ক বি তা
সব চলে যাওয়ার শেষেও কিছু ফেরা থাকে। পুরোনো অভ্যেস এসে বসে আজন্ম পরিচিত প্রিয় ছাদটির কার্নিশে। আমার খোলা খাতায় দিনের আলো এসে পড়ে। এখানেই ঋতুরা আসে, একে একে দুঃখ বদলে যায়। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়ে প্রাচীন চিলেকোঠা। ঠাকুমার জমানো ইচ্ছেগুলো ভরা আছে শুকোতে দেওয়া কাসুন্দির কৌটোয়। প্রাচীরের বুনো ফাটলের ক্ষতে গাঢ় কংক্রিটের প্রলেপ পড়ে। আমরা বড়ো হতে হতে ছোট হয়ে যাই আরও…
এইসব বিষণ্ণতার ভিতর নিয়ম করে বিকেল নামে। দিনের শেষ সূর্য উঁচু বাড়িটার পেছনে আড়াল হতে হতে ছায়া ফেলে যায় প্রৌঢ়ার শান্ত চোখে। তার চলে যাওয়ার দিকে এভাবেই বিষণ্ণ দৃষ্টিতে কতকাল তাকিয়ে রয়েছে পাশের বাড়ির অন্ধ ছেলেটা। রাত যেন মঞ্জরীর খোঁপা। সমস্ত অবন্তীর ধুলো মেখে তার স্বপ্নে এসে প্রাচীন ধাঁধার মতো দুহাতে তার দুচোখ আড়াল করে রেখেছে তার ঠাকুমার গল্পের মতো। ইতিহাস এক অদ্ভুত আধার। প্রাচীন প্রদীপের মতো আড়াল করেছে অন্ধকার।
পিতৃতন্ত্রের সূক্ষ্ম শিকড় কখন আলগা হয়েছে বোঝা হয় না।একমুঠো হাসি মেখে পূর্বপুরুষের মতো দাঁড়িয়ে থাকে বাড়িটা। ঝুলপড়া জানালার ঘুলঘুলি বেয়ে আমার মহামূল্য দুঃখের পাশে এসে বসে চন্দ্রকলা মেয়ে। ফেলে যায় খোঁপার প্রিয় ফুল। নৈঃশব্দ্য বিছিয়ে দিই ভেজা বাতাসে। কে যেন বলেছিল সময় ফুরিয়ে এলে মানুষও একসময় রূপকথা হয়ে যায়!