অ নু বা দ
প্রথম দরজাটা খুলতেই আমার সামনে
ডানা মেলে দিলো রোদ্দুরে ঢাকা একটি ঘর।
হঠাৎ বাইরে বিকট চিৎকারে একটা গাড়ি ছুটে গেলো,
আর আমি মুহূর্তেই কেঁপে উঠলাম।
দ্বিতীয় দরজা খুলে দেখি
বন্ধুরা! অক্লেশে গলায় ঢালছে সামান্য আঁধার,
এবং ক্রমশই ওদের শরীরগুলো ফুটে উঠতে লাগলো ওই অন্ধকারে।
এবার পালা তৃতীয়টির। দরজার পাল্লা সরাতেই বেরিয়ে এলো হোটেলের একটি ছোট্ট ঘর ও আজানুবিস্তৃত সুঁড়িপথ।
শুধু পিচের ওপরে ওই চকচকে ল্যাম্পপোস্টটি একা একাই জেল্লা দিচ্ছে আর ওর শরীরের গাদ থেকে নেমে আসছে এক অনন্ত সুন্দর।
ক.
ক্যালেন্ডারের পাতা জুড়ে আছে এক অজানা ভবিষ্যৎ,
অসীমে ধ্বনিত তারের গুচ্ছে গুঞ্জিত লোকগান।
সীসা-নির্মিত সাগরে চলেছে কেবলই তুষারপাত,
বন্দর জুড়ে ছায়ারা শুধুই মুখোমুখি যুযুধান।
খ.
মধ্যজীবনে মৃত্যু মাপবে তোমায়,
তবুও জীবন বহুদূর ভেসে যায়।
গাঢ় কোনো এক অভিজ্ঞানের ঘোরে
পোশাকখানি নীরবেই বোনা হয়।
যথেষ্ট সতর্ক হয়ে আমি তোমাদের কথা লিখি।
কিন্তু যা কিছু আমি বলতে পারিনা
তা গরম-বাতাস ভরা বেলুনের মতোই
আমার ভিতরে ফুলে ওঠে,
আর অবশেষে
ভেসে যায়
রাত্রির নির্মল আকাশে।
ক.
আমরা প্রস্তুত হয়ে আমাদের ঘর- গেরস্থালি তাকে দেখিয়েছি।
আর তাতেই আগন্তুকের মনে হলো,
এ জীবনে আমরা বেশ সুখেই আছি।
তাহলে বোধহয় জগদ্দল বস্তিটা আমাদের ভেতরেই রয়ে গেছে।
খ.
চার্চের ভিতরের দাম্ভিক খিলান আর ধনুকপারা ছাদের পলেস্তারা, ঠিক যেন ডানাভাঙা প্রতিশ্রুতির গায়ে
লেগে থাকা
একটি ছাঁচ।
গ.
চার্চের মধ্যে একটি ভিক্ষাপাত্র
ক্রমশই ওজন হারিয়ে ঊর্দ্ধগতি পেয়ে সুদৃশ্য আসনের সঙ্গে শূন্যে ঝুলে আছে,
দেখো…
ঘ.
কিন্তু, গির্জার ঘন্টাগুলি পাতালে আশ্রিত,
নর্দমার নালিতে এখন ঝুলে আছে তারা।
আর আমরা পা বাড়ালেই, শুনছি ওদের
নাচের ঝংকার।
ঙ.
স্বপ্নচর নিকোডিমাস তার ঠিকানার সন্ধানে এখন রাস্তা হাতড়ায়।
কে তবে ঠিকানার খোঁজ পেয়েছে এ জগতে আর? জানা নেই।
আমরা সবাই কিন্তু সেই নিরুদ্দেশেরই পথযাত্রী।