ক বি তা
আমাদের আটপৌরে জীবন-যাপনে ভালোলাগা-খারাপলাগার বেশিরভাগটুকুই পাঠ্যপুস্তকের দল আমাদের জানাতে পারেনি।
কোদাল কাটা মেঘ দেখলে, তার দিকে তাকিয়ে থাকা যায় অনেকটা কিংবা সূর্যাস্তের স্নিগ্ধ লাল টুকটুকে যে আলো তার দিকে তাকালে রাগ ঘৃণা আর কাজ করে না কিছুই; পাঠ্যপুস্তকে এ কথা কোথাও লেখা ছিল না।
রেগে গেলে প্রেমিকার সাথে কথা বলবো কেমন ক’রে, তারও কোন সদুত্তর সিলেবাসের বই ঘেঁটে পাইনি কখনো।
যাপনের বেশিরভাগটুকুই সার্টিফিকেটগুলো দিতে পারে না বলেই, পাথরকাটা, মাঝি মাল্লা, কাঠুরিয়া, ট্রেনের হকার… যে কেউ… যে কেউ যখন তখন চমৎকার কিছু করে বসবে, বিশ্বাস হয়।
চওড়া রাস্তার চেয়ে কানাগলি আমায় বরাবর বেশি আকর্ষণ করে এসেছে। দু’পাশে গৃহস্থালী থাকে বলেই হয়তো। দাঁড়ালে কানে আসে আটপৌরে কথোপকথন।
পৃথিবীতে যত রকমের ভালোবাসা হয়, এই ছোটো ছোটো গলিরাই উৎসমুখ। এখান থেকেই বেরিয়ে তারা বড় রাস্তায় গিয়ে মিশেছে। ভীড়ে কিছু পথ হারায় তো কিছু বেঁচে থাকার চালাকি শিখে নিয়েছে।
এই টান তীব্র হয়েছিল কলকাতা থাকাকালীন। মায়ের বিছানো সংসার গন্ধের থেকে দূরে থাকছি তখন। ক্লান্ত বিকেলে বিষন্নতা গায়ে মেখে কতবার গিয়ে দাঁড়িয়েছি অচেনা অজানা সব গলিমুখে। ভেবেছি এই বুঝি একজন মধ্যবয়স্ক, ঠিক বাবারই মতো, কোন একটা ঘর থেকে বেরিয়ে কাছে এসে বলবে, বাইরে দাঁড়িয়ে কেন?