Hello Testing

4th Year | 3rd Issue | June-July

৩০শে আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 16th July, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

স্ম র ণ ।  পি না কী  ঠা কু র

ম হী তো ষ   ম ন্ড ল

mahitosh2

কিছুটা কুন্ঠিত হয়েই

আমার স্কুল জীবনেই পিনাকীদার সঙ্গে আলাপ। ১৯৯৪। তখন তাঁর সদ্য প্রথম কবিতার বই ‘একদিন অশরীরী’ প্রকাশ পেয়েছে ‘স্বর্ণাক্ষর’ প্রকাশনী থেকে। পাঁচ বছর আগেই ডানলপের চাকরী ছেড়েছেন। জীবিকা? টিউশন সম্বল। ইঞ্জিনিয়ারিং-এর উচ্চতর কোর্সের পড়াশুনো করে প্রথম ধাপ পেরিয়েছেন। প্রায়ই বলতেন এ.এম.আই.ই.-টা পাশ করতেই হবে। সকালবেলা দেখতাম সুশীল বালকের মতো মোটা মোটা বইয়ে মুখ গুঁজে পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছেন। কিন্তু কোথায় কী! ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ফাইনাল পরীক্ষা না দিয়েই ফুলটাইম লেখালেখির মধ্যে ঢুকে পড়লেন। সংকল্প করলেন সারাজীবন কবিতা লিখেই কাটাবেন।

আমাদের ‘অচিন’ পত্রিকার (তখনও ‘ছন্নছাড়া’ প্রকাশিত হয়নি।) অনুষ্ঠানে বাঁশবেড়িয়াতে নিয়ে আসছেন কলকাতা থেকে ‘বিজল্প’-র তরুণ তুর্কি দল। এঁদের অনেকেই তখন চুটিয়ে লিখছেন ‘দেশ’ পত্রিকা সহ বাংলাভাষার অনান্য মূল ধারার কাগজগুলোতে। প্রসূন ভৌমিক, সাম্যব্রত জোয়ারদার, তাপসকুমার লায়েক, বাংলাদেশের বন্ধু নুরুল ইসলাম সে অনুষ্ঠান জমিয়ে তুলেছিলেন কবিতা পাঠে। পিনাকীদার কবিতায় গান গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

টেমার লেনে ‘বিজল্প’-এর কবিতা পাঠ আর গানের সন্ধ্যায় দেখেছি— কবিতা পড়ছেন পিনাকী ঠাকুর ও জয়ন্ত ভৌমিক। তাঁদের কবিতা পাঠকের কাছে আলোচনা সূত্র তুলে ধরছেন কবি জয় গোস্বামী। একটার পর একটা, তন্ময় হয়ে, চোখ বন্ধ করে রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে চলেছেন উদীয়মান শিল্পী স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত।

কখনো পিনাকীদার সঙ্গে সাইকেল চালিয়ে চলে গেছি কল্যানীর ঋত্বিক সদনে তাঁর অভিন্নহৃদয় বন্ধু শিবাশিস মুখোপাধ্যায়ের নাটক দেখতে। মনে আছে, নাটকটির নাম— ‘তোতাকাহিনী’। শিবাশিসদা কবিতা লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন নাটকে অভিনয় ও প্রযোজনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। শিবাশিস মুখোপাধ্যায় আর পিনাকী ঠাকুরের যৌথ সম্পাদনার প্রকাশিত হয়েছে ‘কাহ্ন’ পত্রিকা। বর্তামানে কাহ্ন-র সবকটি সংখ্যা নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশ করেন ‘পরম্পরা’-র গৌতম দাশ মহাশয়।

লিটিল ম্যাগাজিনের জন্য তাঁর ভালবাসা ছিল হিমোগ্লোবিনের মতো রক্তের সঙ্গে মিশে। ‘দেশ’ পত্রিকা ছাড়াও ধারাবাহিক ভাবে নিয়মিত কবিতা লিখেছেন, তাঁতঘর, দাহপত্র, রক্তমাংস, বিজল্প, কবিকৃতি, বারোমাস ইত্যাদি অজস্র পত্রিকায়। ছোটদের জন্য গল্প লিখেছেন রবিবাসরীয় আনন্দমেলায়, কবিতা সন্দেশ পত্রিকায়। কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে কখনো তাঁকে দেখা গেছে বাংলা আকাদেমি, শিশির মঞ্চ, জীবনানন্দ সভাঘরে কখনও বা বাংলার আনাচে কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। পিনাকীদা বলতেন, প্রতিটি স্টেশনেই আমার একটা করে বন্ধু আছে।

১৯৯৮-এর বইমেলায় ‘বিজল্প’ থেকে পিনাকী ঠাকুরের ‘আমরা রইলাম’ প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি তাঁর দ্বিতীয় কবিতার বই। এই বইটি পরে ‘আনন্দ’ থেকে প্রকাশিত হয়  পরিবর্ধিত সংস্করণে ২০০১ সালে। দেখলাম আস্তে আস্তে একটা বলয় তৈরি হচ্ছে পিনাকীদাকে ঘিরে। দেখলাম, ওই প্রথম, ভিড়ের মধ্যে এক সুন্দরী তরুণীকে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন তিনি, কিছুটা কুন্ঠিত হয়েই—

আরও পড়ুন...