Hello Testing

4th Year | 3rd Issue | June-July

৩০শে আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 16th July, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

দী র্ঘ  ক বি তা

তৃ ণা   চ ক্র ব র্তী

ঈশ্বরের মুখ দেখে ফেলার অপরাধে

না লেখা খাতার মতো সাদা বারান্দা একদিকে

নির্জন শব্দের ভেঙে পড়া রেফ্‌ অন্যদিকে

তবু অনন্যোপায় মেলে রাখা জামায় সুতোর মিহি কাজ

এক উৎসব থেকে আর এক উৎসবের দিকে হাওয়া দেয়

 

আর কিছু নয়, শুধু আমি এসবের কতটুকু জানি

এ প্রশ্নের সামনে এসে অস্বস্তি হয়, ঘাড়ের কাছে জমে ওঠা সন্দেহ

গাঢ় শ্বাস ফেলে সরে যায়, সিগার ধরাতে চেষ্টা করে

আর আমি হঠাৎই দেখে ফেলি তাঁর তাৎক্ষণিক ভাঙাচোরা মুখ

 

অথচ দেখা হয়েছে কতবার এর আগে

সেইসব অপরিচিত বিকেল নেই আর

একই রাস্তায় ছুটে চলে যাওয়ার অন্ধকার নেই

লুকিয়ে রাখাগুলো নেই

সমস্ত শহর জুড়ে ভ্যান গঘের মিউজিয়াম   

আমি কি তাহলে ঈশ্বরের মুখ দেখে ফেলার অপরাধে

এক ক্যানভাস থেকে ক্রমাগত ঢুকে পড়ছি অন্য এক ক্যানভাসে

pujo_16_sketch2

না লেখা খাতার মতো পড়ে থাকা সাদা বারান্দা

আর নির্জন শব্দের ভাঙা রেফ্‌ আমাদের মাঝখানে

আমাদের চন্দনপুর যাওয়া হয়নি কখনই 

তারই মধ্যে দেখেছি তোমার উৎসব 

ক্রমাগত কমলা রঙের হয়ে গেছে

 

আমার কোনও উৎসব ছিল না কোনোদিন

তবু অন্যের উৎসবে সামিল হতে হতে

সাদা বারান্দার পাশে পিতলের মূর্তি

পদাবলী পেরিয়ে যাওয়া দুপুরে জাগ্রত হয়ে উঠত কীভাবে

সেই আশ্চর্য খেলা শিখতে না পারার অপরাধে

পিছু হঠতে না পারার অপারগতায়

ভেঙে যাওয়া খেলনা জোড়া না দিতে পারার অভিযোগে

সমস্ত সম্ভাবনার মুখে দাঁড়িয়ে থেকেও সরে গিয়েছি একসময়

pujo_16_sketch2

সকলে যেভাবে যায়, অথবা যেভাবে থাকে

আমি তার কতটুকু জানি 

ফাঁকা আয়নায় ভেঙে পড়ার শব্দটুকু আগলে রেখে  

বহুবার মুখোমুখি হয়েছি, ঝর্ণার শব্দে সম্বিত ফেরার আগে

শুধু একবার তাঁর মুখ দেখে ফেলার অপরাধে

দিগন্তের ধারনায় তাকিয়ে থেকেছি শূন্যে

    

আমার শূন্যের অধিকারটুকুও খোয়া যাবে একদিন

আমাদের চন্দনপুর যাওয়া হবে না কখনোই     

আমরা গিলে ফেলব এই অর্বাচীন মুখোমুখিগুলো

অথবা ভুলে যাব, জানলা বন্ধ করব 

ফিরে যাবে স্নানরত দুপুর

এসব তবু লিখে রাখবার মতো কিছু নয়

 

আমি বারবার একই শব্দে ফিরে যেতে চেয়েছি

আর পুনরাবৃত্তি হবে বলে চলে যেতে চেয়েছি সমুদ্র

একটানা কথা বলে, বোতামঘর পাল্টে ফেলে   

কোনও নাটকীয়তা নয়, আমি চেয়েছিলাম নির্লিপ্তি এক

চেয়েছিলাম সি-বিচে ফেনার ওপর দাঁড়িয়ে থেকে দেখতে

কতটা বালি ফিরে যায় প্রতি ঢেউ-এ

কতটা লেগে থাকে বোকামির মতো, অধিকারে

pujo_16_sketch2

নির্জন, তোমার থেকে একমাত্রা কমে যাক

তুমি আরও কাছের হয়ে ওঠো

আয়নার ভেতর নেমে যাক শেষ দুপুরের রোদ

নেহাতই অসাবধানতায় আমি ঢুকে পড়েছি এই কাচের মধ্যে

এখান থেকে সবকিছুই স্বচ্ছ দেখায়

কোনও শব্দ কানে আসে না  

সমস্ত মুখ নিখুঁত হয়ে ওঠে, ভোরবেলার মতো দেখায় 

এসব তবু লিখে রাখবার মতো তেমন কিছু নয়

 

আসলে যা লিখতে চেয়েছি সবই সাদা খাতার মতো স্থির

অথবা বারান্দার মতো এক দীর্ঘ মনোলগ

স্বল্প পরিচিত করিডোর কোনও

কিছুটা আলো ও অন্ধকার সামলে ওঠা

লম্বা গাছের নিচু ঢালু ছায়া  

যার উৎসর্গে লেখা থাকেনি কোনও নাম

যাকে ঈশ্বর বলে মানতে গিয়ে দেখেছি অসংখ্য মুখ

বেশিরভাগ আদলই চেনা, অযথা সংযত, সচেতন

অতিথির দূরত্বে এগিয়ে দেওয়া স্মিত সাহচর্য

দু-একটা ভাঙাচোরা গোপন করা রয়েছে সাবধানে

pic333

অথচ আমি এর কতটুকু জানি

প্রথম জন্মের দূরত্ব আজও কাটিয়ে উঠতে না পেরে

কীভাবে পৌঁছে গিয়েছি দ্বিতীয় জন্মের শেষে

ভুল করে দেখে ফেলেছি ভেঙে যাওয়া বিগ্রহ

মনে রেখেছি যা কিছু ভুলে যাওয়ার

পেরিয়ে গিয়েছি এমন কিছু অনায়াস

প্রতিটা স্তরে জমে থাকা গল্পের সম্ভার

আমাকে নিপুণভাবে বুনে নিয়েছে সূচের তীব্র

দুপুরের গায়ে ফুটে উঠেছে সুতোর মিহি কাজ

সাদা বারান্দা অথবা নির্জনতার প্রশ্নে ফিরে গিয়ে শুনেছি

অমীমাংসিত শব্দের গাঢ় নিঃশ্বাস

যাকে অতিক্রম করতে গিয়ে থেমে যায় সমুদ্র

লাইট হাউসের গায়ে আছড়ে পড়ে ফিরে যায় নিরুপায় জল  

 

এসব তবু লিখে রাখবার মতো তেমন কিছু নয়

আমি এসবের কতটুকুই বা জানি

আরও পড়ুন...