ক বি তা
খবরে প্রকাশ, ইংলণ্ডের অসংখ্য বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা চরম নিঃসঙ্গতায় আক্রান্ত। দীর্ঘদিনের দুঃসহ একাকিত্বের ভারে তাঁরা অনেকেই গভীর অবসাদের শিকার। তাঁদের নিঃসঙ্গতার কষ্ট লাঘব করার জন্য সম্প্রতি সেই দেশে একটি নতুন সরকারি মন্ত্রকের সৃষ্টি করা হয়েছে , যার নামটি খুব কাব্যিক, ‘মিনিস্ট্রি অব লোনলিনেস’। এই মন্ত্রকের কর্মসূচি বিশদে জানা যায়নি, তবু এটুকু আন্দাজ করা যায় যে, এই মন্ত্রক কিছু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করবে, যারা সপ্তাহে অন্তত একদিন ঘন্টাখানেকের জন্য এই সঙ্গীহীন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের কাছে যাবে, তাঁদের আন্তরিক সঙ্গ দেবে, তাঁদের পুত্র কন্যাদের মতো আচরণ করবে। তাঁদের জন্য টুকিটাকি উপহার নিয়ে যাবে , তাঁদের কথা শুনবে, তাঁদের স্মৃতি ও বেদনার শরিক হবে। পেশাদার কর্মী তারা, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ঠিক ভালোবাসবে না, কিন্তু ভালোবাসার অভিনয় করবে। বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও হয়তো ভাববেন যে, আসল ভালোবাসা নাই বা পেলাম, ভালোবাসার অভিনয়টুকু তো পেলাম! এই দুনিয়ায়, তার দামই বা কম কি?
যাই হোক, এই খবর দ্বিতীয় যে তথ্যটি জানাচ্ছে তা আরও মারাত্মক। জানাচ্ছে যে, পৃথিবীতে সবচেয়ে ভয়ংকর নিঃসঙ্গতার শিকার হলেন জাপানের বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাগণ। এতটাই ভয়ংকর সেই নিঃসঙ্গতা যে তার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অনেক জাপানি বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা শপিং মলে ঢুকে ছোটোখাটো কিছু জিনিস চুরি করেন, যাতে সেই চুরির দায়ে ধরা পড়ে জেলে যেতে পারেন, এবং কয়েক দিনের জন্য জেলের অন্যান্য কয়েদিদের লোভনীয় সঙ্গ পেতে পারেন! এজন্য তাঁরা নিঃসঙ্গতার শপিং মলের জিনিস চুরি করে, ভালোবাসার জেলখানায় যেতে চান।
এই পৃথিবীতে, নিঃসঙ্গতা মৃত্যুর সমান।
(সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ, ২১-০৬-২০১৮)