গু চ্ছ ক বি তা
কীভাবে আঁকড়ে ধরব জানি না,
সব ভুলে জড়িয়ে ধরব? অধিকার নেই।
বুকের ব্যথায় কাতর সে ভোর মনকেমন
দীর্ঘ যাত্রাপথ পেরিয়ে
উপোস কণ্ঠে ছুটে আসি আমি
বিকেলের অলসতা আর ক্লান্তিভরা
মুখখানি ধুয়ে এসে বসি
তোমার বারান্দায়
আধোঘুম সেই চোখ, আলোকিত, অনুচ্চারিত
মাথার ভিতর শ্বাসরুদ্ধ ঝড় ওঠে
স্মৃতির প্রবাহ, কতো কথা বলতে ইচ্ছে করে,
পারি না।
গলার কালো তিলের উপর মনে মনে ঠোঁট রাখি
হাতের উপর হাত চেপে ধরে বলে উঠি —
‘আমাকে ফিরিয়ে দাও সেই পথ
পাশাপাশি দু’জন সাইকেলে হারিয়ে যায়
লিপিকানগর, নির্জন’
চোখ থেকে নেমে আসে একটি স্বচ্ছ ঘুমের দেশ
তুমি আনমনে হেঁটে যাও, বিদায় বন্ধু!
চশমার ভাঙা কাচের টুকরোগুলি মুঠো ভরে তুলে নিয়ে
ফিরে আসি একা,
চোখের ভিতর অশ্রুনদ, মরে পড়ে থাকে।
অতঃপর ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই
শেষ নৌকো ভেসে গেছে কবেই।
বৈঠাখানি ফেলে গেছে, আর দুঃখ নাগাল
সংশয় জাগে, অবিরাম বৃষ্টি —
লাফিয়ে ওঠে রুপোলি মাছ,
তোলপাড় জলের আয়নার সামনে তুমি বসো
নদীটির পাড়ে, সলজ্জ, কেঁপে ওঠে ওষ্ঠ-অধর,
ঈষৎ ঝুঁকে থাকে স্মৃতির পাতা
কারা যেন ছায়া ফেলে রেখে চলে গেছে
এমন নিঝুম, জ্যোৎস্নার বিরহে
সব ভুলে, ঘুমের অতলে দু’হাত মেলে দাঁড়িয়ে থাকে
ছিন্নবস্ত্র পরিহিত একটি ধূসর জীবন
নিরুপম মাঝি পান করে অনন্ত অন্ধকার।
অভিপ্রায় ছিল সারল্যের আভায়
ঘুচে যাবে সব টানাপোড়েন
এই দেহ, আত্মপরিচয়, মঞ্চ ছেড়ে দেবে,
বিবিধ আগুন ছুঁয়ে হবে স্বর্ণ উন্মোচন।
আতর ও কর্পূরে আমি স্বতঃসিদ্ধ
জানু পেতে অপেক্ষা করে পরজন্ম
‘জন্মান্তর’— প্রিয় কোনও দর্শন নয়,
সুস্থির মাতৃগর্ভ, শুভ্র আত্মার বিবর্তন
মৃত্যুর পর, স্নান শেষে, মাটির সান্নিধ্য
আহা, সঞ্জীবিত অবসর!
যা কিছু নির্লিপ্ত অনুষঙ্গ ছিল এই মৌনতায়,
তিন মুঠো মাটির বিনিময়ে মিটিয়ে দিও।
প্রতিদিন দু’টি ভিন্ন রকম ভিতরমানুষ
মুখোমুখি বসে, কথা বলে, কান্না ভাগ করে নেয়
এমনই এক উদাস দিনের শেষে
গল্পগুজবের ফাঁকে ছুঁয়ে ফেলে
গতজন্মের কাছে হারিয়ে যাওয়া একটি আয়না
অপার ঔৎসুক্যে সে আয়নায় মুখ রেখে দেখে
কল্পনার সীমা ছাড়িয়ে ভেসে আছে একটি নিঝুম মফসসল
যেখানে বসন্তের টাটকা সুবাস লেগে আছে এখনও
ভিতরমানুষ ধীরে ধীরে, ভেজা আলপথ বেয়ে
আমের মুকুলের ঝাঁক ও জুলকা নদী পেরিয়ে
পৌঁছে যায় ধ্যানমগ্ন শ্মশানের কাছে
দেখে, ধোঁয়ার আবর্তে আগুনের ভিতর
দু’টি ভিন্ন মানুষ, মুখোমুখি পুড়ে চলেছে আর
ভিতরমানুষ দু’টি সে দৃশ্যের অন্তরালে লিখে রাখছে দগ্ধজীবনস্বর।
রাতজাগা পাখিদের ডানায় তোমাকে খুঁজে পাই
গাছের পাতার মনখারাপে নক্ষত্র সাজায়
আমি বেঁচে থাকি পথের ভিড়ে
সোনালি ধানের বৃন্তে
অন্ধ ভিক্ষুর ঝুলিতে বাঁচা আগুনে
ভোরের আলোর মতো ছড়িয়ে পড়ি আজও
মুখ ফিরিয়ে নেওয়া সমস্ত সম্ভাবনায়
আজন্ম মুকুটহীন আমি
পরাজয়কে শিল্পী ভাবি, তোমার ঠোঁটকে ক্ষুধা…