ক বি তা
শ্যাওলা দিয়ে ঘেরা এই ঘর
সূর্য দেখেনি কয়েক যুগ
কাঁটাতার, বিষময় কাঁটাতার ফুটে আছে
কপালের পরিখায় চক্রাকারে ধাপ ফেলে
কিতকিত খেলা
খেলাই তো বিশ্বজুড়ে অহরহ চন্দ্রকেতু গড়ে
উঁকি দেয় কালসর্প দোষ
বেহুলা জাগো, জাগো বেহুলা
জাগো সতী; জাগো তব আগুনের বেদমন্ত্র
ঘর, ছায়াঘেরা এই ঘর…
জলের কথায় পড়ে আছে ঘুমমন্ত্র
নক্ষত্রের কণামাত্র গল্প গেলাসের তলদেশে
বড়ো তৃষ্ণা তার
ছাই ওড়ে বাতাসের বুকে
এই অভিসার ঠুকে ঠুকে তপ্ত হয়ে ওঠে
শিরায় শিরায় ফাঁক দেখে ঢুকে পড়ে কালচক্র
ঘর্ষণে ঘর্ষণে বেলা যায়
বারবেলা ফিরে গেছে চাদর গুটিয়ে
একটু একটু করে উপনিষদের স্তোত্রপাঠ
মায়াখেলা সে কী পাখি? তুমি দেবদূত
ডানা মেলে দেয় চওড়া করে
দাবার ঘুটিরা ফিরে যায়
কালো ধুয়ে, কাঁটাতার পার করে সূর্যমন্ত্র
গল্পে বসেছে অগ্নির সাথে
এই সময়েই খুলে যায় মানচিত্র পৃথিবীর
ঘর; আমি জানি তুমি কীভাবে আকাশ হয়ে গেছ
জল, জল… জলের কাছে আমার ঋণ অনেকদিনের। বৃষ্টি পড়ার শব্দে গুনেছি ত্রিতাল, একতাল; পায়ের পাতারা ঠিক নেচে উঠতো ছন্দ মেপে মেপে এককালে। নাচ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে জলের সাথে একটা বিচ্ছেদ হয়েছিলো। আসলে সেই অর্থে বিচ্ছেদ নয়। কে কবে দূরে থাকতে পেরেছে জলকে বাদ দিয়ে। একটা দূরত্ব অভিমানের খানিক পাগলামির।
আজকাল জলকে ভয় পেতে শুরু করেছি। ট্য৷ঙ্ক উপচে এক ফোঁটা জল পড়লেই মাথায় ভিতর কে হাতুড়ি মারে। চোখের সামনে দেখি একটা ধূ ধূ মরুভূম; মাথার ওপর কলসি নিয়ে হেঁটে চলেছে মা দিকশূন্যে। চারপাশে পড়ে আছে কঙ্কালের ইতিহাস। কখনও কখনও কেউ চোয়ালের হাড় দুটো অল্প ফাঁক করে জল চায়; দু‘এক ফোঁটার মতো ছড়িয়ে দেয় মা। কতো নক্ষত্রের ভাষা জেগে উঠছে নিভে যাচ্ছে। তবু জল চাওয়ার শেষ নেই। আরও চাই, আরও চাই।
খানিক বিরক্তি, শেষে শূন্য; এক বিরাট শূন্যতা বৃত্তাকার মোহে আঁক কষছে। কেমন যেন মা’র শরীরে খরার চিহ্ন। আমারও চোখ থেকে বালি উঠে আসে। হাতের তালুতে ক্যাকটাস; হঠাৎ ওয়েসিস চিৎকারে সম্বিত ফিরে পাই। তখনও জলের ডাক স্পষ্ট। এক উদাসীন ভাষা মাটি থেকে তুলে নিতে বলছে, একাকী। বড়ো অসহায় মুখ আর জীবন জীবন গন্ধ