কো থা য় কি
গত ২০২১এর ১২ ডিসেম্বর ‘খসড়া খাতা’ থেকে প্রকাশিত হল কবি বল্লরী সেনের আখ্যানধর্মী গ্রন্থ ‘সহজাগানিয়া’। এই গ্রন্থটিতে রয়েছে ‘ফুলো মুর্মু’ ও ‘সহজাগানিয়া’ নামে দুটি আখ্যান এবং শেষে ‘দুটি আখ্যানের পরিশিষ্ট’। তবে প্রচলিত ভাবে আখ্যান যা আমরা বুঝি, এ দুটি আখ্যান কিন্তু তেমন নয়। এই গ্রন্থের প্রতি পাতায় যেন কবির অনুভবের ঘোর লেগে আছে। যা পাঠকের মনের এক অন্য আবেশ ছড়িয়ে দেবে।
এই গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শম্পা চৌধুরী, বিজ্ঞানী ও লেখক সিদ্ধার্থ মজুমদার, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক রোচনা মজুমদার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলাদেশ)-এর অধ্যাপক ও লেখক মানস চৌধুরী ও আরো গুণীজনেরা। রবিবারের আলতো শীতের সকালে এই গ্রন্থপ্রকাশ উপলক্ষে ঘরোয়া সমাবেশটি ছিল আন্তরিকতার উষ্ণতায় আবিষ্ট…
প্রাবন্ধিক সুশোভন অধিকারী ‘সহজাগানিয়া’ নিয়ে লিখেছেন—
‘জীবনকে দেখার চোখ, চেনবার ভঙ্গি একজন থেকে অন্যজনে বদলে যায়। সেইটেই স্বাভাবিক, সবার অনুভবের বোধ তো একই বাঁধা পথ ধরে হাঁটে না। সে যেমন বিচিত্রমুখী তেমনি বিচিত্রগামী। আবার কলম যদি ধরেন কোনো সংবেদী লেখক, তখন পালটে যায় পুরো পরিপ্রেক্ষিত, চিন্তার সমগ্র আধার। ঠিক যেমনটা হয়েছে এই লেখায়, এই বইতে। অনুভবের কোন্ অতল থেকে লেখিকা তুলে আনেন এমন স্পর্শময় শব্দমালা, তুলির কোন্ সুক্ষ্ম টানে আঁকা হয় উপলব্ধির এমন আশ্চর্য চালচিত্র— সে বুঝি এ বইয়ের চৌকাঠে একবার পা রাখলেই বোঝা যায়। কিন্তু এই লেখার সিরিজকে কি নামে ডাকবো— এ কি কুয়াশার মেঘ ছিঁড়ে একফালি সোনালী রোদ্দুর? পিছন ফিরে দেখা স্মৃতির টুকরো? কাউকে বলতে বলতে না-পারা মনের গহন অনুভব? না একান্তে নিজের মনে বয়ে চলা সেই আপনকথা? অথবা একে নির্জন হৃদয়ের সলিলকি বলা যায় কি-না, সে ভাবনা রইলো পাঠকের ওপর। পড়তে গিয়ে মনে হয়, যত বিতর্কই হোক— স্বীকার করতে হবে মেয়েদের আখরমালায় এমন কিছু ভেসে ওঠে, পুরুষের কলম যার সহজে নাগাল পায় না।’