গু চ্ছ ক বি তা ৩
১
সামান্য উপকরণ দিয়ে একটা সমুদ্র বানাতে চেয়েছিলে
যাকে হাতে নিয়ে বাড়ি ফেরা যায়
কখনও বা প্রয়োজনে পরা যায় চোখে
অনাবিল মিথ্যে কথার মতো তুষার পড়ছে আজ
ঘড়ি থেকে আলাদা হচ্ছে কাঁটা, ভিজে ছাই ঘেঁটে খুঁজছে আমাদের নাভি
সামান্য উপকরণ দিয়ে, এমনভাবে বানাতে চেয়েছিলে একটা ছিপছিপে শোকের পথ
যার কাছে যে কোনও দিনই যাওয়া যায়
২
স্মৃতি ফুটে উঠল খুব তোমার অসতর্ক রুমালে
রুমালও বেড়াল হল, অন্ধকার আরও বেশি গাঢ় হলে
শুধু তার তীক্ষ্ণ নখের আঁচড়ে সামান্য দাগ রয়ে গেল তোমার চরিত্রে
দিনেদিনে সেটুকুই জনরব হল
শীর্ণ নদীর মতো বয়ে গেল লোকালয় থেকে জঙ্গলে
শুধু তার উৎসটুকু বুকে নিয়ে, আরও বেশি বেড়াল পুষলে রুমালে রুমালে
৩
আলো টপকে এই বাস্তবতা।এই আলাদা করে কুড়িয়ে পাওয়া মুখ ঘড়ির বদলে দেয়ালে রেখেছ
ফলে কিছুতেই সময় বাজছে না আর, বদলে দেয়াল থেকে ঝরে পড়ছে একাধিক চোখ
এভাবে তোমার দেহে পাহারা বসল
দেখা দিল সন্দেহ, দেখা দিল নিয়ম না মানার গোপন আকাঙ্ক্ষা
শরীর ও মন দু’প্রান্তে রেখে
এভাবে তৈরি হল অভিসাররেখা
৪
মেয়েরা খুচরো পয়সার মতো গড়িয়ে যায় এখানে
আর রাত হলে উড়ন্ত ডাকবাক্সরা নামে মাঠভরা শস্যের মাঝে
খুঁটে খায় জ্যোৎস্নার ভেতর দানা দানা অন্ধকার
অনেক উঁচুতে ওই টাকা গাছ, চারিদিকে প্রশ্রয়ের বাতাস
অসতর্ক খাদ থেকে কারা যেন তুলে আনে অশ্রু সহ হাড় আর মাস
ভেঙে-পড়া অসংখ্য সাদা ডানা চারপাশে নিয়ে কোনও বৃক্ষের নিচে বসে থাকে এক আলো
অনেক অনেক দিন পর, কোনও এক শীতের সকালে
সেই বৃক্ষের কাছে এসে আমরা জেনেছি, তাকে নাকি তথাগত বলে
৫
গাছেদের সংকেত ভালো লাগে না আর, তারা কেবলই মাংসাশী তরঙ্গ পাঠায়
ফুল ও পাতা থেকে শুরু হয় এমনই উচাটন যে দেখি মানুষের শরীর থেকে খসে যায় বল্কল
চোখ ও কণ্ঠ থেকে কেবলই সরে যাচ্ছে ভাষা
তোমার তাকানো কিছুটা পিছলে ওই ফুটপাথে পড়ল
আর অমনি একটা দৃশ্যের বিস্ফোরণ
টুকরো টুকরো হাত-পা, তোবড়ানো বাটির কুচি, উড়ন্ত খুচরো পয়সা আর একাধিক ভাবলেশহীন চোখ ছড়িয়েছিটিয়ে
এসব থেকে পালাবার জন্য তুমি কাছে ডাকলে একটা লোকাল ট্রেন
অথচ তার চাপা আর্তনাদ তুমি জান না
জান না তোমাকে নিয়ে সে কেমন ঢুকে পড়ছে বৃক্ষের শাখায়
ঢুকে পড়ছে পাতার প্রতিটি জালকে
এভাবে শুরু হয় সালোকসংশ্লেষ
গাছ কেবলই মাংসাশী তরঙ্গ পাঠায়
শরীর থেকে খসে যায় বল্কল
মানুষ ক্রমাগত সূর্য ছিঁড়ে খায়