ক বি তা
মারওয়া রাগ আলাদা হলেও জৌনপুরী আর সোহিনীর মতো করে আমরা দু’জন রাগ আর অনুরাগে মিশে এদিক ওদিক হলে প্রতিটা সম্পর্কের সুরগুলো তানপুরার ইলেকট্রনিক্স তারে মিশে গিয়ে সুর তোলে একইরকমভাবে।
সা-রে-গা-মা রিদমটা সব দেশে এক না হলেও সাউন্ডটা কিন্তু কোনো দেশে তোমার আমার প্রেমের গল্পের মতো করে আলাদা নয়।
ঠিক যেমন আমার শহরে থাকা সবগুলো মেয়ে আলাদা হলেও সবার মধ্যে তুমি রয়েছো কেমন যেন কীভাবে! একইভাবে শরীরের বাইরে-ভিতরে।
বাবা ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও প্রতিদিন রাতে বাবার মোবাইলে ফোন করে শিওর হয়ে নিই, বাড়ি ফিরতে বেশি রাত হলে বাবা যদি আমায় বকা দেয়।
আমার বন্ধু অমিত যদি জাপান যেত তাহলে ওখানের তেল আনতে বলতাম তাকে, আমার সামনের শীতকালের রুক্ষশুষ্ক ত্বকের যত্ন নিতে।
এখন আমার শরীরে ডেঙ্গু হয়ে প্রতিদিন প্লেটলেট ওঠানামা করছে কৃষ্ণসার হরিণের মৃগয়া নাভির গন্ধের মতো।
আজ রাতে আমি ঠিক করেছি ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে নিয়ে আমি বাড়ি ফিরবো, শেষ ট্রেন যদি ছেড়ে যায়! হেঁটে বাড়ি ফেরা রাস্তায় যদি অ্যালকোহল-এর নেশায় ঝাপসা চোখে পাড়ার গলি যদি চিনতে না পারি সে আমায় তখন রাস্তা দেখাবে মহাভারতের সারথি হয়ে।
স্যাপিওসেক্সুয়াল প্রেমিকদের মতো করে শুধু শারীরিক সৌন্দর্য না, আমি একবার তোমার সব ইন্টেলিজেন্সের খেলায় নিজের সব অনুভূতিগুলোকে সিওর করে নিতে চাই নিজের বুদ্ধিগুলোকে কামারশালের হাপরে শান দিতে দিতে।
প্রতিটি ভালবাসার সম্পর্ক আসলে একটা মহাভারতের কৌরবদের সাজানো চক্রব্যূহ, যাতে ভালোবাসার এক সমার্থক শব্দের নাম হল অভিমন্যু, যে বীর যোদ্ধার মতো প্রবেশ করে কিন্তু এ থেকে বেরোতে যে গল্প লাগে সেটা শোনার আগেই ঘুমিয়ে পড়েছিল প্রতিটি প্রেমিকের পূর্বপুরুষ তাদের মায়ের গর্ভে।
জলহস্তীর মতো ত্রিশ মিনিট ধরে জলের তলায় দম বন্ধ করে থাকতে থাকতে এখন আমি অক্টোপাস হয়ে দেবী গঙ্গার সাথে গল্প করতে করতে জীবনের পিছনের দিকে সাঁতার কাটছি! জীবনের ফেলে আসা অগোছালো দিনগুলো যদি আরও একবার ছুঁয়ে দেখতে পারতাম কোনোভাবে, আমার সামনের সময়গুলোর আর আমার জীবন নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকতো না।
এই নীল সাদা কোলকাতা শহরে ব্যস্ত ট্রাফিক জ্যামে আটকে গিয়ে আমি ওলা ক্যাফেতে বসে কাঁচের জানালায় জমে থাকা ধুলো দিয়ে দিব্বি আঁকিবুঁকি কাটছি, বৃষ্টি ভেজা জানালা দিয়ে ওপারের দেখতে পাওয়া শহীদ মিনারের মাথার উপর।
নিমেষে চমকে যাওয়া প্রজাপতিটার মতো ডানা মেলার আগেই আমাকে ফুড়ুৎ করে উড়ে যেতে হয় জীবনের প্রতিটি সম্পর্ক ভাঙার হালকা শব্দে।
নেমেসিস-এর মতো আমার জীবনে শাস্তি দেওয়ার জন্য যদি কোনো গ্রীক দেবী সামনে এগিয়ে আসতো আমি তাকে কিছুটা সময় নিয়ে একবার প্রপোজ করে দেখতাম। কোনো মেয়ের হ্যাঁ-এর উত্তরে অপেক্ষায় থাকার মতো এখন আমার আর ধৈর্য নেই।
আমার এখন মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে কালো রঙিন চশমা পরে অঞ্জন দত্তের সাথে গিটার বাজানোর, এতেও যদি কোনো মেয়ে এসে আমাকে দাদা বলে ডেকে ফেলে তাহলে কোলকাতার রাস্তায় আমি আবারও সিগারেটের পিছনে ধোঁয়া দিতে দিতে বাড়ি ফিরে আসবো।