Hello Testing

4th Year | 2nd Issue

৩১শে বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 15th May, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

আ মা র  পু জো

বাঙালির তেরো পার্বণের সেরা পার্বণ দুর্গা পুজো। তো এই পুজো নিয়ে কী ভাবছেন তাঁরা? পুজো তাঁদের কাছে কীভাবে ধরা দেয় অথবা পুজোর ভেতর তাঁরা ধরা পড়েন কীভাবে... কলম ধরলেন

স ঙ্ঘ মি ত্রা   হা ল দা র

মনে পড়া পাখি

বর্ষা তার সজলটুকু মুছে নিলে মেঘজলরোদের হাসিতামাশায় সে একটু একটু দেখা দেয়। দেখা দেয় আর মিলিয়ে যায়। সে মানে শরৎ। আর শরৎ মানে গাঢ় আর ছটফটে নীলের ক্যানভাসে সফেদের কুণ্ডলী পাকানো থাবা। শরৎ মানে স্মৃতিতে পথে বিছানো টাটকা শিউলি। হঠাৎ হঠাৎ ট্রাম বাস মোড় নেওয়ার সময় কাশের দুলে ওঠা। কোথায় কী যেন একটা ঘটবে কী যেন একটা হবে তারই প্রস্তুতি। একটু বড় হয়ে ঈশ্বর অবিশ্বাসী হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্লেয়ার্স কর্নার, সৃষ্টি বা বড়িশা ক্লাবের মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমাদর্শনের দিন ফুরোয়। কিন্তু রাস্তায় হরেক আলোর রোশনাই আর মানুষের তামাম ভিড় তবু বড় ভালো লাগে। বন্ধুদের সঙ্গে হেঁটে হেঁটে ঘুরে আড্ডা দেওয়া আর হঠাৎ পেয়ে যাওয়া চারদিনের অফুরান স্বাধীনতা ঢাকের কাঠির দিম দিম কিংবা ফুলঝুরির চেয়েও দিশেহারা করে দিত ভিতর ঘর। নিজে কোনওদিনই সাজতে পছন্দ করি না, কিন্তু আলোর ঝরনাধারার পাশে নিজেকে প্রাণবন্ত করে সাজানো মানুষ দেখতে কী যে ভালো লাগত! কিংবা, পাশ দিয়ে চলে যাওয়া হাল্কা দাড়ির শার্ট বা পাঞ্জাবির আতরের হু হু কেমন যেন ক্ষণিকের জন্য দিশেহারা করে দিত। এসবের মধ্যেই বিসমিল্লা থেকে থেকে বড় করুণ সুরে বেজে উঠতেন। ভেতর ঘরে খানিক শূন্যতার মোচড় তখন। 

কিন্তু বিগত অনেকগুলো বছর রাস্তার ভিড় দূর থেকেই টের পাই। হেঁটে হেঁটে পায়ে ফোস্কা ফেলে দেওয়া বন্ধুরা এখন অনেক দূরে। কিংবা ভাইসি ভার্সা। আমার মনটাও অনেক পাল্টে পাল্টে গেছে। আগেকার জামা তার গায়ে আর আঁটে না। তবু আমার মতো ঈশ্বর অবিশ্বাসীর কাছে প্রকৃতির এই শরৎ প্রস্তুতি আপন খেয়ালে ভালোলাগাগুলো বুনে দেয়। কী যেন এক অপেক্ষায় অপেক্ষায় শরৎ আসে, শরৎ যায়। মন ভার হয়, মন হাল্কা হয়। আর এর মধ্যেই সেই পুরনো দিনের বিসমিল্লা আজও গেয়ে ওঠেন। অনেক উৎসব অনেক আলোর তলায় মরা নদীর মতো বয়ে যায় বিসমিল্লার সানাই। বিসমিল্লা আসলে সেই মনে পড়ার পাখি। যে থেকে থেকে মনে করিয়ে দেয়—অনেক উৎসব আর আলো, তবু কোথাও তার শেষ আছে। কিংবা, শেষ বাঁকে কোথাও ঘোরানো সিঁড়ির মতো, নিচে অন্ধকার জমা আছে। এত আলো, এত আনন্দ আয়োজন, তবু সে সকলের নয়। 

আরও পড়ুন...