গু চ্ছ ক বি তা ১
একটা জ্বলন্ত স্টোভ গড়াতে গড়াতে রাস্তার
একপাশ থেকে অন্যপাশে গেল
আমি এক স্বপ্নের ভিতর দিয়ে আরেক স্বপ্নে ঢুকলাম
স্বপ্ন-দিয়ে-তৈরি অতিকায় বন্ধ জানলা, স্বপ্নে-বানানো প্রকাণ্ড
দরজার মুখ-বন্ধ
কোথাও নির্গমপথ নেই।…
থেকে থেকেই ভেসে আসে স্টোভের পাক-খাওয়া, ঘষটানি
মানুষের স্বপ্নে রঙ চেনা যায় কি?
স্বপ্ন আর বিছানার মধ্যে যতটা ফারাক—
তুমি এখন ঠিক ততটাই দূরত্বে রয়েছ
রিয়্যালিটির ভাঁজে ভাঁজে পাল্টে যাচ্ছে শাড়ির পাড়… লিপস্টিকের শেড…
শোয়ার জাস্ট আগেই মেখে নিলে ক্রিমের শিশির…
তুমি এইবার বেডকভার… তারপর ঘুম…
অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে স্বপ্নের খোলসে-ঢুকে চুরি করছি তোমায়…
সারাজীবন এই ঘুম আর ভাঙবে না, জানো,
শুধু একটা স্বপ্নাবিষ্ট স্টোভ রাস্তার দু’পাশে পারাপার করতে থাকবে,
করতেই…
তোমার শহরে কীরকম ঠাণ্ডা পড়েছে— সেসমস্ত
জানা-ই হল না
কোনও প্রশ্নেরই সদুত্তর পাই না আজকাল
দুই মুঠোয় দু’টো মাইনাস-চিহ্ন নিয়ে
হাঁটতে বেরিয়েছি বিকেলে
সবকটা পার্ক, সমস্ত বাইক, প্রত্যেক যুগলের দিকে
তাক ক’রে ছুঁড়ে মারব
বিস্ফোরণ নয়, বিস্মরণ…
ধোঁয়ার জমাট পিণ্ড ধীরে ধীরে পৌঁছে যাক
অত্যাগসহনের ঐ দেশে…
যদিই মনে পড়ে—
শীত এল, শীত
ওফ্, কী কুৎসিত!
বন্ধু বদলে বন্দুক
শান্তি হয়েছে শাস্তি
ঝলসে উঠল তন্দুর
পুড়ছে আসলে আস্তিক
দু’টো চোখ ছিল কখনও
আজকে সেখানে গর্ত
লেখা ছিল অধঃপতনও
পরস্পর অনর্থক
প্রতিদিন যার তিক্ত
ঘরের ভিতরে বোঝা সে
যে পথে বাসায় ফিরত
সেসব কেমন ধোঁয়াটে
দেয়ালের মুখ গম্ভীর
বিছানাবালিশ স্তব্ধ
জানলার নেই সম্বিৎ
চেপ্টে রয়েছে সব দোর
হাতে নেই জাদুদণ্ড
বদলে দেবার চাতুরি
লোকে বলে অপোগণ্ড
হাত ত্থেকে কাড়ে হাতুড়ি
ক্রুশকাঠ আছে পিছনে
রক্তের কালো চিহ্ন
নতুন বছর পিছু নেয়
দু’হাজারকুড়ি জীর্ণ
আর কিছু হারাবার নেই
আটকে পড়েছি কতকাল
সাঁকো নেই পারাপার নেই
সেতু ভেঙে গেছে শঠতায়
রাত্তির তাই শাস্তির
দিন হয়ে গেল আরও দীন
বিদ্ধ হয়েছে নাস্তিক
বারোমাস মানে বারোদিন
প্রভু, তাকে নিস্তারও দিন!
রইল বাকি তামাম বোঝাপড়া—
কাজ আর নেই— মাজার ছুঁয়ে বসি,
শক্ত হল ভরসা-আশার জোড়া
ডিপ্রেশনের দিয়াশলাই ঘষি…
এ-বর্ষ শেষ আর যেন না আসে,
বিপন্নতার বারুদে মুখ ঠাসা—
রোদ্দুরও ক্রিম… কেক-কুকিজের মাসে…
উল্টে দিয়েছি পাঁচ-পেগ উচ্চাশা…
চোখের ওপিঠে মাঘমাস এল ঘুরে…
বিদেশি বাতাসে থমকে রয়েছে সাইলেন্স—
দূর গ্রাম থেকে শুকনো পাতারা উড়ে…
পেয়েই গিয়েছি লেঙ্গি-মারার-লাইসেন্স—
আয় জানুয়ারি, বেদম ক্যালাব তোকে
দেখিয়েছিলিস রূপকথা-সাম্রাজ্য—
সন্ধ্যার তারা বসিয়েছিলিস চোখে…
ওঁৎ-পেতে তবু ছাই-করে-দেওয়া দাহ্য
চুলোয় গিয়েছে স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন—
হিমেল রাত্রে একলা একলা নাচব
নালায় ফেলেছি আংটির গ্রহ-রত্ন…
নববর্ষের পেটে লাথি মেরে বাঁচব!
বাজে-পোড়া-মাঠ আর ক্রুশকাঠ দুরন্ত পাখসাট
তোরই জন্যে হয়েছি হন্যে এই ঘাট ওই ঘাট
জোরসে বাতাস ঘুরছে মাথায় সন্ধের জাম্পকাট
উল্টোপাল্টা চেলেছ চালটা ছাড়ছি এ তল্লাট
মাথাফাটা ঘুড়ি… বৃথা ওড়াউড়ি… কেবল খাচ্ছে লাট…
কোথায়ই বা যাবে এত যে আবেগ থইথই চৌকাঠ
ছিল একদিন খোলা ড্রপসিন করত রাজার পার্ট
আজ রানি নেই, হয়রানিতেই বিকোচ্ছে ঝঞ্ঝাট—
উড়ছে দেয়ালে বেভুল খেয়ালে সব-নামলেখা-চার্ট
বড়ো সড়গড় অষ্টোত্তর : একক শূন্য আট…
পালাবি কোথায়, অগম্যতায়… একদুইতিন স্টার্ট—
সম্মুখে তোর ধু ধু প্রান্তর পিছনে ধাঁধার মাঠ…
পাগলা হাঁট!