গু চ্ছ ক বি তা
“Abandon hope all ye who enter here”
সমুদ্রের ডেকে দাঁড়িয়ে তুমি ভাবছো তোমার কোনো সম্ভ্রম নেই
নেই কোনো আবেগমথিত গোপন…
শুধু ক্লান্ত সুর থেকে ঝরে পড়ে সীগালেরা
তোমার আবেশী শরীর ছুঁয়ে মিলিয়ে যায় কোনো এক স্লিপিং আইল্যান্ডে…
যেখানে অপেক্ষা করে থাকে মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব, এলাচের গন্ধমাখা গোধূলি, অসমাপ্ত পানপাত্র কিংবা পুড়ে যাওয়া কলোজিয়াম!
তোমার মনকেমন হয়….
রোদেলা ডেকে দাঁড়িয়েই তুমি আনমনে আওড়ে ওঠো- ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য…!’
তবু তোমার কেমন শীত শীত করে, চশমার কাঁচে জমতে থাকে ধরা পড়ে যাবার বিন্দু বিন্দু ভয়…
ওদিকে সন্ধে নামে!
আরক্তিম ডেক সেজে ওঠে বাহারী আলোয়
শুরু হয়ে যায় মৃত সভ্যতার সব শবেদের পাশবিক আনন্দোৎসব….
তুমি তলিয়ে যেতে থাকো
ক্রমে তলিয়ে যেতে থাকো সমুদ্রের অতলে
তলিয়ে যেতে যেতে দ্যাখো সমুদ্রের ডেকে দাঁড়িয়ে এক ক্যাপ্টেন ভাবছেন, তাঁর কোনো আকাশ নেই, নেই কোনো বশীভূত মায়াবী আয়না…
নেই কোনো বিষাদ বন্দরও!
অনেকদিন হলো কোনো গল্প শোনাতে গিয়ে কেঁদে ওঠোনি তুমি
আর আমারও মুক্তি ঘটেনি
দেখেছি আমার চারপাশের অন্ধকার ফুঁড়ে উঠে এসেছে এক প্রেমের কাহিনী
যেখানে শূন্যতা প্রেমিক, প্রেমিকা তুমি…
অনেকবার ব্রেক-আপ হয়েছে তোমাদের, তারপর আবার মাটির টানে,
চোখ উপড়ে নেওয়া চেনা কোনো তূণের টানে ফিরে এসেছো তুমি
তোমার এই বারবার ফিরে আসাটা মেনে নিতে পারেনি
নদী, জঙ্গল, মনখারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকা পিরামিডও…
এমনকি মনকেমনের মেঘ দু’হাতে হাওয়ায় ওড়াতে ওড়াতে
সাহারা ক্রস করে গ্যাছেন ডিরেক্টর
সূর্য অস্ত গ্যাছে, আবার একরাশ অন্ধকার গ্রাস করেছে আমায়
আমি আর সহ্য করতে পারিনি… শহর ঘুমোলে চুপিচুপি উঠে গেছি
সারা গায়ে অন্ধকার নিয়ে
তুমি আলো হয়ে আসবে বলে…
কতদিন কোনো ভাঙা ইমারতের গল্প শোনাতে গিয়ে
কেঁদে ওঠোনি তুমি
আর…
আমাদের কোনো আকাশ নেই
মা সেই থেকে কেবল অনাদির কাছে
হাত পেতে বসে আছেন তো বসে আছেন
তবু হাতে মিলছে না আগামী দিনের রসদ
আমাদের কোনো আলো নেই
তবু আলো দ্যাখার আকুলতা আছে…
যে আকুলতা বুকে চেপে প্রিয় গাছগুলিকে হাঁটাতে হাঁটাতে
বাবা মাথা নিঁচু করে চলে যান গোয়ালঘরের দিকে…
সন্ধে নামে… মা উঠে পড়েন
জীবন সেদ্ধ করতে করতে আনমনা হয়ে
তাকিয়ে থাকেন হারানো পথের মতোই…
অদূরে মায়াবী তূণ লুকিয়ে অপেক্ষা করো তুমি…
ডিরেক্টরের মনকেমন হয়…
সমুদ্রপার জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে
একলা টুপি, মায়ের অপেক্ষাতুর চোখ, বাবার হেরে যাওয়া
কিংবা আবছা আলোর গন্ধ…
আমাদের কোনো পাখিধরা খাঁচা নেই
কেবল একটা ঝিমধরা পাখি আছে
প্রতিদিন ভোর হওয়ার সাথে-সাথেই
যার দেহ থেকে খসে পড়ে এক-একটা নেশাতুর পালক…
তোমার অপেক্ষায় আলো ছুঁয়ে থাকি…
রাত নামে…
আলনায় বাবার লুকোনো ঝাঁপি থেকে লাফ দিয়ে বেরোয় একটা সাদা বেড়াল
মিউ মিউ করতে করতে জীবন শোঁকে আনাচ-কানাচ
রাতের ভাত চাপিয়ে ঝিমটি কাটেন মা
আমার কেমন যেন শীত শীত করে…
তাই দেখে বিড়ালটার খুব অভিমান হয়
ও লেজ উঁচু করে ভাতের হাঁড়ির সামনে
মা আধপোড়া কাঠ নিয়ে ছুটে যান…
ভাত তখনও ফোটে…
সাদা ধোঁয়া থেকে বার হয়ে আসে ক্ষুধার্ত বাঘিনী
আমার ঘেঁটি ধরে নিয়ে যায় আলোর সাম্রাজ্যে
আমার চোখে-মুখে ধাঁধা লেগে যায়
আমি রা কাড়তে পারি না… মুখ থুবড়ে পড়ি
তাই দেখে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ো তুমি
ভাবো, এই বুঝি নির্বাণ পেয়ে গেলে…
ভোর রাত হয়ে আসে
মুখে রক্ত নিয়ে আমি এখন খিদেপেটে শুধু মা’কে ছুঁয়ে থাকি…