প্র চ্ছ দ কা হি নী
সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে মৃত্যুর সঙ্গে দাবা খেলার সেই সাদা-কালো দৃশ্যটি আজ বহুল প্রসিদ্ধ। মৃত্যুকে নয়, তাঁর উল্টো দিকে বসে থাকা চতুর্দশ-শতকের ক্রুসেড ফেরত নাইট অ্যান্টোনিয়াস ব্লক চরিত্রের অভিনেতাকে এরপর আমরা বড় ভালোবেসে ফেলি। অথচ সেই ভালবাসার মুহূর্তে চকিতে ভেসে ওঠে বহুকাল আগে দেখা একটি চলচ্চিত্রের স্মৃতি। তখন ভিসিআর-এর যুগ। মনে পড়ে ভিসিআর ভাড়া করে এনে বন্ধুরা মিলে দেখা হয়েছিল ‘দি এক্সোর্সিস্ট’। নিখাদ ভূতের ভয় পাওয়ার বাসনা আর কি!পরে ইন্টারনেট আসার পরে ম্যাক্স ভন সিডো-কে খুঁজতে গিয়ে আইএমডিবি-তে দেখি, আরে ইনি তো সেই যাকে আমরা অনেককাল আগে প্রথম দেখেছিলাম এক্সোর্সিস্ট ছবিতে! জেসুইট যাজক ল্যাঙ্কেস্টার মেরিন নামক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এটুকু বলতে পারি ইভিল স্পিরিটের বিপরীতে এই জেসুইট যাজকের মুখে এমন এক কাঠিন্য ছিল যা আজও ভোলা মুশকিল।
ম্যাক্স ভন সিডোর জন্ম হয় ১০ই এপ্রিল ১৯২৯ সালে দক্ষিণ সুইডেনের লন্ড শহরে। বাবা ছিলেন এথনোলজিস্ট এবং লন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের একটি শাখার অধ্যাপক। মা বিদ্যালয়ে পড়াতেন। পরিবারের ধর্মীয় উত্তরাধিকার মেনে ভন সিডো লুথারান হিসেবে বড় হন, কিন্তু পরবর্তী কালে তিনি অজ্ঞেয়বাদী হয়ে যান। ভন সিডো জীবনের শুরুর দিকের দু-বছর সুইডিশ আর্মিতে কাটান এবং সেখানে থাকার সময় এক ভ্রাম্যমাণ সার্কাসের দলের মুখ্য অভিনেতার নামের থেকে ‘ম্যাক্স’ অংশটি ধার নেন। পরবর্তীকালে স্টকহোমের রয়্যাল ড্রামাটিক থিয়েটার (ড্রামাটেন) স্কুল থেকে অভিনয় শিখে মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন। ড্রামাটেনের সময়ই তিনি নিজে একটি নাটকের দল তৈরি করেন যার সদস্য ছিলেন আরেক প্রথিতযশা অভিনেত্রী ইনগ্রিড থুলিন। ১৯৫৫ সাল নাগাদ মালমো শহরে চলে আসেন এবং মালমো সিটি থিয়েটারে যোগ দেন। এই মালমো সিটি থিয়েটারেই সেই সময় নির্দেশনা দিচ্ছিলেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ইঙ্গমার বার্গম্যান। বার্গম্যানের ১৯৪৯ সালের ছবি ‘প্রিজন’-এ একটি ছোট চরিত্রের জন্য তিনি প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত হন কিন্তু বার্গম্যান পরে নাকচ করে দেন। অবশেষে ১৯৫৭ সালে ‘দি সেভেন্থ সিল’ ছবিতে ভন সিডো দেখা দেন চতুর্দশ শতকের নাইট, অবিস্মরণীয় অ্যান্টোনিয়াস ব্লক হিসেবে। অ্যান্টোনিয়াস ব্লক তো বটেই, মধ্যযুগে ব্ল্যাক ডেথের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই দার্শনিক ছবি সমৃদ্ধ হয়ে আছে এর অনুপম চিত্রভাষার জন্য। ব্লক ও তার সঙ্গীদের শেষের দিকের সেই বিখ্যাত ডান্স অফ ডেথ, সিল্যুয়েট নামক চিত্র-প্রতিকৃতির সর্বোত্তম উদাহরণ হিসেবে আজও স্বীকৃত।
অতঃপর বার্গম্যানের সঙ্গে সবমিলিয়ে মোট এগারোটি ছবি! ১৯৫৮ সালে নির্মিত ‘দি ম্যাজিশিয়ান’ ছবির ভগলার উনবিংশ শতাব্দীর একজন ভ্রাম্যমাণ জাদুকর। ভগলার দাবি করে জাদুবিদ্যার দ্বারা মানুষের রোগ সারিয়ে দেওয়ার তার অতিজাগতিক ক্ষমতা আছে। ভন সিডো গোটা ছবিতে এক প্রকার কোনো কথাই বলেন না। তাঁর মূক অভিনয় অর্ধ-ভণ্ড ও অর্ধ-প্রতিভাবান এই রহস্যময় চরিত্রটিকে প্রাণ দিয়েছে নিখুঁতভাবে। জি কে চেস্টারটনের নাটক ‘ম্যাজিক’ থেকে বার্গম্যান একটি নাটক প্রযোজনা করেছিলেন। মনে করা হয় ঐ নাটকের প্রভাব আছে এই ছবিটির মধ্যে। সাইকোলজিক্যাল হরর বলে পরবর্তীকালে যে ছবিগুলিকে চিহ্নিত করা হয় তার আদি শুধুমাত্র নয়, উন্নততম রূপ বলা যায় এই ছবি ও অবশ্যই বার্গম্যানেরই ১৯৬৮-র ‘আওয়ার অফ দি উল্ফ’ ছবিটিকে।
‘কিছু বছর আগে ফ্রিজিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বলট্রাম দ্বীপে তাঁর বাড়ি থেকে শিল্পী জোহান বর্গ কোনো রকম চিহ্ন না রেখে উধাও হয়ে যান। তাঁর স্ত্রী আলমা কাগজপত্রের মধ্যে খুঁজে পাওয়া জোহানের ডায়রিটি পরে আমাকে দেন। এই ডায়রি ও আলমার বিবরণ এই ছবির ভিত্তি।’ – ‘আওয়ার অফ দি উল্ফ’-এর শুরুতে স্ক্রিনে ভেসে ওঠে এই বক্তব্যটি। শিল্পী জোহান বর্গ ও তাঁর স্ত্রী আলমার চরিত্রে অভিনয় করেছেন যথাক্রমে ম্যাক্স ভন সিডো ও বিখ্যাত লিভ উলম্যান! ভীতিপ্রদ বিভিন্ন দৃশ্য যেগুলি তারা দেখতে পেত এবং এর প্রভাবে ইন্সমনিয়া, বর্গের ডায়রির ভয়াল চিত্ররূপ এই ছবি। মোজার্টের ১৭৯১ সালের অপেরা ‘দ্য ম্যাজিক ফ্লুট’, ই.টি.এ. হফম্যানের ১৮১৪ সালের উপন্যাস ‘দি গোল্ডেন পট’ এবং নিজের দেখা কিছু ভয়াবহ স্বপ্ন থেকে এই ছবির চিত্রনাট্য রচনা করেছিলেন বার্গম্যান। লিভ উলম্যানের মুখের উপর আরোপিত আবেগ ও আতঙ্কের বিপরীতে ভন সিডোর বিদগ্ধ যন্ত্রণা ছবিটিকে ধীরে ধীরে পৌঁছে দিয়েছে ব্যক্তি মানুষের হৃদয়ের অন্ধকার দিকের গভীরে। অনেকে মনে করেন ছবিটির বিষয় আসলে বার্গম্যানেরই অল্টার-ইগো।
১৯৬৮ সালে নির্মিত ‘শেম’ ছবিতে ঐ একই জুটি ভন সিডো ও লিভ উলম্যান দুই প্রাক্তন বেহালা বাদকের চরিত্রে অভিনয় করেন। নিঃসন্তান এই দম্পতি শহর থেকে দূরে একটি নিরিবিলি জনপদে থাকে। ভোরবেলার দৃশ্য দিয়ে ছবি শুরু হয়। ঘুম থেকে উঠে জ্যান (ভন সিডো) ইভাকে (লিভ উলম্যান) জানায় সে একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছে, “আমি দেখলাম আমরা অর্কেস্ট্রায় ফিরে গেছি, পাশাপাশি বসে চতুর্থ ব্র্যান্ডেনবার্গ কনচের্তোর মহড়া দিচ্ছি, ধীর লয়ের…”। জ্যানের মুখে হাসি, সুরটা সে গুনগুন করছে। ক্ষণিক, কিন্তু অভিনয় গুণে মনে থেকে যায় এই দৃশ্যটি। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই দু’টি মানুষের সম্পর্কে এরপর অবক্ষয় নিয়ে আসে সুইডেনের গৃহযুদ্ধ। ঘর-বাড়ি ফেলে তাদের চলে যেতে হয়। যুদ্ধ প্ররোচনা দেয় নৈতিক অধঃপতনে, তাই এই ছবির নাম লজ্জা। ভিয়েতনামের যুদ্ধের সময় ছবিটি নির্মিত হলেও বার্গম্যান মনে করেন ভিয়েতনামের সঙ্গে এই ছবির কোনো সম্পর্ক নেই। ১৯৬৯-র ‘দি প্যাশন অফ অ্যানা’-তেও ভন সিডো ও লিভ উলম্যান!
‘দি প্যাশন অফ অ্যানা’ ছবিটির লিংক
স্থান একইভাবে শহর থেকে দূরের একটি নিরিবিলি জনপদ। সদ্য বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটেছে ভন সিডো অভিনীত আন্দ্রেয়াস উইঙ্কেলম্যানের। নির্জন স্থানটি ও মানসিকভাবে পতিত একাকী উইঙ্কেলম্যান কোথায় যেন মিলেমিশে এক হয়ে যায়। উইঙ্কেলম্যানের সঙ্গে আলাপ হয় অসুখী দম্পতি এলিস (এরল্যান্ড জসেফসন) ও এভার (বিবি অ্যান্ডারসন)। এভার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মধ্যেই এভার বন্ধু বিধবা অ্যানার (লিভ উলম্যান) সঙ্গে উইঙ্কেলম্যান প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। অ্যানাও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। চোখের সামনে অ্যানার স্বামী ও ছেলে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এই মানসিক আঘাত থেকে সে এখনো বেরোতে পারেনি। উইঙ্কেলম্যান ও অ্যানা একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। অ্যানা একদিন উইঙ্কেলম্যানকে এই দুর্ঘটনার কথা সবিস্তারে বলে। বার্গম্যানের ক্যামেরা অ্যানাকে ক্লোজআপে এমন ভাবে ধরে থাকে যেন সে জীবন্মৃত! ভন সিডোর কঠিন মুখাবয়বে কখনো চাপা আবার কখনো উচ্চকিত আবেগ কী অভিনব রসের সঞ্চার করতে পারে তা শুধু অনুভবের বিষয়, ব্যাখ্যার নয়। ছবিতে এরকম দৃশ্য আছে যেখানে ভন সিডো নিজেই বলছেন, “আমার মনে হয় আন্দ্রেয়াস উইঙ্কেলম্যান চরিত্রটি দুরূহ যেহেতু সে চেষ্টা করছে বাইরের পৃথিবী থেকে নিজেকে গোপন করে রাখতে… একজন অভিনেতার কাছে শক্ত কাজ হল অভিব্যক্তির অভাবকে ব্যক্ত করা।” মানুষে মানুষে সম্পর্কের রহস্য আরো ঘনীভূত হয় যখন আমরা দেখতে পাই এরই মধ্যে কারা যেন একের পর এক পশু হত্যা করে চলেছে! ‘আওয়ার অফ দি উল্ফ’, ‘শেম’ ও ‘দি প্যাশন অফ অ্যানা’ এই তিনটিকে মিলিয়ে একটি ট্রিলজি ধরা হয়। মানুষের জীবনের গভীরে নিহিত অশান্তির সঙ্গে পলায়ন মনোবৃত্তি, অপরাধবোধ ও আত্ম-ঘৃণার মত বিষয় এসে পড়েছে ছবিগুলির মধ্যে।
তবে বার্গম্যানের সবচেয়ে বিখ্যাত হল ‘ঈশ্বর ট্রিলজি’, অর্থাৎ ‘থ্রু এ গ্লাস ডার্কলি’, ‘উইন্টার লাইট’ এবং ‘দি সাইলেন্স’। ধর্ম, দর্শন ও যৌনতা এই তিনটি বিষয় ব্যক্তি বার্গম্যানকে সারা জীবন যতখানি আলোড়িত করেছে, এই তিনটি ছবি তারই শৈল্পিক বহিঃপ্রকাশ। যৌন-উদ্বেগ বার্গম্যানের সারা জীবন-ব্যাপী একটা সমস্যা বলা যেতে পারে। যৌনতা নিয়ে খৃস্টীয় পাপ-বোধ ও ঈশ্বরের অস্তিত্ব-অনস্তিত্বের সঙ্গে যৌনতার সম্পর্ক এই ট্রিলজিকে সমৃদ্ধ করে রেখেছে। ১৯৬১-র ‘থ্রু এ গ্লাস ডার্কলি’ ছবিতে সিজোফ্রেনিক কারিনের (হ্যারিয়েট অ্যান্ডারসন) স্বামী মার্টিনের চরিত্রে ভন সিডোর পরিমিত ও টানটান অভিনয় এক দর্শনীয় ব্যাপার। সদ্য মানসিক হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাবা ভাইয়ের কাছে এসেছে কারিন। চব্বিশ ঘন্টার রিয়েল টাইমে ‘ঈশ্বর আছেন এবং তিনি দেখা দেন’ এই সন্দর্ভ রচনা করেছেন পরিচালক! ১৯৬৩-র ‘উইন্টার লাইট’–এ ভন সিডো অভিনয় করেছেন জোনাস নামের উদ্বেগজনিত মানসিক অসুস্থতায় ভোগা আত্মহত্যাকামী একজন জেলের চরিত্রে। চীন অ্যাটম বোমা তৈরি করছে এই খবরটি কানে আসার পর থেকেই জোনাসের মানসিক সমস্যা বেড়ে যায়। জোনাসের স্ত্রী কারিন (গানেল লিন্ডব্লম) অন্তঃসত্ত্বা। ছবিটির কেন্দ্রিয় চরিত্র লুথেরান যাজক টমাস (গুনার জরস্ট্রান)। সুইডেনের ছোট্ট একটি গ্রামের চার্চের যাজক টমাস বয়সজনিত কারণে ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে না। এই ঠাণ্ডা সহ্য করতে না পারার ব্যাপারটি আসলে টমাসের ক্রম-ক্ষয়িষ্ণু ঈশ্বর-বিশ্বাসের প্রতীক। জোনাস ও কারিন যখন মানসিক শান্তির জন্য টমাসের কাছে আসে, টমাস তখন ঈশ্বরের সঙ্গে নিজের সমস্যাসঙ্কুল সম্পর্কের কথা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারে না। অসহায় জোনাসের কায়-ক্লিষ্ট মুখ, ভন সিডোর মত অভিনেতা ছাড়া অরগ্যানিকালি এই রকম একটি চরিত্রকে ধারণ করার ক্ষমতা আর কারোর ছিল না। টমাস শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করে। ‘দি সাইলেন্স’–এ ভন সিডো নেই। উল্লেখ অপ্রাসঙ্গিক হবে না, বহু-বিতর্কিত ‘দি সাইলেন্স’-এর যৌনতা আসলে ‘ঈশ্বর নিশ্চুপ’-এর প্রতিভাস।
‘ভার্জিন স্প্রিং’, ‘ওয়াইল্ড স্ট্রবেরীজ’, ‘সো ক্লোস টু লাইফ’, ‘দি ফেস’ ও ‘দি টাচ’ হল ভন সিডো অভিনীত বার্গম্যানের বাকি ছবিগুলি। বলিষ্ঠ অভিনয়ের জন্য তাঁর স্বতন্ত্র উপস্থিতি এই ছবিগুলিতেও গভীরভাবে টের পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে বার্গম্যানের নির্দেশনায় নাটকেও তাঁর অভিনয় চলতে থাকে। ‘ক্যাট অন আ হট টিন রুফ’, ‘পিয়ার জিন্ট’, ‘দি মিস্যানথ্রোপ’, ‘ফাউস্ট’ ইত্যাদি নাটকের মূল চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছিলেন। দ্বিতীয় বিবাহের পর ভন সিডো ২০০২ সালে ফ্রান্সের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং বাকি জীবন ফ্রান্সেই কাটিয়ে দেন। সত্তর বছরের কর্মজীবনে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত দেড়শোর উপর ছবিতে কাজ করেছেন। করেছেন অনেকগুলি টিভি সিরিজও। ২০১২ সালে মার্কিন টিভি সাংবাদিক চার্লি রোসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বার্গম্যানের ব্যাপারে বলতে গিয়ে ভন সিডো জানিয়েছিলেন, “দৃশ্য গ্রহণের মাঝে আমরা ধর্ম সংক্রান্ত ব্যাপারে অবশ্যই আলোচনা করতাম এবং আমার একবার মনে পরে আমি বলেছিলাম এই শাশ্বত জীবনে আমার বিশ্বাস নেই, আমাদের মৃত্যু হয় এবং সেটাই শেষ… এতে সে বলেছিল না না না না, আমি তোমাকে বলছি তুমি এখানে ভুল করছ… আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি বলতে চাইছ মৃত্যুর পরেও তুমি কোথাও থাকবে? হ্যাঁ, সে বলেছিল, আমি চলে যাওয়ার পর তোমাকে আমি দেখাবো, আমি তোমাকে বলবো, আমি তোমাকে দেখাবো…”। ভন সিডো এরপর আর জানাননি মৃত্যুর পর বার্গম্যান তাঁকে কিছু বলেছিলেন কিনা। কিন্তু দীর্ঘ নির্মেদ সুকেশ ব্যক্তিত্বপূর্ণ কন্ঠস্বরের অধিকারী ম্যাক্স ভন সিডো (মৃত্যু ৮ই মার্চ ২০২০) ও পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার ইঙ্গমার বার্গম্যান যে একে অপরের পরিপূরক ছিলেন, এগারোটি ছবি ও এইসব গভীর কথোপকথন থেকে তা সহজেই অনুমান করা যায়।