শারদ অর্ঘ্য ১৪২৮ । কবিতা
১
রুগ্ন শালিখেরা বুনেছে বসতি বিবর্ণ হলুদ মৃত ঘাস
মিশন টিউবরকুলোসিস আহত সে রক্ত-ফুলের নিশ্বাস —
পেঁজা-তুলা নাকি এই রোদ্দুরেই উড়ে দূর দেশে ফিরে যাবে
ধুনকারির সাইকেল পাখি-ধরা ফাঁদ যন্ত্রপাতি ছিঁড়ে খাবে
শীতের দুপুর মাঠে নিকটের কাছে শালিখেরা নেমে আসে
ঘরের দুয়ার পড়ে বরাবর অবহেলায় ট্রমা ফুটে আছে
২
বিকেলের জংশন গেট সিগন্যাল খুলে ছিঁড়ে গেল রোদের রেলিং
ধুলোমাখা মানুষেরা হাঁটে, কথা বলে, অভিমানে ভাত খায় না অর্থহীন
৩
দরদাম করে সে কিনেছে হাট থেকে দুই খানি
স্ত্রীকুক্কুট— ডিম দেয় দু’দিন অন্তর ডাক্তার লিখেছে পথ্য —
মিশন টিউবরকুলোসিস উল্টোপাল্টা হাওয়া দিচ্ছে
ভোর থেকে ওষুধের দোকান গুলোতে শ্যাওলামাখা
ছত্রাকের ভিড়, কুয়াশাবুড়িরা আনারস-বন
পার করে ডুয়ার্স পাহাড়ে ঝুপি গাছে মেঘে
আস্তানা ফেলেছে— আজকাল ভাল ঘুম
হয় না কিছুতে— খড়িওঠা সব চায়ের দোকান
বেশি রাত পর্যন্ত একটানা হাতরুটি বেলে গেছে আর
লম্বাটে করেছে ছায়া আগুনের আঁচ— হাই ওঠে
বিড়াল কেটেছে গায়ে আঁচড়ের দাগ, চক্ষু লাল
আর একরকম ঘুসঘুসে জ্বর-সর্দি-কাশি-হাঁচি
লেগেই রয়েছে, বুড়া ধনিরাম টোটো ঘুম থেকে উঠে
ভীত হতবাক— নাসারন্ধ্র দিয়ে রক্ত তালুতে গড়াচ্ছে
ওষুধের কতো দাম— প্রেসক্রিপশনে লিখে দিও
কখন কোনটা খেতে হবে, আজকাল চোখেও তো কম দেখি— ছাই
৪
শূন্য টিলা পড়ে আছে জ্বলে ওঠে মিনে করা চাঁদ
মানসিক হাসপাতালের বারান্দারা আর্তনাদ
করে ওঠে— বন্যফুল নেশাগন্ধ দূরে কুয়াশায়
রেললাইন পার হয় সেতু— ভবে কীসের আশায়
নখের দাগের নীচে পরিত্যক্ত মরে গেছে কবে
পুরোনো টিকিট-ঘর— লোকালয় মৃতের স্বভাবে,
ভাঙা বোতামের ঘর ফুটো-করা কেউ নেই আজ
বাংলোর লাল রাস্তায় শ্বাস ফেলে ডুবন্ত জাহাজ