Hello Testing

4th Year | 2nd Issue

৩১শে বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 15th May, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

ক বি তা

দী প   শে খ র   চ ক্র ব র্তী

যদি পুনরায় প্রেম ছিন্নভিন্ন করে

 
শুধু ভালোবাসা নয়
তোমাকে জানাতে চেয়েছি
কোন পথে আমি ঘরে ফিরে আসি
রতনকুঠির পাশ দিয়ে যে লাল মাটি পথে
এক পথভ্রষ্ট সাধু গলায় অদ্ভুত অন্ধকার জড়িয়ে
অনন্তের পথে গান গেয়ে চলেছিল
তার কাছে হাত পেতে আমি ভিক্ষে চেয়েছিলাম
তোমাকেই, যদি বিশেষ ভুল না করি
এ কথা মনে রেখো
একুশটি জন্ম কোনো শৌখিন রমণীর হাত থেকে তৃষ্ণা মেটানোর মতো জল আমি পাইনি
কাঁটাঝোপ থেকে একেকদিন কবিতার নির্মমতা আমাকে
স্নানহীন এক দুপুরের কাছে নিয়ে চলে
আমিও বহুদিন তাকে ফাঁকি দিয়ে জ্যোৎস্নায় দেখেছি বন, ধূসর ঠিক যেন পুরুষস্পর্শহীন কোনো বিধবা রমণীর শাড়ি,  এমনকি বাতাসেও দোলহীন
তোমার বুকের ওপর নির্জন অথচ পুরোপুরি শব্দহীন নয় এমন এক মাঠ পার হতে গিয়ে প্রায় মৃত চাঁদের আলোতে দুটি মসজিদ
দেখেছি আমি কতশতবার
বৃত্ত বড় ভালো লাগে
ভালোলাগে প্রখর গ্রীষ্মের দুপুরে কারোর অসামান্য স্নান, জলরেখা
মায়ের পুরোনো কাপড়ের গন্ধ এসে
দু আঙুল ছুঁয়ে নেয়, যেন ঘুম
বলে,ফিরে আয়, ফিরে আয় 
অসময়ে তাই ফিরে আসা লিখি,হে প্রেম
অন্ধকারে একা, আয়নার সম্মুখে কোনো অলৌকিক আলো এসে আমারও অর্ধেক আলোকিত করে
সমস্ত বন্ধু, শত্রু আর আলোমায়া ছেড়ে এসেছিলাম একদিন নিজেকে প্রদক্ষিণ করতে, এ নির্জনে
নাকি নিজের প্রেতাত্মা, ভয়? 
প্রাণের ভেতরে একজন নম্র আলো উঁচু করে তার মুখ দেখে
সে মুখ তোমারই,হে প্রেম
পলাশবনের ভেতর থেকে একা একা সন্ধের অন্ধকারে এই হেঁটে যাওয়া
শুধু ভালোবাসা নয়
তোমাকে জানাতে চেয়েছি
কোন পথে ঘরে ফিরে এসে
টাঙিয়ে নিয়েছি মশারির বাকি দুটি কোণ
চাদরের টানটান আয়ত্ত করেছি
বৃত্ত বড় ভালো লাগে আমার
ভালোলাগে, এমনকি এখনও ভালোবাসা
শুধু ভয় হয়
কাউকে পুনরায় বলে দেওয়া
এই পথে ঘরে ফিরি
এই হল আমার উঠোন
এখানেই দুপুরের স্নানের জল পড়ে
দুয়েকটি প্রায় মৃত ঘাস,নতুন আশায় জেগে ওঠে
এ বয়সে জেগে ওঠা কি
ভালো? 
এ বয়স, কৈশোর পেরোনো কোনো শিশুর কাছে
হঠাৎ খুঁজে পাওয়া প্রিয়তম খেলনার মতো।
 
 
পলাশের বন
তেরোটি সুদীর্ঘ দিন নিজেকে প্রদক্ষিণ করে আচমকা
কোন টানে ফিরে চলেছি সংঘ,স্বজন, বন্ধু, পরিচিত আলোর আশ্রয়ে
তবুও ভেতরে তোমার দুটি চোখের বিশ্রাম
যে গভীর ইঁদারা খনন করেছিল তার জল
আমি সমর্পন করলাম
রাত্রির এই গভীরতাকে (তিনিও গ্রহণ করলেন) 
রাত্রির সোনাঝুরি বন,শীতের জড়তা কাটিয়ে এক সাঁওতাল হাওয়া জলের পশমের ওপরে বুলিয়ে দিয়ে যায় অবতল থুতনিখানি তার
সে তোমার কথা জানে হে পলাশ,সে জানে আমাদের এই সামান্য ব্যবধান একদিন এই পৃথিবীতে বাঁশি নামক বাদ্যটি এনেছিল
তোমাকে কত গভীর রাতে পার হতে গিয়ে পেয়েছি কিছুক্ষণ আগে পুড়েছে এমন কাঠ, হিংস্র পশুর খুলি নরম বালিতে এমনকি অন্য পুরুষের মৃতদেহ (অধিকার) থেকে এক অলৌকিক আলো এসে আমাকে আংশিক আলোকিত করে
এই ধনুকের হাত ফেলে দিলাম,দেখো তোমারই শেখানো মন্ত্র পড়ে মৃত হরিণটিকে ফিরিয়ে দিলাম প্রাণ,হে পলাশবন
এখনও জানিনি
বিষন্ন নারী নাকি নারীর গভীর বিষন্নতা, কোনটি বেশি প্রিয় লাগে
শিক্ষাসদনের পথ দিয়ে সারাদিন কাঁটাগাছ খাওয়া উঁটের ধ্যানের মতো হেঁটে গেছি
তবুও তো সঞ্চয় করি জল
তোমার ওই বালিকার মুখ দুহাতে ধুয়ে দেবো বলে কতদিন
দুহাতে আড়াল করা শিখেছি প্রদীপের আলো
যে সাঁওতাল রমণী আমার এই রসস্থ শরীরের ভেতর ঢেলে দিল দারুচিনি পানীয়
শোনো পলাশবন, তার তীব্র জঠর থেকে একদিন এক শিশু
সভ্যতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সমস্ত ডানার হিসেব বুঝে নেবে
আপাতত কাউকেই অভিশাপ দেইনা আমি
শুধু তেরোটি দিন নিজেকে প্রদক্ষিণ করে
আমি ফিরে চলেছি 
সেই একই সংঘ, স্বজন,  বন্ধুবান্ধব
সেই পরিচিত প্রশংসা, অপমান, সম্মুখের মিষ্টতা
শুধু করতলে তোমার চোখের দুটি পাখি
নিয়েছি হে বনপলাশ
তুমি কি অপেক্ষা করবে কিছুদিন? তুমি কি উত্তর খুঁজে দেবে
বিষন্ন নারী নাকি নারীর গভীর বিষন্নতা, কী বেশি প্রিয় লাগে? কেন?
আমার নির্মম ফুরিয়ে যাওয়ার আয়ু আমাকে ফেলে রেখে বহুদূর চলে গেছে
ভয় হয়, এ ভয়
তোমার প্রসঙ্গে আসা
মনে হয়
তোমাকে জেনে নিই, একা একা যেভাবে নিজেকে নিজের মতো জানি
মনে হয়
যে কারণে একটি বৃদ্ধ বৃক্ষের কাছে একজন পলাশ ফুলের মতো বালিকা আসে
ঠিক তেমনই মৌনতায় তোমার দেবভাষা বুঝি
পলাশবন, শোনো
সামান্য তেরোটি দিন নিজেকে পার হতে গিয়ে 
এ প্রবাসে অন্ধের যষ্টি আমি
হারিয়ে ফেলেছি
এখন পলাশবন, আমি জানি, তুমিই সেই বালিকা
সৃষ্টির প্রথম সুর বুকে নিয়ে
অন্ধকে যে পৌঁছে দিয়েছিল স্থির জলে
সমস্ত পথের কলঙ্ক ধুয়ে দেবে বলে
মুখ তোলো পলাশবন
বলো, উত্তর দিয়ে যাও
সমস্ত দেখার আয়োজন নিভে গেলে 
তুমিও কি অন্ধকে খোঁজনি?
 
 
অপমানের ভেতর একটি ছোট দরজা খুলে আমি একদিন এই পৃথিবীর দিকে তাকালাম
তাকানোর থেকে বড় দেখা
আর দেখার থেকেও বড় 
আমার দরজা খুলে নেওয়ার ধ্যান
একটি মেয়ের সরল অথচ মৃত্যুর সমবয়সী চোখ
আমাকে জিজ্ঞেস করে
কে তুমি? 
উত্তর দিতে গিয়ে দেখি আমার নাম নিয়ে গেছে সারস পাখির দল
আমার গোত্র নিয়ে গেল নীলমণিলতা
এমনকি আমার ভেতরের সমস্ত জল এক চুমুকে পান করে গেল দুস্প্রাপ্য বসন্তের মেঘ
উত্তর দিতে পারিনি বলে একটি সরল মেয়ের হাতের ওপর পদ্ম হয়ে ফুটবো না এই বিশ্বাস ছিল আমার
অন্তত সাপ এবং পরিচিত মহলে সকলেই জানেন,এ সাপ শুধু নিজেকেই দংশন করেন
আমার অপমান ঘন হয়ে হয়ে একটি কালো রেখা হল, যা পথ
ফুরোয় না,শুধু অন্ধ এক বালক হাত বাড়াতে বাড়াতে এগিয়ে চলেছে ফুলডাঙার পথে
তার গান, আমি তোমাকে দিলাম হে মেয়ের সরল
তোমার মৃত্যুর সমবয়স আমাকে দাও
আমাকে জানাও গভীর রাতে যে আয়ু আর্তনাদ করে
তার কীসের অভাব? অপমানের ভেতরে একটি ছোট দরজা খুলে সেওকি একদিন
তাকিয়েছিল পৃথিবীর নির্মমতার দিকে? 
সেও কি মেনে নিয়েছিল?
তার মেনে নেওয়া, একটি মেয়ের সরল তাকিয়েছিল মৃত্যুর মতো
তার চোখ আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল
কে তুমি? নাম? গোত্র এমনকি সামান্য জল? 
একটি কাঁটাগাছ আমার গলার কাছে এসে বলেছিল 
– উনি মরুভূমি।

আরও পড়ুন...