Hello Testing

4th Year | 3rd Issue | June-July

৩০শে আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 16th July, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

ধা রা বা হি ক ।  শেষ পর্ব

রা ণা   রা য় চৌ ধু রী

আবার রাণার কথা

rana2

'ঐ হলুদ বাড়িটাই তুমি'

একা একটা ঘরে শুয়ে আছি। একা থাকতেই ভালো লাগে আজকাল। পাহাড় থেকে দীর্ঘ বাতাস আমার জন্য মায়ের স্নেহ ভালোবাসা  বয়ে নিয়ে আসছে।

কারোর জন্য কিছু বয়ে নিয়ে যাওয়া খুব আনন্দের। আমার এক ছাত্রের বাবা, মাঝবয়সী দেখেছিলাম। সেদিন আমিও সাইকেলে বাজার করে ফিরছি, দেখি উনি কবে কীভাবে যেন বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। বাজার আর টানতে পারছেন না,  আমাকে বললেন,  ‘এগুলো বাড়ি পৌঁছে দেবে?’ আমি দিলাম।  বয়ে দিলাম। এর মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই, কিন্তু একটা অল্প স্রোতের মতো আনন্দ আমি পাচ্ছিলাম।
আনন্দ সংগ্রহ করতে হয়। আমি আনন্দ সংগ্রহে সাইকেলে ঘুরি। ট্রেনেও। এই আনন্দ সংগ্রহে এসেছি, এখানে। এই পান্থশালায়।

আনন্দ কাছেই আছে। আমার দ্বিতীয় আমির নাম আনন্দ।

বোবাকে তুমি শত্রু দাও। বোবার শত্রুর প্রয়োজন গো! না হলে সে জাগবে না, না হলে সে চুপ করে এই সমতল সংসারে রয়ে যাবে চুপে আড়ালে গানহীন মানহীন ক্রোধহীন মলয়বাতাসহীন।
ওগো বোবাকে জাগাও, বোবাকে উৎসবের উপহার স্বরূপ তুমি খুব লাজুক একটা শত্রু দাও, না-হলে ও কী করে বুঝবে ফুলের টব কত ভারী কত অহংকারী!
ওগো বোবাকে‌ দুর্গমের পথ বলে দাও, ওগো ওকে একটা খাপ খোলা শত্রু দাও…

গত বছর আম খেয়ে আঁটি চুষে, দুটো আঁটি পিছনের বাগানে ফেলেছিলাম।
কিছুদিনের মধ্যেই দেখি দুটো শিশু আমগাছ। মনের ভিতর আনন্দ, উপচে পড়তে লাগলো।
আহা ছায়া পাবো! গাছের ছায়া! গাছের ছায়াকে আমার বরাবর মা মনে হয়। ঠান্ডা মায়া-মমতা যেন অপেক্ষা করছে আমারই জন্য।
একদিন দেখি দুটো, একটা হয়ে গেছে। মনটা খারাপ হলো। বুঝলাম মৃতটি থাকার ছিল না। লড়াইতে হেরে গেছে। হয়তো নার্সারি স্কুলের কড়া নিয়ম সে সহ্য করতে পারেনি।
আরেকটি রয়ে গেছে। একবছর বয়স তার।
আমি রান্নাঘরের জানলা দিয়ে হঠাৎ হঠাৎ তাকে দেখতে পাই। লকলক করে, নিজের আনন্দে বেড়ে উঠছে, আমি অভিভূত সবুজের এই বৃদ্ধি দেখে। পাতাগুলো নরম, চকচকে সবুজ, ইশারায় আমায় ডাকে, আমি যাই, বলি গান শোনাও, সে তার নীরবতার গান শোনায়।
এইসব ছোট ছোট প্রাণ, প্রাণের আনন্দ, বেড়ে ওঠা আমাকেও তরুণ থেকে তরুণতর করে তোলে। প্রেম জাগে ক্ষীণ ভিতরে ভিতরে, যেন ভিতরের ঘরে কেউ লন্ঠন জ্বেলে রেখে গেল। সবুজ আলোর লন্ঠন…

প্রবল বৃষ্টিতে আমি যেন ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাই
আমার ‘আমি’ যেন গড়িয়ে গড়িয়ে

নীলনদে মেশে…

বসন্তকালের এই প্রবল ভালোবাসা
এবং আবেগ  কেমন উড়ে উড়ে যাচ্ছে দেখ ওই
পালতোলা মনভোলা ছোট ধুলোটির দিকে

তুমিই আমার বসন্তকালের
সেই পথভোলা ধুলো কাছে আছো
ভেজানো দরজার ওপারে

রেললাইনের ওপারে তোমাদের বাড়ি আমি কল্পনা করি ঐ হলুদ বাড়িটাই তুমি,

সমাপ্ত

আরও পড়ুন...