Hello Testing

4th Year | 3rd Issue | June-July

৩০শে আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 16th July, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

ক বি তা

স ব র্ণা   চ ট্টো পা ধ্যা য়

ঝাঁপ

জল জমে যায় ধূসর কাচের গায়ে

নদী সে তো বাঁকা পথ

চিকিমিকি রোদে ঝলমল করে পারদ

এতো প্রতিচ্ছবি কোন গাছের?

কৃষ্ণসার মৃগ ঝাঁপ দিয়েছে পাথর থেকে পাথরে

হলুদ আলোয় সিক্ত তার শরীর

পরনে মোলায়েম পশম

ঢেউ যেন তার পায়ের নুপূর আর জলের হোলিখেলায়

মগ্ন তার শাখাপ্রশাখা 

কে তাকে ডেকেছে দূর জঙ্গলের ভেতর?

হাজার মাইল ছুটে ছুটে আচমকা বুনোঘাস আর খাগড়ার

জঙ্গলে সখীটি তার একাকী উদাস, 

ডুবে আছে নদীর কিনারে

কালো জুলজুলে মায়াবী চোখ

জলের ছবিটি ঠিক হাতে আঁকা যেন কোনো এক অপ্সরা 

ধূসর শরীর মিশে আছে নদীর আয়নায়

ছোটো এক গোলাপি জিভ চেটে নিচ্ছে বারেবারে

পশমের মখমলে দেহ…

তুমি কি তারই কস্তরীর ঘ্রাণ পেয়েছিলে?

ঝাঁপ দেয় কৃষ্ণসার সূর্যআবির মেখে বন্যতা থেকে

অন্য এক অলৌকিক ভোরে। 

 

আমাদের বাড়ির সামনে একটা পেয়ারা গাছ ছিল

তখন ভাড়ার ঘর,

ছোটো ঘরের খাট জুড়ে ঝলমলে রোদ 

জানলা ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আউড়ে যেতাম কতো ছড়া।

গোপাল অতি সুবোধ বালক

কিংবা রাখালের গল্পটাও!

সামনের পেয়ারা গাছটায় কচি কচি সবুজ পাতা।

মা’কে লুকিয়ে কতোবার চিবিয়েছি কচি সবুজ রস।

পাশে কারখানার পাঁচিলের দিকে বড়ো বড়ো ডালগুলো

ঝুঁকে থাকত ডাঁটা পেয়ারা সমেত।

আব্দুলকাকুকে ডাকলেই পেড়ে দিত একগাদা।

তুলি আমায় আব্দুলকাকুর সাথে ভাব করিয়েছিল।

এসব কিছু মা জানত না। 

বড় নালির পাশের সরু রাস্তা দিয়ে কারখানার গেটের পিছনে লুকোচুরি বিকেল

তারপর মান্টা দিদিদের বাগান…

ওদের বাড়ির ভেতর আমি জোনাকির ঘর দেখেছিলাম।

ঠাণ্ডা মাটি, অন্ধকার, কুলুঙ্গিতে জ্বালানো প্রদীপ। 

সন্ধে হলেই তুলসি গাছের কাছে বেজে উঠত শাঁখ। 

আর সারা পাড়াটা কেমন ঝুপ করে ডুবে যেত 

অন্ধকারে। বাড়ি ফেরার সময় দেখতাম, 

পেয়ারা গাছটা একটা ডাইনির মতো দু’হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে,

হাতে দু’মুখো একটা লাঠি। 

আমি যদিও ভয় পাইনি কোনো দিন।

পেয়ারা পাতার একটা বেশ মিঠে গন্ধ আছে। 

অন্ধকারেও তার নরম শরীর, কচি কচি ছাল আমায় 

বলে দিত, সে তো আমারই আর এক ছায়া। 

মা এসব জানত না কিছুই। 

প্রতিদিন সকালে জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে

দেখতাম তার নরম আঙুল…

সে বলত, গোপাল অতি সুবোধ বালক

আর আব্দুলকাকার হাত দিয়ে পাঠিয়ে দিত বড়ো 

বড়ো সুস্বাদু মিষ্টি পেয়ারা।

আরও পড়ুন...