকাহীনতায়
মানুষেরা কী পাবে বলুন?
৪
সকাল হয়ে আসছে। চলুন, অন্য জন্মে যাই।
মানুষের আসলে পাওয়ার কিছু নাই।
কোন জন্মে যাবেন? কোন প্রাণীকুলে?
মগজ-পাকস্থলি-যৌনাঙ্গ এদের সাথে আপনার
পরিচিত হতেই হবে।
আপনাকে বাধ্য করাবে এরা জৈবিক যাপনে।
মানুষ যে বলে, তাদের পাওয়ার আছে
অনেক কিছু। যেমন— এক হাজার
আরব্য রজনী। স্বর্গীয় সুবিধা।
আর রকমারি নরক।
আপনি চান না?
না।
না মানে?
৫
একটি মহাজাগতিক সাফারি পার্কে
বসে বসে স্বাধীনতা উপভোগ—
আমার পছন্দ নয়।
আমি আমার পরাধীনতার উপাসনা করি।