গু চ্ছ ক বি তা
১
তারপর স্কুলছুটি হলে আমি বাড়ি ফিরতাম। রিষড়া থেকে চন্দননগর। রিষড়া স্টেশনে দেখতাম, পাগলটি আজও বসে আছে অমলিন। ট্রেনে উঠতাম, হকার দেখতাম৷ একটা বাউল উঠত কামরায়, ভিক্ষুক গান গাইত। অথচ জনগণের শব্দকে কোনোদিনই ছাপিয়ে উঠত না সেসব! দুঃখ পেতাম না, রাগ আসত। মনে হতো— সারা কলকাতা জুড়ে এত কবিসভা কেন!
২
এই সন্ধেবেলা বৃষ্টিপাত দেখে আবার ভেঙে যাচ্ছি আমি৷ গুটিয়ে যাচ্ছি। আমার সমস্ত আবেগ জুড়ে ঝুলে রয়েছে বিরাট এক ফটোফ্রেম। যার ভিতর থেকে জুলজুল চোখে তাকিয়ে আছেন জীবনানন্দ। আমার কি এখন ঘুমোনো উচিত? নাকি সমস্ত ঘুম তাড়িয়ে দেওয়া উচিত জীবন থেকে?
এমন অক্লান্ত দ্বিধায় পড়ে ক্লান্ত লাগে ক্রমশ। এবং যেসব সুশীল কবিরা চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলেন—“কবিতা পড়ুন”, তাঁদের প্রত্যেককে এক-একটি আস্ত গান্ডু মনে হয় আমার
৩
সত্যি কথা বলতে, বাংলা কবিতা নিয়ে ভাবি না আর। টিভি খুললেই দেখি— আমাদের রাজনীতিকেরা কী সুন্দর সুন্দর কথা বলছে৷ আমি তাদের থেকে শিল্প-শিক্ষা নিই৷ তাদের মতো করে ভাবতে শুরু করি…
এবং এই সেদিন একদল পাঠক আমাকে পিছমোড়া করে বেঁধে নিয়ে গেল। তারা আমাকে বলল— “ লেখা কই? লেখা দাও! আমরা কবিতা পড়তে চাই…’’। আমি তাদের কাছে প্রাণভিক্ষা করলাম। আর শুধুমাত্র জীবন রাখতেই তৎক্ষণাৎ লিখে তাদের হাতে ধরিয়ে দিলাম কয়েকটি চিরকুট। এরপর, ওরা আমাকে মুক্ত করল। ওরা আমার নামে জয়ধ্বনি দিতে লাগল…
আর আমি ধীরে ধীরে উল্লসিত হচ্ছি। মুচকি-মুচকি হাসছি— “হারামিগুলো জানেই না, কবিতা কাকে বলে…!”
ছেলেকে খাওয়াব বলে, আমি, আমার বউয়ের থেকে খাবার চুরি করে রেখেছি।
ছেলেকে খাওয়াবে বলে, আমার বউ, আমার থেকে টাকা চুরি করে রেখেছে
এবং একদিন, আমাদের দু’জনের এই চুরি করার সময়ে যখন আমরা ব্যস্ত, তখন এক ছদ্মবেশী ব্যাধ আমাদের ছেলেকেই চুরি করে নিয়ে গেছে…
আমরা ভয় পাচ্ছি, আমরা আঁকতে উঠছি— এখন এই চুরির মাল নিয়ে, আমরা কার কাছে যাব!
আমাকে রাস্তা চিনিয়ে তোমার বাড়ি অবধি নিয়ে এসেছিলেন যে ভদ্রলোক, তিনি আজ পাঁচবছর পর রাস্তা হারিয়ে উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন রাস্তায়…
আমি কৃতজ্ঞতাবশে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিতে চাই। কিন্তু তিনি বাড়ি যেতে চান না! তিনি তাঁর সবুজ আঙুল তুলে আমার বাড়িটিকেই চিহ্নিত করে বলেন— এটিই তাঁর…
এবং আজ পাঁচবছর পর, পুনরায় রাস্তা খুঁজতে হবে নিজেদের…