Hello Testing

4th Year | 3rd Issue | June-July

৩০শে আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 16th July, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

শারদ অর্ঘ্য ১৪২৮ ।  কবিতা

সু ভা ন

মাত্র চারফর্মায় জীবন কাটিয়ে দেওয়ার আশ্চর্য স্বপ্ন দেখতাম

 আজকাল আমাদের মাঝে আর কবিতার কলহ বাঁধেনা

মেঠো ঘরবাড়ি নিয়ে আর খেলাও হয় না পুতুলে মানুষে।

কথা হয়না তরুণ কবির শেষতম কবিতার পুস্তিকা নিয়ে,

কথা হয়না জীবনানন্দের মৃত্যুচেতনা নিয়ে, ভাস্করের ঘুম নিয়ে…

কথা হয় না সুভাষের উষসীকে নিয়ে, উষসীর কবিকে নিয়ে।

কবির বকুলমালাকে নিয়েও কথাই হয়না। সুভাষের কথা

হয় না। কথা হয় না। আর ব্যথাও হয় না। ব্যথা ক্ষয়ও না।

 

আমরা তো গাছ হতে চেয়েছিলাম অরণ্যসুন্দর পরিবেশে,

গাছের শেকড় হতে চেয়েছিলাম তোমার মাটির এলোচুলে।

পাখিভাঙা বাসায় আশ্রয় হতে চেয়েছিলাম কালিকাপুরের শিমুল গাছে।

উপরের ডালপালায় ফুল এলো নাকি পাতা ঝরে ঝরে গেল,

এই আশঙ্কায় শীতও ফুরিয়ে এলো বাতাস থেকে, নিশ্চুপ-শীতল

আমাদের গ্রামীণ ইচ্ছেগুলো ঘর হতে হতে খড়ের পুতুল হল,

পুড়ে কাঠ হল, ছাই নিয়ে এর বেশি কেউ লোকগাথা লেখে?

 

দূরে কেউ একজন আগুন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মরা মাঠে

একটা ধানিজমি যার আলপথ ধরে সোহাগীবউ হেঁটে যায়

আর কৃষ্ণাঙ্গ কিষাণ সেজে আমিও কেমন জলকাদামাটি।

আমরা ফসল ফলাবো ভেবেছিলাম, বীজ রাখার কথা ছিল

মাঠের কাছে সন্ধে জমিয়ে রাখা আলে এখন কি অন্ধ রাখি?

দেওয়ালের কাছে কাচ ও লন্ঠন আর অর্ধমৃত প্রেমিক বাস্তুসাপ।

দেহের মধ্যে দেহ ও আতরের জল আর জলের ভেতরে গ্রহ-নক্ষত্র।

আমার বাহান্নর ভাষা যেন কাঁটাতারে-তারে ঝুলে আছে মৃত, বোবা হয়ে।

বাছুরটিও মাথা ঝুঁকিয়ে বসে আছে লালচান্দ হাটে, অবিক্রিত।

 

চাঁদের বিরহে একটা কনকচাঁপা ফুল চোখ ফেরায় না চোখে

একটা গোটা রাত কালো আকাশের নিচে শুইয়ে রাখা শোক।

মাত্র চারফর্মায় জীবন কাটিয়ে দেওয়ার আশ্চর্য স্বপ্ন দেখতাম

কিন্তু ঘুম ভাঙতেই কবে যে আমরা দুজনে খুব অন্ধ হলাম…

আর লিখতে পারছি না বলে এই আক্ষেপ আমার নিরালায় কাঁদে

আমি আর বলতে পারছি না মনের কথাগুলো, মন চিৎকার করে।

ঘর শুকিয়ে আসছে ক্রমাগত, জানলা ছোট ও বায়ু ক্ষীণ হয়ে আসছে। 

 

এই মাত্র গাছ ও ছায়া বেরিয়ে গেলেই পারতো জীবনের রোদ থেকে,

কিন্তু একা একা আর কতদূরই বা চলে যাওয়া যায় আমাকে ছেড়ে, বলো…

ভালোবাসি বলতে বলতে একদিন ঠোঁটে মুখে শ্যাওলা হল আমার, পিচ্ছিল

স্যাঁতস্যাঁতে জন্মের কাছে মাঠফাটা জমিনের এই জড়ুল দাগ, কালো হয়ে

আসা আকাশ, ভারী মেঘ, ঘরপোড়া ঘরুর মতো কোথায় ছুটে যাই?

বলার মতো মুখ তো নেই আর, শোনার মতো দু-কান কাটা যার

এই নিঃস্বকবিতারও তেমন কিছুই বলার ভাষা নেই আর,  

ভালোবাসা আছে? ভালোবাসি বলতে-বলতে একদিন

আলো নিভিয়ে বসে পড়লাম মাদুরে, বলে ফেললাম সর্বনাশ!

 

আজ সর্বনাশ ডেকেছি, নিজের কাগজে নিজে জিভ কেটেছি

বহুবার, এই শেষবারের মতন, আর কখনো এই রুক্ষ ঠোঁটে  

বিষ রাখবো না। কথায় যা ভুল ছিল, সব ভেঙে গেছে কাচে…

আরও পড়ুন...