অ নু বা দ ক বি তা
শোনো : আবার একবার
এইখানে আমি মাতাল হই
রেডিওতে চাইকোভোস্কি শুনতে শুনতে
যীসাস, আমি তাকে শুনেছিলাম
৪৭ বছর আগে যখন আমি
একজন উপোসি লেখক ছিলাম
এবং এখানে আবার সে উপস্থিত
আর আমি ছোটখাটো একজন
সফল লেখক এখন
আর মৃত্যু এই ঘরে হাঁটাহাঁটি করছে
আমার সিগার স্মোক করতে করতে
আমার ওয়াইনের নেশাটাকে নিয়ে
যেন সাইকো প্যাথেটিক সোনাটায় সুর ভাঁজছেন,
এটা একটা যাপন হয়ে আছে
এবং আমার সৌভাগ্যের কারণ
আমি ছক্কাটা সঠিক ফেলেছিলাম :
আমি আমার শিল্পের জন্য উপোস করেছিলাম,
উপোস করেছিলাম ৫টি হতভাগা মিনিটের জন্য,
৫ ঘন্টা, ৫ দিন —
শুধু চেয়েছিলাম শব্দকে নামিয়ে আনতে খ্যাতি,
অর্থ কোনো ব্যাপার ছিল না
শব্দকে আমি নামাতে চেয়েছিলাম
আর তারা চেয়েছিল আমি যেন একটা
ডিপার্টমেন্ট স্টোরে স্টক বয় হই
তা বেশ, মৃত্যু বলছে, হাঁটতে-হাঁটতে
আমি তো তোমাকে পাবো যে করে হোক
সে তুমি যাই হও না কেন : লেখক, ট্যাক্সি ড্রাইভার,
বেশ্যার দালাল, কসাই, স্কাইডাইভার, আমি তোমাকে ধরবোই…
ঠিক আছে বাছা, বলি তাকে । রাত একটা যখন রাত দুটোর দিকে ঢলে যায়,
আমরা একসঙ্গে তখন মদ্যপান করি এবং
একমাত্র সে-ই জানে মুহূর্তটি,
কিন্তু আমি একটু বোকা বানালাম তাকে :
আমি আমার হতভাগা ৫ মিনিট
এবং আরো বেশি পেলাম
মূল কবিতা : Death is smoking my cigar
দেওয়ালে পিঠ ঠেকানো, ফায়ারিং স্কোয়াড প্রস্তুত
তারপরই তাঁর সাজা মকুব
ধরো, ওরা যদি দস্তয়েভস্কিকে গুলি করতো ? তাঁর সব লেখার আগেই ?
আমার মনে হয় সরাসরিভাবে সেটা কোনো ব্যাপার হতো না ।
লক্ষ কোটি মানুষ আছে যারা আদৌ তাঁকে পড়েনি এবং কখনোই পড়বে না ।
কিন্তু তবু একজন যুবক হিসেবে আমি জানি
তিনি আমাকে কারখানায় ঘুরিয়ে দেখেছেন,
বেশ্যাদের পেরিয়ে,
রাত্রির ভেতর দিয়ে আমাকে উঁচুতে তুলেছেন
এবং রেখেছেন একটু ভালো জায়গায় ।
এমন কি বারে
অন্য হতভাগাগুলোর সাথে পান করতে বসে
আমি খুশি হলাম তারা দস্তয়েভস্কির সাজা মকুব করল,
এটা আমাকে আরো একটা ধরালো,
আমার দুনিয়ার সেই বিচ্ছিরি থোবড়াগুলোর দিকে
আমাকে সরাসরি তাকাতে দিলো,
মৃত্যু তার আঙুল উঁচিয়ে,
আমি দ্রুত ধরলাম,
একজন নির্ভেজাল মাতাল
কুৎসিত অন্ধকার ভাগ করছে
আমার ভাইদের সাথে ।
মূল কবিতা : Dostoyevsky
মধ্য দুপুরে
সমুদ্রতীরের কাছে একটা ছোটো কলেজে
শান্ত
আমার হাত গড়িয়ে নামে ঘাম
ঘামের একটা ফোঁটা টেবিলের ওপর
আঙুলে সেটা চেপ্টে দিলাম
রক্তের টাকা রক্তের টাকা
হে ভগবান, ওরা নিশ্চয়ই ভাবে আমি অন্যদের মতোই এটা ভালোবাসি
কিন্তু এটা রুটি, বিয়র ও বাড়িভাড়ার জন্যে রক্তের টাকা
চাপে আছি খারাপ বাজে লাগছে
বেচারা মানুষ পারছিনা পারছিনা
একটা মেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে
বেরিয়ে গেল
সশব্দে দরজা টেনে
একটা নোংরা কবিতা
কেউ বলেছিল নোংরা কবিতাগুলো না পড়তে এখানে
খুব দেরি হয়ে গেছে।
কয়েকটা লাইন আমার চোখ দেখতে পায়নি আমি সেটা পড়ে ফেললাম
বেপরোয়া কেঁপে
বাজে রকম
ওরা আমার গলা শুনতে পায়নি
আর আমি বললাম,
চললাম, এই পর্যন্ত, আমার
শেষ হয়ে গেছে।
এবং তারপরে আমার ঘরে
স্কচ এবং বিয়ার :
একজন ভীতুর রক্ত
এটাই যখন
আমার নিয়তি হবে :
ছোটো হলঘরের অন্ধকারে
দুটো পয়সার জন্য আঁচড় কাটা
কবিতাপাঠ করা যার জন্য আমি ক্লান্ত অনেকদিন ধরে ।
আর আমি ভাবতাম
যেসব লোকেরা বাস চালায়
বা পায়খানা পরিষ্কার করে
অথবা গলির মধ্যে মানুষ খুন করে
তারা সব বোকার দল ।।
মূল কবিতা : poetry reading
সুইসাইডের সব দিনরাত্রির পরে
আমি নিজেকে দেখতে পাই,
একজন নিচুমানের একঘেয়ে নার্স পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বৃদ্ধাবাস গুলির একটি থেকে (অবশ্যই, যদি আমি বিখ্যাত ও ভাগ্যবান হই, তবেই )
আমাকে বার করে দিচ্ছে …
সেখানে পিঠ টানটান করে হুইলচেয়ারে আমি বসে আছি …
প্রায় অন্ধ, চোখ গুলো পেছনে ঘুরে গিয়ে
আমার খুলির অন্ধকারে
মৃত্যুর করুণা খোঁজে …
“আজকের দিনটা কি সুন্দর না,
মিষ্টার বুকোওস্কি ?”
“ও, হ্যাঁ, হ্যাঁ …”
বাচ্চাগুলো পেরিয়ে যায় এবং আমি যেন নেই আর ডাগর ডাগর মেয়েগুলো হেঁটে যায়
তাদের বড়ো বড়ো উঁচু পেছন
এবং উষ্ণ নিতম্ব আর আঁটোসাঁটো সব কিছু নিয়ে ভালোবাসা পেতে
আর আমি কোনোভাবেই যেন নেই …
“তিন দিন পরে আজ এই প্রথম রোদ উঠল,
মিষ্টার বুকোওস্কি।”
“ও, হ্যাঁ, হ্যাঁ।”
ওখানে আমি টানটান বসে আছি হুইলচেয়ারে, এই কাগজের পাতার চেয়েও শাদা,
রক্তহীন,
মাথা গেছে, জুয়া গেছে, আমি,
বুকোওস্কি, গেছি …
“আজকের দিনটা কি সুন্দর না,
মিষ্টার বুকোওস্কি?”
“ও, হ্যাঁ, হ্যাঁ …” পাজামায় পেচ্ছাপ,
মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরিয়ে আসে ।
দুটো বাচ্চা স্কুলের ছেলে ছুটে গেল –
“অ্যাই, তুই বুড়ো লোকটাকে দেখেছিস?”
“হ্যাঁ, বাবাহ্, কী বিচ্ছিরি লাগলো দেখে!”
অনেক রকম ভয় দেখানোর পরে
কেউ একজন আমার জন্য সুইসাইড করল অবশেষে ।
নার্সটি হুইলচেয়ার থামালো, ঝোপ থেকে
একটা গোলাপ তুললো,
আমার হাতে দিলো।
আমি যেন জানিনা
এটা কি। এটা আমার নুনুও হতে পারে
মঙ্গলকর যা কিছু করার জন্যে ।
মূল কবিতা : the last days of the suicide kid
তিনি কখনও কখনও আভাসে বলতেন
আমি বেজন্মা আর আমি বলতাম ব্রাম্স (Brahms) শুনুন , বলতাম রং করতে শিখুন আর গিলুন এবং মেয়েছেলে ও ডলারে মজবেন না কিন্তু তিনি চেঁচাতেন, যীশুর দোহাই বাপ্,
তোর মাকে মনে কর
তোর দেশকে মনে কর
তুই আমাদের সবাইকে মারবি !..
আমি বাবার বাসার (যার জন্যে ২০ বছর একই কাজ করে ৮০০০ ডলার দেনা করেছিলেন) ভেতরে গেলাম , তাকালাম তার মৃত জুতোজোড়ায় যেভাবে তার পা চামড়াকে বেঁকাতো, যেন তিনি রেগেমেগে গোলাপের চারা লাগাচ্ছেন, এবং তাই করতেন, আর দেখলাম তার নিভে যাওয়া সিগারেটটা, শেষ সিগারেট এবং তার শেষ বিছানা, যাতে তিনি সে রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন, আমার মনে হলো আমার আবার পেতে দেওয়া উচিত, কিন্তু পারলাম না কারণ একজন বাবা সবসময়ই তোমার মালিক, তিনি চলে গেলেও; আমার ধারণা এই ব্যাপারগুলো বারেবারে ঘটেছে কিন্তু আমি না ভেবেও পারিনা সকাল সাতটায় রান্না ঘরের মেঝেতে মরে যাওয়া যখন অন্য লোকেরা ডিম ভাজে
এটা ততটা খারাপ নয়
যতক্ষণ না তোমার বেলায় সেটা ঘটছে ।
আমি বাইরে গেলাম এবং একটা কমলালেবু তুললাম আর উজ্জ্বল খোসাটা ছাড়ালাম; সবকিছুই তখনও জীবন্ত:
ঘাসগুলো বেশ গজাচ্ছে,
সূর্য আলো পাঠাচ্ছে একটা রাশিয়ান স্যাটেলাইটের বৃত্তে,
কোথাও একটা কুত্তা চিল্লাচ্ছে নির্বোধের মতো, পড়শিরা ব্লাইন্ডের আড়ালে উঁকি মারছে ।
আমি একজন অচেনা এখানে এবং কিছুটা
(মনে হয়) খচ্চর, আর আমার সন্দেহ নেই তিনি আমাকে ভালোই এঁকেছিলেন (সেই বুড়ো ছেলে এবং আমি পাহাড়ি সিংহের মতো লড়তাম)
ওরা বলাবলি করে তিনি সবকিছুই ডুয়ার্টে তাঁর কোন মেয়েছেলের কাছে দিয়ে গেছেন কিন্তু আমার তাতে কিছু যায় আসে না –
সে নিতেই পারে :
তিনি আমার বুড়ো মানুষ ছিলেন
এবং মারা গেছেন ।
ভেতরে, একটা হালকা নীল স্যুট পরার চেষ্টা করছিলাম, যা আমি পড়ি তার চেয়ে অনেক ভালো আর হাত নাড়ালাম বাতাসে একটা কাকতাড়ুয়ার মত
কিন্তু কোন লাভ হল না :
আমি তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলাম না
যতই আমরা পরস্পরকে ঘেন্না করতাম না কেন।
আমরা একই রকম দেখতে ছিলাম, আমরা যমজ হতে পারতাম
বুড়োটা এবং আমি : ওরা এটাই বলে ।
তিনি তার বিচিগুলো পর্দায় ঝোলাতেন
পুঁতে দেওয়ার জন্য
যখন আমি তিন নম্বর রাস্তায় একটা বেশ্যার সাথে শুতাম ।
তা বেশ, এই মুহূর্তটা আমাদের দাও :
আমার মৃত বাবার স্যুটে
একটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
অপেক্ষাও করছি
মরে যাওয়ার।
জন্ম জার্মানিতে, পিতা আমেরিকান সেনা ও মা জার্মান। চার্লস-এর বয়স যখন তিন বছর পরিবারটি তখন আমেরিকায় চলে যায় এবং লস এঞ্জেলেস-এ বাস করতে থাকে। চার্লস পড়াশুনা করেছেন লস এঞ্জেলেস সিটি কলেজে ১৯৩৯ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত। তারপর পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে নিউ ইয়র্ক চলে যান লেখক হওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু হতাশ হতে হয়, প্রকাশক জোটেনি। দশ বছর কিছুই লেখেননি আর। এই সময় জীবিকার জন্য নানাধরনের সাধারণ পেশার কাজ করতে হয়েছে তাঁকে। পুনরায় কবিতা লিখেছেন, এবার তাঁর কবিতা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রথম কবিতার বই Flower, Fist and Bestial Wail ১৯৫৯ সালে। এবার খ্যাতি পেয়েছেন। এর পর প্রায় প্রতি বছরই কাব্যগ্রন্থ বের হয়েছে বুকোওস্কির। ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত It Catches My Heart in Its Hands গ্রন্থের কবিতার বিষয় হয়েছে মদ্যপায়ী, বেশ্যা, সব-হারানো জুয়াড়ি ও এমন সব সাধারণ মানুষ। জনপ্রিয়তা বেড়েছে বুকোওস্কির। এরপর প্রকাশিত ও উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল Mockingbird Wish Me Luck (১৯৭২), Love Is a Dog from Hell (১৯৭৭), War All the Time (১৯৮৪), You Get So Alone at Times That It Just Makes Sense (১৯৮৬) ইত্যাদি।
কবিতা ও গল্প মিলিয়ে তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা পঁয়তাল্লিশ। খুব সাধারণ, এমনকি, পরিত্যক্ত ও নগণ্য চারপাশের জীবন, তার স্বাভাবিকতা ও অস্বাভাবিকতা বুকোওস্কির কবিতার বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই এই জীবনের প্রসঙ্গে এসেছে মদ্যপান, জুয়াখেলা, যৌনতা, সহিংসতা ও মৃত্যু। ফ্রি ভার্সে লিখেছেন প্রায় সব কবিতাই। তাঁর কবিতার ভাষা আকর্ষণীয় হয়েছে সবার কাছে। এই ভাষা গতিময়, বিবৃতিমূলক হয়েও তীক্ষ্ণ আবেগময়। বুকোওস্কির কবিতা এখনও সমানভাবে পঠিত।