শারদ অর্ঘ্য ১৪২৮ । কবিতা
ভোরবেলা বেরোতেই দেখি সূর্য ওঠার আগে
পুনরায় অন্ধকার এসেছে। নির্বাক হয়ে আছে
সমস্ত গাছ। নির্বাক রেলপথ। পাখিদের সকল
চিহ্নের ভাষা ধূসর। মনে হচ্ছে রক্তপাতের দিন
এগিয়ে আসছে দ্রুত। স্যার এসে জানিয়ে দেন,
সবাই যেন শান্তিপূর্ণ থাকি। কেউ যেন প্রতিক্রিয়া না
জানাই। কোনো প্রতিবাদী পোস্টার না লিখি।
স্যার ব’লে গেছেন, ঘরে বসে গল্প লেখো,
কবিতা লেখো, ছবি আঁকো। সূর্য ওঠার পরিবর্তে
অন্ধকার এসেছে কেন পরীক্ষা কোরো না। আমরা
স্যারের কথায় মান্যতা দিয়ে দুধ খেয়েছি, সেন্ট
মেখেছি, পিকনিক করতে রওনা দিয়েছি চাঁদে।
চাঁদে পৌঁছোন’র আগে নিজেদের নাম উজ্জ্বল
অক্ষরে রাস্তার পাথরে খোদাই করতে গিয়ে দেখি
সেখানে আরো অন্ধকার। সেখানে সকাল বলতে
কিছু নেই। অন্ধকার তাড়া করছে আমাদের।
পলাতক নামে চিহ্নিত হয়েছি আমরা। স্যারের কথা
শুনেছি ব’লে, অন্য কেউ সম্মান জানায়নি, কেবল
শাসকেরা সম্মান জানিয়েছে আমাদের…
হাঙরেরা সাঁতরে বেড়ায় চাঁদুর চায়ের দোকানে।
চা খেয়ে হাঙরেরা যদি সামুদ্রিক বিভূতি শোনায়,
যদি ভাগ্য পরিবর্তনের ঐন্দ্রজালিক কিছু লেখে,
সন্দেহের কিছু থাকে না। হাঙরেরা যদি শোনায়
সর্ব মনস্কামনাপূর্ণ ঐকান্তিক ঋতু, ক্রমবিকশিত
ঘুড়ির কথাশিল্প, তাহলে দিনদরিদ্রের উদ্বেগসকল
হয়তো কিছুটা হালকা হবে। যদি রেডিয়োর গানের
অন্তরাল থেকে বার করে আনে আলোকসামান্য
উল্লাস, সাধুবাদ অবশ্যই সাধুবাদ দেবো।
চা পানের পর গান হোক আর নাচুক হাঙরেরা।
ভেসে যাক শূন্যে চাঁদুর কালোকালো স্মৃতির প্রবাহ।
কিন্তু হাঙরেরা তো চা খায় না। হাঙরেরা
তাকায় চাঁদুর সামান্য ফসলের জমির দিকে।
তাকায় অভূতপূর্ব ভবিষ্যত জীবনের দিকে।
হাঙরেরা চা নয়, চাঁদুর নিজস্ব চাঁদটিকে চাইছে।
যেন দোকানটি আদ্যোপান্ত ঘুমিয়ে পড়ে ধূসরে…