Hello Testing

4th Year | 3rd Issue | June-July

৩০শে আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 16th July, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

কে তা বি  ক থা

কু ব ল য়   বসু

kubaloy

তরুণ কবির অমোঘ উচ্চারণ

এখনই আত্মহত্যার সঠিক সময় নয়

অর্ঘ্যকমল পাত্র

প্রকাশক: প্ল্যাটফর্ম প্রকাশন

৬০ টাকা

মাত্র উনিশ বছরের মধ্যে লিখে ফেলা যায় এতো পরিণত লেখা! অল্প বয়েসে লেখক প্রতিভার দ্যুতি চোখে পড়ার এর আগেও অনেক উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু ইদানীংকালের মধ্যে এতো স্পষ্ট উচ্চারণ, সাধারণ চিন্তাভাবনাকে অন্য স্তরে তুলে ধরা খুব কমই চোখে পড়েছে। অর্ঘ্যকমল পাত্রের দুই ফর্মার এই কবিতার বইটি- ‘এখনই আত্মহত্যার সঠিক সময় নয়’, নামকরণেই চমকে দেয় আমাদের। এরপর কৌতূহল হতে বাধ্য বইটির পাতা উল্টে দেখার জন্য। পাতা উল্টে দেখুন অবশ্যই, কী পরিমাণ বারুদ ঠাসা আছে প্রতিটি কবিতা, পংক্তিতে তা পড়া জরুরি।

 

‘শেষমেশ মুছে যাবে                                                                                                             

— এ কথাটি জেনেও

            প্রতি লক্ষ্মীবারে

                     ব্যর্থ আলপনা দেওয়া…’

(কবি)

 

নামকরণ দেখার পরে যে ধরণের লেখা পড়বার মানসিক প্রস্তুতি থাকে, তার একেবারে বাইরে গিয়ে এই কবিতাটি লেখা। কিছুটা ব্যঙ্গাত্মকও বটে। কবিতা কি সত্যিই মুছে যায়? যাবে? আমার ব্যক্তিগত ধারণা এই কবি ও তাঁর কবিতা স্থায়ী আসন করে নিতেই এসেছেন। এই বইয়ের অন্যতম আকর্ষণ হলো, সিরিজধর্মী কিছু কবিতা। যেগুলি এক, দুই, তিন বা বড়জোর চার পংক্তির মধ্যে লেখা। অথচ সেই নির্মম উচ্চারণের লেখাগুলি আমাদের অদ্ভুত এক সত্যের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। মাত্র একটি পংক্তির লেখাও আপনাকে আবার ফিরে পড়তে হবে, তারপর আবারও। মাথার মধ্যে ছড়িয়ে যেতে যেতে সেই পংক্তিগুলো আপনাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে। পড়ে নেওয়া যাক এমনই কিছু আপাত সরল কিন্তু গভীর কিছু উচ্চারণ।

 

‘মানুষ মরে গেলে আরও                                                                                                         জীবন্ত হয়ে ওঠে, ফটোগ্রাফ’ (সহজ সমীকরণ- ১)

 

‘পিঁপড়ে খুব গণতান্ত্রিক। পিঁপড়ে খুব ভালো। পিঁপড়ে খুব আবহাওয়াবিদ। এবং খুব শ্রমিক-ও

মাড়িয়ে দিলেই মরে যায়…’ (নেচার স্টাডিজ)

 

‘শুধুমাত্র শৌখিন সৌন্দর্য                                                                                                   বেশিদিন থাকে না

ভেঙে যায়। চুরমার…’ (চুড়ি/ যেসব আর কিনে দেওয়া হল না)

 

এই সমস্ত অসামান্য লেখার কাছে খানিকক্ষণ চুপ করে বসে থাকতে ইচ্ছে করে। কীভাবে লিখে ফেলা যায় জীবনের এই সারমর্ম! এই কবির রাস্তা অনেক দূরের। নিয়মিত লেখালিখি বজায় রাখলে কবি অর্ঘ্যকমল পাত্র আরো অনেক কিছু চিন্তাভাবনার উপাদান আমাদের দেবেন, এ নিশ্চিত। জীবন দর্শন ও বোধ গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে নিজের চর্যা জরুরি। কবি সেই কাজটি অনেকখানিই যে সেরে ফেলেছেন, তার উদাহরণ হয়ে রয়েছে এই সমগ্র বইটি।

 

‘দ্যাখো— জীবন, এরকম-ই হয়

পেরেকে ঝুলে আছি                                                                                                             এত এত বছর… নিশ্চুপ…

শেখো, বোঝো—                                                                                                                 এখনই আত্মহত্যার সঠিক সময় নয়’ (যিশু)

আরও পড়ুন...