প ছ ন্দে র ব ই
সব ছবি লেন্সে ওঠে না
সৌভিক বন্দোপাধ্যায়
কাগজের ঠোঙা
দাম : ৬০ টাকা
নিজের দুঃখের কথাগুলো লিখতে গেলে নিজেকে আরও বেশি দুর্বল মনে হয় । আমি সব সময় আনন্দে থাকি। সব সময়। দুঃখ সব সময়ই ছিল আছে আর থাকবেও। তার জন্য কোনো কোভিড-১৯ দরকার হয় না। সব ছবি লেন্সে না উঠলেও কবিতায় ঠিক একজন ধরে ফেলেন। তার কলম আসলে হ্যমলিনের বাঁশি । সে হাওয়ায় উড়তে থাকা ভিক্টোরিয়া পরির খোলা চুলের সুগন্ধি ভাষায় কবিতা লিখতে পারে। সৌভিক বন্দোপাধ্যায় লিখতে পারেন – ” সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলে বুঝবেন, সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, কিন্তু ভালোবাসা হয়নি” ( সম্পর্ক)
আমরা এমন একটা দেশে থাকি যেখানে জীবনের সঙ্গে দুঃখ একটি নিত্য দিনের নিয়তি। জিমিস কিচেনের টম্যটো সসের স্বাদ মাখা তোমার আমার ঠোঁটের ইতিহাস আসলে তো একটা ‘ভ্রম-উৎসব’। সৌভিকের কবিতা পড়লে বড্ড নিজের জীবনের কথা এসে যায় ।
বইটা পড়ুন – ‘সব ছবি লেন্সে ওঠে না’, ‘কাগজের ঠোঙা’ প্রকাশ করেছে। যাদবপুর থেকে কলেজ স্ট্রিট – যেখানেই যাবেন , অল্প কটা টাকা খরচা করলেই কবিতার বইটা পাবেন। পচা মোমোকে ওযা়ও ওযা়ও করেও তো ফালতু টাকা উড়ে যায় – আসুন না প্রতি সপ্তাহে একটা নতুন কবিতার বইয়ের জন্য টাকাটা ব্যবহার করি।
দুঃখের তো একটা বস্তুবাদী দিক আছে। সেখানে শুধু মাত্র নিজের জন্য নয় বরং অপরের জন্য সেই বোধ অনেক বেশি কাজ করে। তরুণ কবিকে লুকিয়ে বড় চিঠি লেখে সৌভিক । ইলামবাজারের রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে দেখি ‘২০০৭-এর ফাল্গুনমুখ’।
যাই হোক, তবুও যন্ত্রণা এমন একটি অ্যকোযা়রিজিযা় যার মাধ্যমে খুব সহজেই চিনে ফেলা যায় মুখ ও মুখোশের ধাতব পার্থক্য । ছায়া সরে দেখতে পাই ‘ বহ্নিশিখা ভার্গবের কোভিডকালীন রুটিন’।
বিশ্বাস এমন একটা ইমিউনিটি পাওয়ার যা দিয়ে আমরা অনেকটা পথ হাঁটবার স্বপ্ন দেখি। সেই স্বপ্নের পতন ঘটলে কি হয় ? সেই পতনের নামই মনে হয় দুঃখ! তাই কি ! কে জানে ! আবার একটু ইমিউনিটি পুশ করতে হবে…
সংসার করতে গেলে কি সব কিছু ফেলে দিয়ে- নতুন করতে সবকিছু বাঁধাছাদা করতে হয় ? সব কিছুই ‘মাইনাস ২৩ পার্সেন্ট জিডিপি ভারতবাসী আমার ভাই’ ।প্রাক-সংসার হাসি কান্না ভালোবাসা সব পুরনো হয়ে যায় তখন ।
দশ বছরের বন্ধুরা দল ভেঙে চলে গেল। দেখা করল না শেষ বার ! সি অফ করতাম। ওহ না, আমরাও তো প্রাক-সংসার যুগের বন্ধু!
অবশ্য সব কিছুরই একটা শেষ থাকে। সেই দিনটার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকি না। এই অপ্রস্তুত থাকাটাই কি দুঃখ? কে জানে…..
নতুনের এর খোঁজ নিশ্চয়ই থাকবে জীবনের প্রতি মুহূর্তে ,তাই বলে কি পুরোনো দিন-মন- মুহূর্ত-মানুষ সবই ফিকে হয়ে যায়! কিছুই অবশিষ্ট আর পড়ে থাকে না না ?
অবশ্য ‘পূর্বজন্মের কথা খুব বেশি মনে পড়া ভালো নয়’।