বাং লা দে শে র ক বি তা
মাননীয়,
রোজ আপনি শুনতে চেয়েছেন
পদ্যের প্রথম পাঠ এবং
বিমর্ষ হয়ে ফিরে গিয়েছিলেন,
প্রতিশোধে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন
ভূমধ্যসাগরের ঢেউ,
আমি হেসেই গোপন করেছি তীব্রতা
আর মগ্ন বটের এলোচুলে
বাতাসের গান শুনবার ইচ্ছে গেঁথেছি প্রতিবার।
জেনে রাখুন,
সবাই এগিয়ে গেলে আমি ঠিক সরে থাকি
অন্যকে জায়গা ছেড়ে দিতে হয় বলে।
মাছেরা মৃত হলেও কেন চোখ খুলে রাখে
এ সত্য আমি আজ জানি, জানি কেন
আপনি বিন্দু বলে উপহাস করেন আপন সত্তাকে।
মাননীয়,
এই যান্ত্রিক যুগে গোপন আর্তনাদের দাম নেই ,
সবাই নগদে ঝুলি ভরে, ফিরে দেখে না,
লালন করে না, আমি বড্ড সেকেলে, শুধু ফিরে দেখি
লালন করি, আগুনের জন্ম দেই,
আবার আগ্নেয়গিরির প্রতিপক্ষ হয়ে মানুষ বাঁচাই।
আমার পোড়া কয়লার টুকরো খুঁটে
অবলা বাতাস বলে ভালোবাসি,
কেন ভালোবেসেও বলতে পারি না আজও ভালোবাসি।
আপনি কি জানেন
ঘুম কেন স্বপ্ন বুঝে, আগুন বুঝেনা?
কেন আমি লিখতে গিয়ে শিউরে উঠি?
চোখের জলের তীক্ষ্ণ ধারার নদীটাকে
কবে, কখন, কোথায় হারালাম,
ট্রেনের মধ্যেও যাত্রীবিহীন একা হলাম,
কোন পাষাণের জন্য পাঁজর ঠেলে বর্ষা নামালাম?
মাননীয়,
আপনি আমাকে জানতে চেয়েছেন,
কিন্তু কত কথা থাকে জানা যায় না,
জানতেও হয় না।
শুধু এটুকু বলি পরিশেষে আমাকে চিনে নেবেন
যখন কবিতা হয়ে যাই।
জানিস কাল যখন আমি মরতে গিয়েছিলাম,
তুই এসে সামনে দাঁড়ালি, ঘোলা চোখ না ঘুরিয়ে বললি-
দৃশ্যত মৃত্যু একা হলেও একা নয়, অন্য সত্তাকে মেরে ফেলে,
কেউ সেই আপন মৃত্যুর খবর জানে না।
তুই কেমন বদলে গেছিস, আমি তোকে দেখে হতবাক।
তোর জলের টিসু ডাস্টবিনে ঘুমোচ্ছিল,
তাদের শরীরে সংসারের উচ্ছিষ্ট আর
পতঙ্গের বিষ্ঠা দখল করে নিল, জামায় শুকিয়ে ছিল যেটুকু-
তার যত্ন করি আজও। যে কথা জানিসনি তুই;
সে কথা জানবি না মিলা। জানবি না কোনদিন।
একটা হাত এসে কপাল ছুঁতেই উপলব্ধি হলো-
নিঃসঙ্গতার চেয়ে সঙ্গ জরুরি।
ঠোঁট কপালে নেমে এলে বুঝলাম –
কেন মানুষ ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা করে।
নিস্তরঙ্গ শরীর বেয়ে তরঙ্গ উঠেছিল যেদিন-
সেদিন প্রথম খুন হয়ে ঘরে ফিরে ছুঁইনি রাত ।
অথচ পুরোটা রাত আমার পাশেই ছিল,
ধ্যানে ও ধৈর্যে আড়ষ্ট অনড়।
একথা বলতে আজ দ্বিধা নেই –
তেল, নুন, উনুনে,
আড্ডায় আমাদের থাকা ভীষণ জরুরি জেনেও-
থাকা হয়নি যখন; আমি ভেঙেছি;
খুব ভেঙেছি।
তোর পাশে দাঁড়িয়েছেন কল্যাণদা।
বৃষ্টি কোলে ভাঙনের শব্দ
লালন করতে করতে সেই প্রথম খুন হয়েছি।
এক জীবনে কতবার খুন হলে জীবন আর চায় না জীবন?
তখন শুধু ওপারের টান; জানিস?
জানি, তোর ভেতর সিগারেটের ইচ্ছেটা মরে গেছে,
কামে, ক্রোধে তুই ভীষণ শান্ত এখন,
বসন্তে হলুদ আর লাল রঙে রঙিন হবার ইচ্ছেও নেই,
মানিয়ে নেয়া স্বাধীনতাকে হত্যা করে,
এটুকু উপলব্ধি করা আর হবে না তোর।
রমণী হয়ে ওঠার আগে- এঁকে ছিলি একটা গণ্ডি।
যেখানে গণতন্ত্র ছিল না। তুই কবে গণতান্ত্রিক হবি?
কবে হবি রমণী থেকে রণবীর? কবে হবি?
ভালোবাসা রূপে অরূপে এই ফড়িংজীবনে
এতো বার বদলে যায় কেন রে ?
কেন বারংবার খুন হতে হয়; বলতে পারিস?