অ নু বা দ ক বি তা
মিরাবো সেতুর নীচে বয়ে যাচ্ছে সেন
আর মনে পড়ে
আমাদের ভালোবাসা
প্রতিটি দুঃখের পরে পুনরায় আনন্দ ফিরেছে
ঘন্টা বাজিয়ে দিনের শেষ ঘোষণা করুক রাত
আমাকে পেরিয়ে যায় দিনগুলো তবু বেঁচে থাকি
হাতের ভিতরে হাত, মুখোমুখি এভাবেই এসো বসে থাকি
যেভাবে নদীটি নীচে, আর
আমাদের দু’হাতের সেতু থেকে যাবে
অশেষ নদীস্রোতের চেয়ে থাকা আমাদের পরিশ্রান্ত করে
ঘন্টা বাজিয়ে দিনের শেষ ঘোষণা করুক রাত
আমাকে পেরিয়ে যায় দিনগুলো তবু বেঁচে থাকি
ভালোবাসা চলে যায় যেভাবে নদীর জল সমুদ্রের দিকে
সব ভালোবাসা চলে যায়
কী ভীষণ ধীর মনে হয় এ জীবন
কত হিংস্র হতে পারে প্রেমের প্রত্যাশা
ঘন্টা বাজিয়ে দিনের শেষ ঘোষণা করুক রাত
আমাকে পেরিয়ে যায় দিনগুলো তবু বেঁচে থাকি
দিন যায় সপ্তাহেরা যায়
বিগত সময় কিংবা
ভালোবাসা ফেরে না কখনও
মিরাবো সেতুর নীচে বয়ে যায় সেন
ঘন্টা বাজিয়ে দিনের শেষ ঘোষণা করুক রাত
আমাকে পেরিয়ে যায় দিনগুলো তবু বেঁচে থাকি
নারীটির পোশাক ছিল
টার্কিশ কাপড়ে তৈরি
আর তাঁর সোনালি বর্ডার দেওয়া ছোটো কোট
প্রস্তুত হয়েছে দুটি রঙে
যারা মিশেছিল তাঁর কাঁধে
তাঁর চোখ নাচছিল দেবদূতের মতো
তিনি হেসে যাচ্ছিলেন আর হেসে যাচ্ছিলেন
তাঁর মুখে ছিল ফ্রান্সের রং
নীল চোখ সাদা দাঁত গাঢ় লাল ঠোঁট
তাঁর মুখে ছিল ফ্রান্সের রং
পোশাক গলার বেশ নীচে, গোলাকার
তাঁর কেশসজ্জা ছিল মাদাম রেকামিয়ের মতো
দু’হাত মসৃণ, নগ্ন
আমরা কি শুনব না মধ্যরাতের সুর ?
টার্কিশ কাপড়ে তৈরি নারীর পোশাক
সোনালি বর্ডার দেওয়া কোট
নীচু গলা, গোল
হাঁটা তাঁর আঁকাবাঁকা চালে
সোনালি ফিতের সঙ্গে ছিল
ছোটো জুতো বকলস বাঁধা
এতই সুন্দরী তিনি
তাঁকে ভালোবাসা জানানোর সাহস হবে না
শহরের জঘন্য অঞ্চলে
অনেক অসহ্য মেয়ে ভালোবেসে
দেখেছি সেখানে নিত্য নতুন প্রাণীর জন্ম হয়
তাদের লোহার রক্ত, মস্তিষ্ক আগুন
আমি তো ভালোবেসেছি সেসব মানুষ যারা ধূর্ত
মেশিনের মতো
বিলাস ও সৌন্দর্য উপরিতলের গাদ
নারীটি সুন্দরী এত
আমাকে ভীতসন্ত্রস্ত করে
বিশ শতকের শুরুতে শুধু কবিতায় নয়, সাহিত্যতত্ত্বের ক্ষেত্রেও আপলিনের (১৮৮০-১৯১৮)-এর চিন্তাভাবনার নতুনত্ব যুগের সূচনা করেছিল। কিউবিজম ও সুররিয়ালিজম-এর সঙ্গে তাঁর নাম উচ্চারিত। তাঁর জন্ম রোমে, প্যারিসে আসেন বিশ বছর বয়সে। কবিতায় পরীক্ষাধর্মিতা তাঁর বৈশিষ্ট্য। সে সময়ের শিল্পী ও কবিদের সঙ্গে তাঁর তুমুল বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ১৯১৪ তে ফরাসি নাগরিক হওয়ামাত্র তাঁকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পাঠানো হয়। ১৯১৭ সালে মাথায় বোমার টুকরোর আঘাত পান। এই শারীরিক আঘাত আর কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। মাত্র ৩৮ বছর বয়সের জীবন। যুদ্ধে তাঁর অভিজ্ঞতা প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর কবিতায়। প্রেমের কবিতাতেও তিনি সমানভাবে উজ্জ্বল। বেঁচে তাঁর প্রধান কাব্যগ্রন্থ—‘আলকুল’ (১৯১৩), ‘কালিগ্রাম’ (১৯১৮)। মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে ‘পোয়েম আ লু’ (১৯৪৭)।