Hello Testing

4th Year | 2nd Issue

৩১শে বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 15th May, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

আ মা র  পু জো

বাঙালির তেরো পার্বণের সেরা পার্বণ দুর্গা পুজো। তো এই পুজো নিয়ে কী ভাবছেন তাঁরা? পুজো তাঁদের কাছে কীভাবে ধরা দেয় অথবা পুজোর ভেতর তাঁরা ধরা পড়েন কীভাবে... কলম ধরলেন

শৈ বা ল   স র কা র

বেড়ালের বা ঈশ্বরের হাসি…

ঈশ্বর না থাকলেও তাঁর অট্টহাসি নাকি আছে। অথবা অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ডের সেই বেড়াল, যে গায়েব  হয়ে যাওয়ার পরেও তার হাসিটা রয়ে যেত কিছুক্ষণ । পুজো আমার কাছে তেমনই। পুজো নেই। কিন্তু পুজোর ছুটি আছে।  

কৈশোরে পুজো ছিল। ছিল দরজির দোকানে জামা প্যান্টের মাপ দিতে যাওয়া। রেডিমেড পোশাক তখন এতোটা সহজলভ্য হয়নি। পুজোর আগের দিন অব্দি দরজিকে তাগাদা দেওয়া। টেনশন। দু’একবার ডেডলাইন মিস হবার কথাও মনে পড়ে। সেই সময় কীরকম মনের ভাব হয়েছিল তা আর মনে নেই। আর ছিল ক্যাপ পিস্তল। দল বেঁধে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে বন্দুকবাজি। প্যান্ডেল পরিক্রমা বা ঠাকুর দেখতে যাওয়া যা সব এই সময়েই।  সেই সময়েই বোধ হয় দূরদর্শনে “ছুটি ছুটি” নামে একটা অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেখানেই শোনা, “যে ছেলেটা কাজ করে খায়/ রাস্তার চায়ের দোকানে/ তার ছুটি পালালো কোথায়?/তার ছুটি রাখা কোন খানে?” হয়তো পুজোর ছুটি নয়, গরমের ছুটির “ছুটি ছুটি”র গান এটা। মনে নেই আজ আর। এরপর থেকেই পুজো বা ছুটি আর এক রইল না।

এরপর এলো কলেজে পড়ার সময়। ক্যাপ পিস্তলের বদলে হাতে আসতে লাগলো পুজো সংখ্যা। আগেও ছিল, তবে এভাবে ছিল না। এই সময় আমার কাছে পুজোর ছুটি মানেই ছিল সুমনের নতুন  অ্যালবাম। আর পুজো সংখ্যা। সারা পুজো এসব নিয়েই কেটে যেত। আর ছিল আড্ডা। ঠাকুর দেখতে যাওয়ার উৎসাহ আমার এইসময় থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় কলেজের বামপন্থী  ছাত্র সংগঠন বই-এর স্টল দিত প্রতি বছর। সেখানে অন্যান্য বই-এর সঙ্গে কবিতার বইও পাওয়া যেত। শঙ্খ ঘোষের ‘নির্বাচিত প্রেমের কবিতা’ বা শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘পাতালে টেনেছে আজ’ বইগুলির কথা মনে পড়ছে। এখন আর সেরকম স্টল হয় কিনা জানি না। পুজোর অ্যালবামও বন্ধ হয়ে গেছে কত বছর। কলেজে পড়াকালীন আমরা বন্ধুরা মিলে “লালন” নামে একটা লিটল ম্যাগাজিন শুরু করি। যদিও তার কোনো পুজো সংখ্যা কোনোকালেই বের করিনি আমরা। তবে মনে আছে দু’একবার আমরা পুজোর সময় ম্যাগাজিন নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম বিক্রি করার জন্য। বেশ ভালো বিক্রিও হয়েছিল মনে আছে। 

এখন পুজোর আগের সময়টা বেশি ভালো লাগে। গ্রামের স্কুলে পড়ানোর সূত্রে সেখানকার বাচ্চাদের পুজো নিয়ে আগাম পরিকল্পনা দেখি। কার কেমন জামাকাপড় হলো সে সব দেখিয়ে যায়। কে কোথায় কোথায় ঠাকুর দেখতে যাবে সেই সব গল্প। একই রকম উৎসাহ ইদের সময়ও দেখা যায় ওখানে। এবারে স্কুল বন্ধ ৬ মাসের ওপর হয়ে গেল। ফলে সেই পরিবেশটাও গায়েব এবার। বেড়ালের বা ঈশ্বরের অস্তিত্বের মতো।  

এবারে পাহাড়ে বা বেড়াতে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখতে পাওয়া  যাচ্ছে না। ৬ মাসের ওপর হয়ে গেল বাড়িতে বসে। এবার সবই বন্ধ। এটাকে আর যাই হোক ছুটি বলতে পারছি না। ফলে পুজোর সঙ্গে সঙ্গে এবার পুজোর ছুটিও নেই। বেড়াল গায়েব হয়েছে অনেকদিন হল। এবার হাসিটাও গায়েব হবার পালা। বেড়ালের বা ঈশ্বরের…

আরও পড়ুন...