গু চ্ছ ক বি তা
এক
এ যেন গোপন ক্যামেরা
সবকিছু মুখস্থ করে রাখছে
কলহ এবং খুনসুটি
আলসেমি ও আড়মোড়া
লজ্জা বা সাজসজ্জা
এমন কী
তোষকের নিচের বাতিল ফর্দ
চাদরের দাগ
অথবা অন্ধকারে জ্বলজ্বল করা
একজোড়া রক্তচোখ
নিজেও জানে সে
কিছুই ফাঁস করতে পারবে না
দুই
মাথার ওপর কংক্রিটের আকাশ
জ্যোৎস্নাবৃষ্টিতে কল্পনার ডাকু এসে
গাইতো চিচিং ফাঁক – মাঝ বরাবর
নীরবে দু’ভাগ হয়ে খুলে পড়ে ছাদ,
ভূতের বাতির মত ম্লান তারাদল
জ্বলেপুড়ে বাতাসে মিলিয়ে যায়
পরিচিত প্যাঁচাটি ঘাপটি মেরে বসে
থাকে নিশ্চয়ই কোনো পাতার আড়ালে
কাঁঠাল গাছের অন্ধকারে, ও-পাড়ার
শেয়ালের হট্টগোলে ঘোর কেটে যায়,
গোরস্থানের জোনাকি মিছিলের সাথে
চুপচাপ আমারও যেতে ইচ্ছে করে
গন্ধরাজের সুবাস নিতে, কাছে গেলে
গন্ধটি আগের মতো মাতাল করে না
তিন
চাঁদটাকে ঘুলঘুলি মনে হয় – আকাশের,
দেয়ালের মতো আমার একটা যদি থাকতো
স্পেস খুব জরুরি আজকাল, মাথার গভীরে কোনো
ফাঁকা জায়গা নেই, সবটা নদী ও পাহাড়ের মত বেদখল হয়ে গেছে।
চার
হয়তো কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে খুব, কাকভেজা হয়ে দৌড়ে আশ্রয় খুঁজে নিচ্ছে ছাতা ছাড়া পথিক, দুপুরে দোকানে বসে চা-খাচ্ছে, অপরিচিত কারও সাথে, গল্প চলছে অফুরান, টিনের চালের আওয়াজ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে শব্দদের, টংঘরের এক পাশে তাসের আড্ডা, একজন একফাঁকে লুঙ্গি হাঁটু অবধি উঁচিয়ে শি করে এসে মজে গেল খেলায়। ফাটা দেয়ালের শেষমাথায় টিকটিকিটিকে আরেকজন বিরক্ত করে যাচ্ছে সমানে। দোকানদার বিড়ি দিতে গিয়ে ভিজিয়ে গালি খেলো একটা, দেশলাইয়ের প্যাকেটে একটিমাত্র কাঠি, কয়লার চুলায় কেতলিতে চা-পাতা ঢেলে কোনভাবে আগুন ধরাতে পারছে না, বারবার তাগাদা দিয়ে যাচ্ছে ওরা, বৃষ্টির ঝাপটা আসছে বলে ভাঙা জানলার পাশে ছাতা ধরে রেখেছে একজন, দমকা হাওয়ায় ঘুলঘুলির ভেতর তবুও ভিজে যাচ্ছে সকলে
পাঁচ
বিছানায় শুয়ে থাকে, রাত-দিন শুধু ঘুম আর ঘুম, মুখে নেয় না কিছু, নাকে পাইপ গুঁজে নিয়ম করে দুই বেলা তরল ঢেলে দিয়ে যায়, দুই দিন পরপর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দেয় গা, কখনও এপাশ থেকে ওপাশে ফিরিয়ে দেয় শরীর। মাঝেমধ্যে আঙুল নাড়ে, নাকি মনে হয়! অন্য হাত দিতে বাকি হাত চুলকে নিতে দেখেছে কালেভদ্রে দাবি করে কেউ, ইচ্ছে হলে জগতের বিরক্তি নিয়ে চোখের পাতা খোলে অনেকদিন পর আবার বন্ধ করে নেয় – বুঝি ঘুম পাচ্ছে খুব অথবা বহুকাল ঘুম হয়নি, কী ভেবে আবার চোখ মেলে, সামনে সকলে যদিও দৃষ্টি তার পাশের দেয়ালে, স্যাঁতস্যাতে নোনাধরা, জানলা নেই ঘুলঘুলিতে একটি চড়ুই আসা-যাওয়া করছে।