শারদ অর্ঘ্য ১৪২৮ । কবিতা
৪
অস্ত্রোপচারের রাত; এসেছে এগিয়ে। দৃষ্টিহীন
কবুতরের স্পন্দনে, ভাসে দুই অশ্রুপোড়া চোখ।
আগ্নেয় সুতপযান বাষ্পময় চক্রবালে লীন,
শয্যা-ভস্মে মনোরথ, সীমাহীন উদগ্র পালক…
কতদূর, উড়ানপৃথিবী? ভেদ্য? এই কানাই-পিঞ্জর?
প্রশ্নাতীত অতন্দ্রিলা জুড়ে থাকা জিগীষাবিভাস,
নিমগ্ন প্রহার হানে অনর্গল অদৃষ্টে। নিথর
শিশ-মহলের গায়ে, চন্দ্রাহত বিষাদী আকাশ…
ঋক্ষদল সমারূঢ়। শাপভ্রষ্ট খোয়াবের ক্ষেত
(চাষাবাদ ভুলে যেন) দীর্ঘ ধিকিধিকি ক্ষুধাপট,
মোচনের লগ্নশ্বাস; বয়ে আসে ওই, অনিকেত।
সোনালী ছুরিকা? নাকি লাঙলের আসন্ন প্রকট?
করোটি-খিড়কি ভাঙে। ভেঙে যায় নৃসিংহদুয়ার
কবুতর চেনে পথ। আয়ুধের অংশু-উপচার…
৫
লৌহাঘাত পরাভূত। প্রতিটি অরণ্যযোনি থেকে
তরল প্রস্থান বেয়ে পিছু হটে ধাতব দখল;
বোধিবৃক্ষে পুষ্পাহুতি, জয়োল্লাসে বজ্রবীজ রেখে,
উন্মন আশ্লেষে বাজে সৈন্যমুখ শিরীষজঙ্গল…
হর্ষ ওড়ে। বাড়ে ওম, মর্মরের সুচারু দামামা।
দেবোত্তম লক্ষ্যভেদে বৈরীদাগ নিমেষে উজাড়,
তথাগত বল্কলের ক্ষতদ্বারে সৃষ্টিজপনামা
ফুটে ওঠে অবিকল, কুহুদ্যুতি তুরীয় শৃঙ্গার…
খরোষ্ঠে নেমে আসে সোমলব্ধ পূরবী-স্বীকৃতি,
অতলান্তে ফিরে যায় মৃগয়ার সমূহ নিশান।
(কুঠারের অশ্রু-হৃদে) কোরকের অমোঘ প্রতীতি
সহজ প্রসবে আঁকে রশ্মি রশ্মি শ্যাম শুচিপ্রাণ…
অন্তিম নিশীথ মিশে নতজানু লৌহপ্রতিভায়
শোণিত-ইস্পাত গড়ে, স্বরগের কামারশালায়…