শারদ অর্ঘ্য ১৪২৮ । কবিতা
এক জ্যোৎস্নাস্নাত রাতে শহরের শেষ বাঁশিওয়ালাও উঠে পড়বে ট্রেনে। টিকিট ও গন্তব্য কিছুই নেই ওঁর কাছে। বাঁশিওয়ালারা এমনটাই হয়। সবখানেই তাঁর ঘরবাড়ি। একবার যদি অক্টেভ পোষ মানে, এই ভুবনগ্রামে থাকার জায়গার অভাব হয় না।
গোটা হ্যামলিন ইঁদুরে ভরে গেছে। এই ইঁদুরদের কোনও শ্রবণযন্ত্র নেই, অনুশাসন নেই। হাওয়া ও মাটি থেকে ফুল এবং সহবৎ সব কিছু খেয়ে ফেলতে পারে এই নতুন প্রজাতির ইঁদুরেরা। মাটির গভীর থেকে সুড়ঙ্গ বানিয়ে, আকাশের অনেক ওপর থেকে ওজোন স্তর ভেদ করে একটা আস্ত হ্যামলিনকে গ্রহণের মুখোমুখি এনে ফেলেছে এরা। এই গ্রহণকালে কিছুই মালুম হচ্ছে না। এক অদ্ভুত ডায়মন্ড রিং-এর বিচ্ছুরণে হ্যালুসিনেট করে আছে তামাম হ্যামলিন। সচল এটিএম, কষা মাংস-বাসমতী চাল-গন্ধরাজ লেবু, পানপাতা মুখ বেশ্যা, মুখর কবি, ঝানু দোকানদার, রাঙা কনে বউ, সিক্স প্যাক দুলহা। মালাবদল হবে গো, এই কালরাতে সব অদলবদল হয়ে যাবে। ব্যাপক সোয়াপিং।
একা বাঁশিওয়ালা, বোকা বাঁশিওয়ালা এই হীরক-দ্যুতি উপেক্ষা করে কোন অজানা স্টেশনে চলে গেল! সব জ্যোৎস্না রাতই শেষ হয় একসময়। গ্রহণে এঁটো হয়ে থাকা শহর থেকে হারিয়ে যায় সাদা টগর, অনেক পাখি এবং একজন বাঁশিওয়ালা।
হ্যামলিন শহর থেকে একটু দূরে, এক বিষণ্ণ লাইব্রেরিয়ান আবিষ্কার করলেন, মূক ও বধির পাঠকদের ফেলে রেখে ধ্রুপদী শব্দমালাও কোথায় যেন উড়ে গেছে।