গু চ্ছ ক বি তা
কেউ কখনো জানতে পারবে না আমি রোজ রাতে কাকে ভালোবেসেছি, কাকে জড়িয়ে দিয়েছি আমার পোশাকের ওম। একটা নির্দিষ্ট কণ্ঠস্বর আমাকে কোন গুপ্ত সংকেতে দরজার বাইরে ডাকে, কেউ জানবে না কীভাবে মরে গেছি আমি আমগাছের তলায়। সবাই বা বেশিরভাগ স্তন্যপায়ী জানবে আমি কখনো ভালোবাসিনি, কেউ পায়নি আমাকে মনে অথবা শরীরে। করিম ভাইয়ের বাঁশির আওয়াজে চাপা পড়ে যায় গোঙানি আর আমি রোজ বিলিয়ে দিই আমার পোশাকের ওম।
পৃথিবীর প্রত্যেকটি লোককে, এমনকি আমি আমার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন প্রত্যেককে ঈর্ষা করি। মনে হয় যেন কেবল ঈর্ষা করার জন্যই আমি বেঁচে আছি। একটু সময় বাদে বাদে জল পান করছি, এত তৃষ্ণা আমার গলার ভিতরে জমা হয়েছে, ঠিক গলা নয় আসলে ঠোঁটের ভিতর, ঘুমের মধ্যে মরুস্থান হয়ে যায় প্রতিটা রাত কাটানোর বাসগৃহ। এত তৃষ্ণা আমার স্বপ্নে জড়ো হয়েছে যে, এই তৃষ্ণায় ঈর্ষা করতে চেয়েছি আমি আমার পুরোনো প্রেমিককে।
অনবরত খুঁজে চলেছি একটা বুক, মনে হচ্ছে কেউ পৌঁছাতে পারছে না বাঁ দিকের চিনচিনে ব্যথা অবধি। মনের মধ্যে পুষে রাখছি একগাদা যন্ত্রণা, রাগ, ঘৃণা… লালন করে চলেছি জন্মহীন-মৃত্যুহীন ক্ষোভ। নিয়মিত স্বমেহন একঘেয়ে লাগছে, নোংরা লাগছে নিজেকে, তাই ইচ্ছে করে সব অচেনা গলির ভিতর দিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছি। বোধ হচ্ছে একটা বিরাট রাক্ষস এসে খেয়ে ফেলছে আমার সমস্ত সুন্দর অনুভূতি, একটা বুক খুঁজে চলেছি শুধু এই খবরটি দেওয়ার জন্য যে ভালোবাসা আমার দ্বারা আর হবে না।
যে ছেলেটি অগোচরে ছুঁয়ে যায় আমার হাত, যে ছেলেটি সবটুকু সাহস জুগিয়ে চেষ্টা করে কেবল স্পর্শ করার– ওই ছেলেটি জানে কেন আমি বলি আমার কোনো সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী নয়। শিকারির মুখোমুখি থাকা একটা পাখির দীর্ঘায়ু আরো অনেক বেশি বা মশার জীবন সংগ্রাম। চিরকাল জল ঠেলে যাওয়া আমার কাজ, টুকরো করে রাখা কাপড়ের সংগ্রহ শেষ হয়ে আসা মানে একটা সম্পর্কের মৃত্যু, আমি যা বয়ে নিয়ে যাবো আরেকটা জন্ম পর্যন্ত।
আমার বলা প্রতিটা শব্দে যেভাবে জুড়ে যায় একটা করে চন্দ্রবিন্দু, অথবা কেবল মনে হয় শুধু চন্দ্রবিন্দু জুড়ে যাচ্ছে। সেভাবে আমার মনে হয় কোনো লেখকের চরিত্র সহজ হওয়া উচিত নয়, সহজ হওয়া উচিত নয় তাদের যৌনতা। পাশ দিয়ে হেঁটে যায় একটা করে পুরনো সাইকেলের কালো টায়ার, সেখানে আমি দেখি আমার পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে আমার শৈশব। অথচ কী অদ্ভুত, আমি কিছুতেই পারি না অন্য কাউকে বিশ্বাস করাতে, যে আমার মনে কেবল দুঃখ আছে, আমি প্রেম পারি না।