শারদ অর্ঘ্য ১৪২৮ । কবিতা
একজন নগ্ন মানুষ
সভ্যতার পতাকা হাতে
শহরের মাঝখানে রাজ মূর্তির কাঁধে চরে বসলো
তারপর যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শূন্যতা
সেদিকেই হাসছে নগ্নতার সাম্রাজ্য
সেদিকেই জ্বলছে নগ্নতার চিতাকাঠ
চারিদিকে ভিড় জমে গেল
ভীত-সন্ত্রস্ত মানুষগুলো লজ্জায় চিৎকার করে উঠলো
নিচে নামো – নিচে নামো
রাজা জানলে গর্দান যাবে
কিন্তু উত্তরহীন সময়
নগ্নতার পতাকা আরও উপরে তুলে ধরলো
এতদিন পাখিরা রাজার কাঁধে বসতো
এতদিন পাখিরাই রাজাকে গান শোনাত
এতদিন রাজার হাতেই ছিল রাজধর্ম
এখন এই হঠাৎ একটা সকালে
সব কিছুই পাল্টে গেল
রাজার কাঁধে বসেই মানুষটা সবাইকে শেখাতে লাগলো
নগ্ন সভ্যতার সংজ্ঞা
বেঁচে থাকার ছুমন্তর
নিচে ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকলো
সর্বনাশের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে
সবাই যখন এটাকেই ভবিতব্য ভাবছে
তখনই অনেকে লোকটাকে চিনে ফেললো
ভয়ে নিষ্পাপ চোখগুলো বিস্ফোরিত
ফিস ফিস শব্দটাও নিস্তেজ হয়ে পড়লো
সাহস করে এগিয়ে এসে কেউই বললো না
নগ্ন মানুষটাই দেশের রাজা
এপারে সমুদ্র- ওপারে সমুদ্র
মাঝখানে শূন্যতার গৃহস্থালী
দুঃখের জলীয় বাস্প নীল থেকে আবছা ঘোলাটে
যারা ভালোবাসার খোঁজে এসেছিল
তারাও পাথরের বুকে পা ডুবিয়ে বসে
গান গাইছে শোকের!
সমুদ্রের জল নোনতা – চোখের জল ও নোনতা
কে জানে কার শোক কার সাথে মেশে!
দিকে দিকে বিপদ সংকেত
হাওয়া বইছে
নিম্নচাপ বাসা বাঁধছে চেতনায়
স্বপ্নের রং ফিকে হতে হতে ‘পাণ্ডুর’
দুঃখের নোনতা ঢেউয়ে হারিয়ে যাচ্ছে
ভোরের সূর্যদ্বয়!