গু চ্ছ ক বি তা
১
নদী তোমার প্রিয়, আমি ভালোবাসি গহনের ঢেউ। বসন্ত তোমার জন্ম ঋতু বলেই কি এত ভালোবাসি আমার জন্মান্তরের কেউ! শ্রীমতির রূপটানে রাঙা হয়ে ওঠে তোমার বাঁশি। বেতস বনের লুকোচুরি খেলায় তুমুল মুহূর্তে পান করো সুধা, নদী রাঙা হয় অম্বুরি তাম্বুলে। এমন দিনেই বৃষ্টি নামে ঝমঝমিয়ে, ভেসে যায় দুকূল, নাছোড় তুমিও নৌকা জুড়ে মধুবনী চিত্রকলা আঁকো সুচারু আঙুলে…
২
অথচ কোনো কোনো রাতে কেন বন্ধ জানালা খুলতে গেলে কাচের শার্সিতে একটা হাঁ মুখ ভেসে ওঠে। বিকট চোয়ালে বিদ্রুপের হাসি তার। চিৎকার করতে পারি না, তোমাকে আঁকড়ে ধরতে চাই খুঁজে পাই না তোমাকে আর! কান্না পায় অথচ কাঁদতে পারি না। কার মুখ ক্রমশ চুরমার হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ঘরময়। ঋতুমতি বর্ষা গড়িয়ে নামে পা বেয়ে, আমার গলা শুকিয়ে কাঠ, অথচ তুমি তখন নির্বাক…
৩
একদিন হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় দরজা। কে যেন ঢুকতে দেয় না আর। বলে আমার নাকি মাথার ব্যামো। কেন এত অন্ধকার? নিরুপায় আমি আকাশে আঁকিবুকি আলোয় দেখি অনিশ্চিত সময়। কারা আসে যায়? কারা যেন নদীকে ডাকে! আমার ভয় হয়। তুমি হয়ত অন্য কোনো নদীর ঘাটে মধুবনী কারুকাজে সাজাও নতুন নৌকো। শহরের বুকে দুঃখ নদীর জলে ষোলো কলায় ভেসে যায় তোমার পরিপাটি চাঁদ
৪
তবু একদিন আনন্দ আসে বৈশাখের পানসিতে। রুদ্র, তুমি এত সুন্দর! অনন্ত ধরা দাও অধরার রূপে। সেদিন কৃষ্ণচূড়ার লালিমায় লুকিয়ে যায় নারীর অভিমান। শিরীষ পাতায় জাগে তোমার গান। এত ভালোবাসো অথচ বুঝতে দাও না কেন! সেদিন মধুবনী নৌকা পাল তুলে দেয় নিরুদ্দেশে। বসন্তের মাধবীলতায় বিনা সুতোয় গাঁথা মালা পরিয়ে দেয় সে প্রিয়ার নিরাভরণ দেহ জুড়ে। পরিপাটি শরীর যায় খুলে। কারিগর জানে কোন তারে কোন সুরের মূর্ছনা ওঠে। ধীরে ধীরে জাগে ঝঙ্কার। আবার নতুন করে রাঙা হয় কবির উত্তরীয়। ফুরিয়ে যাবার নেশায় আমাদের যাত্রা হয় শুরু…