গু চ্ছ ক বি তা
একটা অধ্যায় শেষ হল। এবার শূন্যস্থান।
এই জায়গাটা কী লিখে ভরাবো ভেবে পাচ্ছি না
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আসছে সময়। প্যারাগ্রাফে ঋতু যেমন হয়।
অন্য আমির ভিতরে গাইছে ভুলো মন
তুষার ঝরছে দাওয়ায়। ভাবঘন অঘ্রাণ।
দেখি, বার্ষিক আনন্দে তাকে দেখি। তুষার গলে
এখানেই জন্ম নেবে বিস্মৃতনদী। কাব্যের আর্ত ভাষায়—
শক্ত মুঠোয় কী এমন শক্ত করে রাখতে চায় নিক্তি?
যা থাকার নয় তা- ছিল না কোনোদিন
যা রয়ে গেল তা- হয়নি অন্য কারোর, কোনোদিন
এমন সরলরেখা দু’খানি আত্মগত বুঝতে পারেনি
বিপুল পৃথিবীময় পাথুরে বুক তাই, নক্ষত্রে সাজানো
তার নীল দ্যুতির উপভোগ-জটিলতা-জট না বুঝে
মুহূর্তে মুহূর্ত ছেড়ে যায় তাঁবুর তৌল মনোলোক
পড়ে থাকে, স্বতোৎসারিত শ্বেতকায় বরফের জমাট অধিকার!
পড়ে থাকে, গ্যারেজ-ঘরে রাখা রাতের দ্বিবিধ সময়, হতকায়
হাড় ছুঁলে বোঝা যায় তার ত্বক কতটা সাজানো, যন্ত্রণাময়…
চাটুজ্জে স্ট্রিটের প্রথম মোড়ে ধোঁয়াটে ধোঁয়াটে এক সকাল
কবিতার সরু রেখা পার করে, ধরে-আসা বৃষ্টির সোঁদা গন্ধ মেখে
দেখা হল উনিশ বছর বাদে’র সঙ্গে
অভ্রান্ত, কতকিছু আছে আর, কতকিছু না-থাকার নিরক্ষবৃত্তে
টালমাটাল দুলছে ধ্যানের যুগান্তর, ভ্রুক্ষেপ নেই, তামাম আশপাশের
ফালা ফালা হচ্ছে দৃষ্টি, ক্ষোভ চরাচরে
সাইক্লোনিক দূরপাল্লা কাঁপছে ঠোঁটে
ধাবমান গর্জমান অতীতক্ষণ…
তাইই বোধহয় হবার কথা
অণুচক্রিকার সামান্য অসামান্য টপকে
নোটবুক নোটস বইয়ের ভাঁজে পুজোর ফুল
কীভাবে ফিরে আসে! স্থির ফ্রেমের গা বেয়ে?
সংক্রমের মতো নেশাস্রোতের মতো
এগোচ্ছে, ‘না-এগোলে ভাল’ এমন একটা সময়
এতকিছু হয়েছিল ক্ষতিগ্রস্ত ভবিতব্যতায়
এভাবে বাউলের দুঃখ সফল গৃহী টের পায়
মস্ত এক রাজহাঁসের ধবধবে সাদা
আলো-পিছলানো দুপুর গড়িয়ে আসে
নৈঃশব্দ পাশ ফিরছে দিকে দিকে
খুব ধীর শব্দহীন এরকম হয়েছে দু’দিন
ম্যাজেন্টা তসর ছুঁয়েছিল মরমী বাতাস
কানাগলি জুড়ে আলুথালু গা
ঠোঁটে হালকা রঙ, চিবুকে দুঃখের সমস্ত
ডুবো-ডুবো দিনের টেরাকোটা ড্রিমস আঁকা
সাঁওতালের কুটির, কন্ট্যুরে অহরহ মেঘ-বৃষ্টি
এসবের পুলক পালক ছুঁয়ে ধ্বংস বোঝে
শুধু দু’দিনের জন্য ঘর করতে এসেছিল,
মেঘ-বৃষ্টি-ঝড়-জল আর এতটা সর্বনাশ
অতি সামান্য ছিল এ-আঁচলের অবকাশ
খুব ধীর শব্দহীন এরকম হয়েছিল দু’দিন..
ইদানীং হরীতকী ডালের শূন্য পাখিবুক জানে
না-থাকার যাদুছাপে… অন্তহীনতা কীভাবে
স্তব্ধতার বুকে মিশে যায়…
স্মৃতিপক্ষ শেষ। দীর্ঘকবিতার অবসান।
বিকেল তারই মনে উদাস হয়। সহ্যের মতন।
আছে পিঠে খোদাই করা ঋণ। তার মধ্যিখানে শব্দ,
একে একে ভাবলেশহীন।
তুমির থেকে তুমি বেরিয়ে গাঢ় ছোপ
শীতের শহরে এল সমাপ্তি’র বায়োস্কোপ
স্মৃতি তার পক্ষের কাছে আজও মুছে যাবার
যাও, যেদিকে স্মৃতি বিস্মৃত হয় চলে যাও
সেদিকে ম্যাপেলবন নুয়ে আছে অবেলায়
এরই মাঝে শরীরপাত হলে,
আছে ভরা কৌটোয়… আর হয়তো দু’একটি প্রশ্রয়