গু চ্ছ ক বি তা
তোমার বিবাহ-তারিখ এগিয়ে আসছে, এই চিন্তা আমাকে নতুন করে ঘুমিয়ে পড়তে শেখায়। যেহেতু ওই একটি বিষয়েই আমার সফলতা আছে৷ শুলেই, ঘুমিয়ে পড়তে পারি। যেমন ঘুমিয়ে পড়তে পেরেছিলাম, আমাদের উৎকন্ঠাময় শেষ বিকেলের আগে, দুপুরে
আমিও দেখাতে চাই, এই একটা বিষয়ে আমার দক্ষতা। অর্জুন, পাখির একটিমাত্র চোখকে কেবল দেখেছিল; আমিও তেমন, ঘুমের মধ্যে কেবলই ঘুমাই। শূন্য। কালো। নিশ্চিত নিশ্চিন্ত। কোনো স্বপ্ন দেখি না। তোমাকেও দেখি না কখনও। গৌরব ভেঙে গেল? বিশ্বাস করো, আমি গৌরবই চেয়েছিলাম। তুমিও হয়তো চেয়েছিলে আমার চরমতম সাফল্য
অগত্যা, তোমার বিবাহ-তারিখ এগিয়ে আসছে। তার আগেই, ঘুমিয়ে পড়তে হবে আমায়…
তুমি তো শুভ্র আঁকড়ে ধরা অনভ্যস্ত আঘাত। অথবা অপমানবোধ। বর্ষাকাল এক্কেবারে পছন্দ করো না। জানলা বন্ধ করে দাও। ঘুরিয়ে দাঁড়াও মুখ। পরিচিতরা সন্দেহ প্রকাশ করে। নজর বন্ধক রাখে তোমার দরজায়। পুকুরে জলের শব্দ, টিনে বৃষ্টির শব্দ…আমি মনে মনে ভাবি— অপটু সুর, নির্জনতা সেলাই করতে এসেছে… আমি তো জানি, বর্ষাকাল এক্কেবারে পছন্দ করো না। আমি তো জানি, তোমার চোখ থেকে তাই বর্ষা নামে না সহজে
শুধুমাত্র এক-দু-বার, চোখ থেকে জল, গাল বেয়ে নামে। গালের পথে জল জমে। গর্ত হয়। তোমার পরিচিতরা তাকে বলে ‘টোল’
…আমি তো জানি, ওই ‘টোল’ কতটা গভীর। কতটা গর্তে, কতটা জমা জলে, কতটা কাদায়, এখনও ডুবে আছি আমি…
“ভালোই হবে” — কথাটির দিকে সভয়ে তাকাই। মুচকি হাসি, তোমার মুদ্রাদোষ দেখে। কোনটা আদতে ভালো? তোমার আমাকে ছেড়ে চলে আসা? নাকি আমার এরকম একাকিত্ব?
সেইসব ছোটোবেলার কথা মনে পড়ে৷ যখন প্রথম একাদশে সুযোগ মিলত না। সেইসব সাইকেলের কথা মনে পড়ে, যার মধ্যে লুকিয়ে আছে ইচ্ছেমতো রাগ। যেসব রাগ দীর্ঘ অব্যবহারের ফলে একেকদিন ‘ক্যাঁচ-কুঁচ’ শব্দে পৃথিবীর আলো দ্যাখে। সেইসব বাল্ব-এর কথা মনে পড়ে, নিজেদের পান্ডুর-রঙ লুকোতে পারেনি বলে, যারা আজ আর জ্বলে উঠতে পারে না!
ঘুম ভেঙে, কুলকুচির শব্দ শুনি। মন দিয়ে। ‘‘ভালোই হবে” — কথাটি মনে পড়ে। সভয়ে তাকাই না আর। মুচকি হাসি, তোমার ছেড়ে যাওয়া মুদ্রাদোষের নাছোড় দেখে…
যেহেতু, প্রত্যাখ্যান মানে, আমি শিখেছি নতুন আরেকটি প্রস্তাব
নির্জনতা আছে, এমন একটা শহুরে বাগানে আমি তোমার জন্য বসে আছি…। পার্কে বাগান আছে, কিন্তু পার্কে নির্জনতা নেই। পার্ক আমি পছন্দ করি না একদম! তাহলে আমি কি প্রেমিক হতে পারব না কোনোদিন?
জানি না…জানার প্রয়োজন নেই। শুধু দেখছি, আমার মাথার ওর থেকে একটা একটা করে পাতা ঝ’রে পড়ছে…। আর আমি টের পাচ্ছি স্নায়ু। এখন এখানে আমার মতো স্থির আর কেউ নয়। এখন এখানে আমার মতো ব্যস্ত আর কেউ নয়৷ এখম শুধু বড়জোর তোমাকে একটা ফোন ক’রে আমি বলে দিতে পারি— আজ ব্যস্ত আছি। আজ আর আসার প্রয়োজন নেই