ক বি তা
পাহাড়-পর্বতদের সামনে।
বললাম,
‘তুমিও যা, আমিও তা— অতর্কিত গর্ভ থেকে চমকপ্রদ আসা
আমার বাবা-মা, আমার উৎস-রা
তারও আগে
কলকাতা শহর, পলাশী আধাশহর, গোপীনাথপুর গ্রাম
তারও আগে
সতেরোশো সালের আমগাছের সামনে
স্তিমিত আলোর নিচে দাঁড়িয়ে একটা আম খেয়েছিলাম।’
পাহাড়-পর্বতগুলো আমার থেকে সিনিয়র,
ওরা কিছু বলেনি।
জীবনে পর্বতই সব নয়,
আমি নেমে এলাম।
ফেরত্-গাড়িতে বসে।
ছেলেমেয়ের দল— একা দল বিক্ষিপ্ত— স্কুলে যাচ্ছে
দেখলাম— চকিতে ও অনেকক্ষণ
গাড়ির থেকেও জোরে ওরা মিলিয়ে গেল
মাথার মধ্যে মাঝেমাঝে সব মিলিয়ে যায়।
বুঝতে পারি না, অসহ্য লাগে।
এখানে লোকগুলো মাথায় টুপি পরে।
রোদ জল ঠাণ্ডার বাইরের টুপি, ছোটবেলার টুপি,
সবাই পরে, ছেলেবেলা থেকে সেরকমই দেখে আসছে।
আমি জানি, এদের সম্ভ্রান্ত একজন আত্মহত্যা করেছিল,
টুপি দিয়ে তার সম্মানকে আহত করা হয়েছিল তাই।
একবার একটা মেয়েকে (শরীর যার মেয়ের মত) বলেছিলাম,
– আমি একটা ছেলে। তুমি একটা মেয়ে।
সুতরাং আমি তোমার প্রেমে পড়েছি।
– আমি একটা মেয়ে। তুমি একটা ছেলে।
সুতরাং আমি তোমার প্রেমে নাও পড়তে পারি।
– ঠিক কথা। গরমকালে আমার স্যান্ডো গেঞ্জির পেছনে শিরদাঁড়া বেয়ে ঘাম চুঁইয়ে যায়।
– আমি রোজ প্যান্টি কাচি না।
আমি খুব কথা বলি
কারণ আমার বলার কিছু নেই
হারিয়ে যাওয়া খেই ধরতে ধরতে দেখি
আমি সকালে দাঁত মাজছি।
আমার দাঁত— আমার— আমার দাঁতগুলোর
উপর নিচ এপাশ ওপাশ সবপাশ
ব্রাশ মাজন মিলে একাকার করছে।
ধরা যাক, আমি বসে আছি
বা দাঁড়িয়ে আছি
বা শুয়ে আছি
বা এইসব থাকার গলি-ঘুঁজিতে রয়ে আছি—
কখনও শিকড় চারিয়ে যায়,
কখনও রাতে কয়েকটা বা অনেক তারার নিচে থেকে
আকাশ দেখি,
কখনও দরকারী মৃত্যু আমার সামনে দাঁড়ায়
চোখ টেপে
আমি কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থাকি
আর কিছু নয়।
এই যেতে যেতে বলছি,
জীবন আমলকীর মতো
কারণ তা জামরুলের মতো নয়
গাড়ি
গন্তব্যের কাছাকাছি।
আর কি।
আমি কথা বলি।
আমার বলার কিছু নেই।