গু চ্ছ ক বি তা
তুমি ডাক শুনতে পাওনা কোনোভাবে?
বিশুদ্ধ এই নাগরিক শরীর— অথর্ব, বোবা অথবা নিরুত্তাপ…
রক্তে রক্তে তরঙ্গিত সেই রাত
যত্রতত্র আমাদের মৃত্যুর হিম!
শব্দের উল্লাসে শবদেহ জেগে ওঠে, চোখ মুদে আসে— বিশুদ্ধ ঘুম!
পাখিদের পৃথিবী নেই— পৃথিবীর পাখিরা;
এমন অরাজক হলে পৃথিবী কি বাঁচবে?
আপনার এক হাত ভরে গেছে মৃত পাখিদের বিবর্ণ পালকে।
আপনার সমস্ত শরীরে রক্ত-অশ্রু-শব্দ।
আপনি কি শব্দব্রহ্ম? আপনিই আদিম?
আপনি কি পশুপতি, সিন্ধু সাভ্যতিক?
এতো এতো বছর পর, এতো এতো সময় অতিক্রমনের পর
আপনাকে ডেকে উঠি মধ্যরাতে?
মরণার্তির শব্দ— শালিখ, চড়ুই, কাক
ওদের রক্ষা করবে কে?
মাটিতে ছড়িয়ে দাও সন্ত্রস্ত দেহ
আমিই তো ঘুম জাগানিয়া গান
মাটিতে ছড়িয়ে দাও বোবা নিথর গা
গোধূলিতে ছড়িয়ে দিই সন্ধ্যারতির বাদ্য
সব পাখি? ঘরে ফেরে না?
সব পাখি? স্তব ভুলে যায়!
মানুষের কদর্য হাত, বর্ষবরণ করছে…
হিরোসিমা কি এভাবে কেঁপেছিল?
নাগাসাকির পাখিরা ডেকে ওঠবার সময় পেয়েছিল?
জাপানে ভূকম্পনের সময়, ভিয়েতনামের যুদ্ধে,
কিউবার জঙ্গলে…
কে না জানে, পাখিদের ঠোঁটই আন্তর্জাতিক শান্তি!
কে না জানে, পাখিরা ধান ছড়ায় বধ্যভূমিতেই!
যেসব পাখিরা ঘুমিয়ে পড়েছে সহসা,
তাদের শরীরে প্রকট হচ্ছে থাবা—
মানুষের গায়ে বহুদিন মানুষের গন্ধ নেই!
চোখ খুলে দেখি যুদ্ধ; কান পেতে শুনি যুদ্ধ
পাখিদের দেখেই চিনেছিলাম শৈশবের ডানা
পাখিদের দেখেই চিনেছিলাম আকাশের ঔদার্য
সমস্ত পৃথিবীতে যদি এমন দেশ হয়, পাখিহীন
ডানাহীন, ডাকহীন—
আমরা কি আকাশ চিনতে পারব কখনও?
আমরা কি চিনতে পারব পৃথিবীর হতাশা?
চোখ, কান খুলে যে শব্দের উৎস—
পাখি হতে চেয়েছিল একদিন;
মানুষের দেহে আজ রাক্ষসের খেলা!
খাঁচার দরজার সাথে কথোপকথন করতে করতে
পাখিরা একদিন কবি হয়ে ওঠে
গাছের সাথে কথোপকথন করতে করতে
পাখিরা একদিন হয়ে ওঠে সুরকার অথবা গায়ক
হিংস্র সব বাজির শব্দের সাথেই পাখিরা কথোপকথন করতে পারে না;
অথবা দাঁত নখওয়ালা দৈত্য-শব্দের সাথে—
কথা বলতে গিয়ে পাখিরা নিঃসঙ্কোচে ঘুমিয়ে পড়ে।
বিধ্বস্ত পাখির শরীর দেখে
বাল্মিকী উচ্চারণ করলেন আদিস্তোত্র
কাকেদের মৃত্যু দেখে
আমরাও জড়ো হতে শিখলাম নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে
অথচ, স্থবির-কপর্দকশূন্য জনতা
পাখিদের ডাক শোনে না, পাখিদের মৃত্যু দ্যাখে না!
মানুষ একদিন খড়কুটো খুঁজে এনে
বাঁধতে শিখলো ঘরবাড়ি—
যদি বলি, মানুষকে এসব কে শিখিয়েছে?
যদি জিজ্ঞেস করি, উড়োজাহাজের শরীর কীভাবে বানালো মানুষ?
জানি এইসব অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নচিহ্নের পিঠে এমন কোনো ডানা নেই যে, উড়ে যাবে…
উড়ে গিয়ে বসে পড়বে বিজ্ঞানের টেবিলে!
মানুষকে বারুদ বানাতে শিখিয়েছে যে,
তার চিলেকোঠায় পাখিরা আসতো না কোনোদিন?