Categories
2022_aug kobita

শানু চৌধুরী

ক বি তা

শা নু  চৌ ধু রী

সদাগর

উৎসর্গ – সের্গেই আক্সাকভ


সদাগর ছুটে যায় কেয়া ফুল নিয়ে
ছোট সেই মেয়ে কবে আগুনের হবে
কুঠুরিতে তেল নেই নেই কোনো দাসী
কাঠ হয়ে পুড়ে গেল সাদা বেনারসী

সদাগর ছুটে যায় কেয়া ফুল নিয়ে
ভোরের আকাশ কবে শিকল জড়াবে
রূপের ডালিটি তার শুধু খোয়া যায়
মীনের আলোতে পার হলে দয়াময়

সদাগর ছুটে যায় কেয়া ফুল নিয়ে
বুকের ভেতরে তার বুনো আলো তুলে
ছুঁয়ে দেয় শিলাগুলো মহলের পাশে
ধুধু করে ফল সব না বলা সুবাসে

সদাগর ছুটে যায় কেয়া ফুল নিয়ে
সবুজের গানগুলো একাকার হলে
ছোট মেয়ে কাছে গেলে চুমো দেয় বকে
ধবধবে হাত গেলে পাথরের শোকে

সদাগর ছুটে যায় কেয়া ফুল নিয়ে
বিনি ঘোড়া ঘোরে তাই ঘাসেদের বুকে
খাবারের দেশে খোঁজো মড়কের গুণ
বিবেচনা তুলে দিয়ে কেটেছ ফাগুন

সদাগর ছুটে যায় কেয়া ফুল নিয়ে
কাটে রাত সব শেষে আঘাত কুড়িয়ে
মহলের গায়ে তাই লাল লাল দাগ
চোখে ফুটে ওঠে দেখি আগুনে পরাগ

 

রুদাগির মুখ

সাপের ছায়ার কাছে ফুরিয়ে এসেছি
চলে গেলে তামা নিয়ে বালোচেম দূত
তুমি কি ভুবন সেই দূষণে ডাহুক?
নেমে এলে জালা নিয়ে রুদাগির মুখ

উটের আহত পায়ে ঘুঙুর পচেছে
ফুরিয়ে এসেছে ধূপ সকালের ঘাটে
মনের মেবারে আজ ছায়া লেগে আছে
জলের মরুতে তাই টোকা মেরে নাচে

রাতের সুরের কাছে শুনেছি বাগেশ্রী
রঙ থেকে তুলে দেখি বোকার তরজা
তুমি কি এখনো সেই দূরের ডাহুক?
ঋতুদের দোষ নিয়ে তুলেছ ঝিনুক

মড়ক লেগেছে খুব টান টান হয়ে
রেঢ়ির তেলের কুপি পড়েছে হঠাত
শিশিরে ভেজানো নখ গরমের কাছে
কুবাতাস নিয়ে জানি হয়েছে ছোঁয়াচে

দোকানে দোকানে খুব ছবি হেসে যায়
রুটির আগুনে ঘামে মানুষ উনুন
তুমি কি এখনো সেই কাচের ডাহুক?
উড়ে যাবে জেনে বুঝি ফেরালে চিবুক

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug uponyas

আঁস্তাকুড়ের এলেকট্রা । পর্ব ৩

উ প ন্যা স । পর্ব ৩

ম ল য়   রা য় চৌ ধু রী র

জাদুবাস্তব উপন্যাস

malay_roy_choudhury

আঁস্তাকুড়ের এলেকট্রা

(গত সংখ্যার পর)

        পূর্বপুরুষ না থাকলেও উত্তরাধিকার বর্তায়, পাখিরা ওড়ে তবু কিন্তু হাওয়ায় দাগ পড়ে না।

        মাঘ মাস আসতে না আসতেই পাতারা সবুজ রঙ খরচ করে ফ্যালে। ধুলো, ধুলো, ধুলো।

        মুখমেহনের স্বাদ, উল্লাসধ্বনি, স্ফীতির কনকনে চড়াই-উৎরাই, কেবল ঘণ্টাখানেকের উগ্রতা।

        তোর মতো তোর মতো তোর মতো অনুচক্রিকা, ভাবতে পারিনি আমিই ঘুটি, আমিই জুয়া।

 

জগদীশ আর ওর বউ একবার দুজনে এসেছিল লাক্ষাদ্বীপে, কাভারাত্তিতে, আমার কাছে, তোরা দুজনে নৈনিতালে আর আরিয়ান আজমেরের হোস্টেলে। বৈদেহী ক্লাস টুয়েলভে, পরীক্ষায় টেন্সড আপ।

অমরিন্দর কয়েক পেগ টানার পর রোজই সন্ধ্যায় বলত, প্রধান ইউ হ্যাভ স্পয়েল্ড ইওর লাইফ, জীবন নষ্ট করে ফেললে, এখনও চান্স আছে, লাইফ পার্টনার যোগাড় করে নাও, নয়তো চুল পেকে গেলে ভিষণ লোনলি ফিল করবে।

বিয়ে করার জন্য আমাকে চাপ দেবার পেছনে যে অন্য উদ্দেশ্য আছে, তা তখন বুঝতে পারিনি।

লোনলি ? একা ? নিঃসঙ্গ ? নাঃ, মনে হয়নি কখনও যে আমি একা। এইজন্য নয় যে তুই আছিস আমার জীবনে, আমি তোর পালক পিতা, তোর কথায় ফাউনডিং ফাদার, আসলে আমার চরিত্রে একাকীত্বের বিষ নেই রে, একেবারেই নেই। ফাইল খুললেই মানুষের ভিড় দেখতে পাই, তারা আমার দিকে ফ্যালফ্যাল চেয়ে থাকে।

 

পালক পিতা বলতে পারব কি নিজেকে, ধাত্রীবাবা?

একরাতের ঘটনা বলি তোকে ; তখন আমি পুডুচেরিতে। তোর বারো ক্লাসের আইডেনটিটি কার্ডের ফোটো দেখে অব্দি পরাভূত টান অনুভব করেছি। কার্ডটা পাবার পর কতবার যে দেখেছি ফোটোটা। আর তার ফলে কী হল জানিস ? স্বপ্ন দেখলুম তোকে, স্বপ্নে পেলুম তোকে, ভরাট শরীর, আর আমার, বহুদিন পর, এই বয়সে, ভেবে দ্যাখ, এই বয়সে আমার নাইটফল হল।

উড়তে লাগলাম, ঝড়ের চক্রব্যুহে থেকে অতিঝড়ের চক্রব্যুহে, বাজপাখি হয়ে, ঈগল হয়ে, নখের রক্ত চাটছি, নিচে চোখ মেলে দেখছি উপত্যকায় তুই দৌড়োচ্ছিস দু-হাত দুই দিকে মেলে, পোশাক পরিসনি, নামছি, নামছি, নামছি, ব্যাস, ছোঁ মেরে তুলে নিলাম তোকে ; কিন্তু তুই-ই আমাকে খেতে লাগলি, বললি, বদলা, বদলা, প্রতিশোধ, কারাগারে আটক রাখার প্রতিশোধ।

তোর কনকনে দেহ, বললি, আগুনের ফোয়ারা দিন, বরফকে গলিয়ে ফেলুন, গলিয়ে ফেলুন, দ্রুত নয়, দ্রুত নয়, এক ঘণ্টা মানে ষাট মিনিট, প্রচুর সময় রয়েছে, অন্ধকারকে রোমশ হতে দিন, হাতের আঙুলের ডগায় দৃষ্টি নিয়ে যান, প্রচুর সময় আছে, সময়ই সময়।

 

ঘরের ভেতরে ঢুকে ঝোড়ো ঝড় যদি নিজের হাতে চুপিচুপি দরোজা বন্ধ করে দ্যায়, অন্ধকার পোড়োবাড়িতে আটক প্রতিধ্বনির ঢঙে, যেন গর্তের হৃদয়ে ইঁদুরের ধান জমা করার রাত।

 

বলা যাবে কি জীবন নষ্ট ?

স্বপ্নে তুই যবে থেকে আসা আরম্ভ করেছিস, তোর আইডেনটিটি কার্ডের ফোটোগুলো আর দেখি না। তোকে স্বপ্ন থেকে চলে যেতেও বলেছি একদিন স্বপ্নের ভেতরেই, তুই-ই আষ্টেপৃষ্টে শরীরের ফেরোমোন দিয়ে জড়িয়ে ধরলি, আমি ছাড়াতে পারলাম না, সারা স্বপ্ন ছেয়ে গিয়েছিল তোর উড়ালক্লান্ত সুগন্ধে।

আসলে নষ্টামির স্বপ্ন দেখি ; ভালো লাগতে আরম্ভ করেছে রে, স্বপ্ন, উঞ্ছমজুরিতে-পাওয়া সম্রাজ্ঞীর প্রেরণার অপ্রত্যাশিত আক্রমণে কাহিল। এছাড়া অন্য উপায় আমার জানা নাই, আয়ত্বে নেই।

আহ, কি আরাম, কি আরাম, কি আরাম।

 

জীবন নষ্ট কাকে বলে ? জগদীশের ছোটোবোন চিন্ময়ীর বর অর্নব চ্যাটার্জি প্যাংক্রিয়াটিক ক্যানসারে মারা গেল, যেদিন চিন্ময়ীর শাশুড়ির শ্রাদ্ধের ভোজ, সেই দিনকেই। রান্নাবান্নাও আরম্ভ হয়ে গিয়েছিল শাশুড়ির শ্রাদ্ধের ভোজের জন্য। অতিথিরাও বাইরে থেকে এসে পড়েছিল অনেকে। আমিও গিয়েছিলাম জগদীশের সঙ্গে। শ্মশান থেকে যখন আমরা ফিরে এলাম, চিন্ময়ী কান্না থামিয়ে বলেছিল, কী পেলুম সারা জীবন ? আইবুড়ো নাম ঘোচাবার জন্যে একটা বর, আর বাঁজা নাম ঘোচাবার জন্যে দুটো বাচ্চা, সারাজীবন তো ও নিচের তলায় মায়ের সেবা করায় ম্যা ম্যা ম্যা ম্যা করে কাটিয়ে পাড়ি মারল ; এত বড় বাড়িটার কী হবে এখন, বাগানের, গাছগুলোর, গাছের ফলের, ফুলের ? ছেলে আর মেয়ে বিদেশেই থাকবে। আমি দোতলায় শুচ্ছি দ্বিতীয় বাচ্চাটা হবার পর থেকে। আমি যে পৃথিবীতে আছি তা ওর খেয়াল ছিল না কখনও। বিধবা শাশুড়ির জন্যে চারবেলা টাটকা নিরামিষ রেঁধে কেটে গেল; তিনি চলে গেলেন, ছেলেকেও সঙ্গে নিয়ে গেলেন, সগগে গিয়ে স্যাবা নেবার জন্য।

কী বলবি তুই?

 

আমি তো উচ্চিংড়ের স্বরলিপিতে গাওয়া ফুসফাসুরে গান ; বেড়াজালের হাজার যোনি মেলে ধরে রেখেছি ইলশে ঝাঁকের বর্ণালী। তাকিয়ে-তাকিয়ে যে যুবতীর কৌমার্য নষ্ট করেছি, তারই অদৃশ্য হাতের মাংসল আলিঙ্গনে চোখে পড়েছে কাঁকড়ার আলোতরল বুকে আমার ছককাটা ঠিকুজি, শনি বক্রি, কালসর্পযোগ, কপালের বলিরেখায় গৃহত্যাগী বিষপিঁপড়ের সার। সে যুবতী স্বপ্ন ছেড়ে যেতে চায় না।

 

জগদীশ ব্যানার্জিকে বলেছিলাম তোর নামটা স্কুলেই সংশোধন করে এফিডেভিট আর গেজেট নোটিফিকাশান দিয়ে নেতি থেকে ইতি করিয়ে নিতে। জগদীশের স্ত্রী অমি, রাজি হয়নি, বেশ হ্যাঙ্গাম বলে নয়, স্পনসর যে করেছে তাকেই করতে হতো, আর আমি চাইছিলাম না যে তুই কখনও আমার উপস্হিতি তোর জীবনে টের পাস। আমার সাহায্যের ভারে ঝুঁকে পড়িস।

জগদীশের মেয়ে আর ছেলেও মত দিয়েছিল, নেতি নতুন ধরণের নাম, বদলাবার কোনোই প্রয়োজন নেই। তেইশ বছর বয়সে নিজেকে পালক পিতা, ফসটার ফাদার, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি, জাস্ট ইডিয়টিক, ভাবতেই পারিনি আমি একজন মুকুটপরা বাবা, তোর কুড়িয়ে পাওয়া বাবা। ফসটার মাদারদের বলে ধাই-মা; আমি তার মানে তোর ধাই-বাবা।

আমার মা যখন হাসপাতালের বিছানায়, তখন তাঁকে বলেছিলাম যে আমি বিয়ে এইজন্যই করিনি, কেননা আমি একটি শিশুর পালক পিতা। সংবাদপত্রের কাটিংটা দেখিয়েছিলাম মাকে, একজন নার্সের কোলে তুই, সদ্য আঁস্তাকুড় থেকে থানা হয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছিস।

নিয়ে আয় না, যাবার আগে চাক্ষুষ করে যাই, মার নাক থেকে কেরালিয় নার্স ভেন্টিলেটার সরিয়ে দিতে, বলেছিলেন।

আমি ওকে জানতে দিতে চাই না মা, যে আমি ওর জীবনে ঈগলপাখির মতন ডানা মেলে আছি; জগদীশ আর ওর বউ অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়েছে।

         সত্তা, মুহূর্ত, ভাষা, বীর্য, স্পন্দন, উৎসমুখ, কচুর জঙ্গলে ফড়িং, কলার মান্দাস, কাপড়ের খুঁট।

         বরফঝুরির গ্রন্হি শুভ্রবিষ অনন্ত শিকড়ে। কাদায় কলকা এঁকে রেখে গেছে কীট।

         কাঠঠোকরার বাসার ফুটোয় সাইক্লোনের মতন ফুঁ দিয়ে বাজানো বাঁশির সুর। বাজাও হে বাজাও

         বুদবুদেরা জাতিস্মর হয়, তা এক মাদারির ইন্দ্রজাল।

 

        এর মতো, ওর মতো, তার মতো, কারো মতো নয়।

        যেন এমন, যেন অমন, যেন তেমন নয়।

 

ব্যানার্জি পরিবারকে তোর স্হানীয় অভিভাবক করতেও চাপ দিতে হয়েছিল। ওরা প্রথমে রাজি হয়নি। অযথা ঢুকতে চাইছিল না আমার আর তোর জীবনের আগাম জটিলতায়। ব্যানার্জি যখন হরিয়ানায় হিসারের এসডিও ছিল তখন আমিই ওকে বাঁচিয়েছিলা জাঠদের গোঁসা থেকে।

ব্যানার্জি কীই বা করত! মারোয়াড়ি আর গুজরাতিদের ছেড়ে দেয়া ধর্মের ষাঁড়গুলো হেলতে দুলতে হরিয়ানায় পৌঁছে মাদি মোষদের সঙ্গে সঙ্গম করছিল আর মোষগুলোর কিছুদিনেই গর্ভপাত হচ্ছিল, শরীর খারাপ হচ্ছিল, দুধের ঋতু হাতছাড়া হচ্ছিল। ষেঁড়োমোষগুলোকে ওরা বেঁধে রাখে, প্রজননের ঋতুতে মাদিমোষদের চাষিরা নিয়ে যায় ষেঁড়োমোষদের মালিকের গোয়ালে; মালিকদেরও রোজগার হয়।

জাঠ পঞ্চায়েতের কর্তা জগদীশকে টিটকিরি মেরে বলেছিল, বাঙালি ষাঁড় চাপছে হরিয়ানার মাদিমোষের ওপর, সে আর কি করে বুঝবে যে গোরু আর মোষ একই প্রজাতির প্রাণী নয়।

ষাঁড়গুলো গরু খুঁজে পায় না হরিয়ানার পথে আর খেতে। তারা তাড়নায় এলে সামনে মাদিমোষ পেয়ে তাদের ওপরই চাপে।

আমি হিসারের জাঠসভার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে, গ্রামীণ উন্নয়ন বিভাগের বাজেট থেকে লোকসানের টাকার সরকারি ব্যবস্হা করে মন্ত্রীর রোষ থেকে বাঁচিয়েছিলুম ব্যানার্জিকে। তখন আমি ওই বিভাগে।

        পৌরুষের গরিমা, মৌমাছিদের প্রত্যাখ্যাত ফুলের মধু।

        অন্ধকারে স্পর্শের মর্মার্থের সাথে আলোয় স্পর্শের মর্মার্থের প্রভেদ,

        সব দেশের সন্ধ্যায় শঙ্খ বাজে না।

 

পশ্চিমবঙ্গের ক্যাডারের জগদীশ হারিয়ানাতে পোস্টিং নিয়েছিল। না, অমরিন্দরকে হাসিখুশি রাখার জন্য নয়; নয়তো সরকারি আধিকারিকদের তো শাসকদলের হ্যাঁ-তে হ্যাঁ আর না-তে না মেলানো ছাড়া কোনো কাজ নেই, পুঁজিবাদ হোক, সাম্যবাদ হোক, গান্ধিবাদ হোক, খিচুড়িবাদ হোক, হিন্দুবাদ হোক, মুসলমানবাদ হোক, গণতন্ত্র হোক, আমিরতন্ত্র হোক, একনায়কতন্ত্র হোক, দেশে-দেশে তা-ই তো ঘটে চলেছে।

না, না, বউয়ের জন্য নয়, হরিয়াণায় উপরি রোজগার করাকে সমাজ স্বাভাবিক মনে করে, তাই। পশ্চিমবাংলায় ঘুষও খায় আবার সৎসন্ন্যাসী সেজে থাকে, প্যাঁচ-পয়জার মারতে হয়, বুঝিয়েছিল জগদীশ, অমরিন্দরের সামনেই, ওদের অ্যানিভার্সারির ককটেল পার্টিতে, হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট হলে, চণ্ডীগড়ে। পশ্চিমবাংলায় ঘুষের গুড় খেয়ে ফ্যালে নেতারা। ব্যুরোক্র্যাটদের তোল্লাই দেয় না। হরিয়াণায় খাও আওর খিলাও, পেয়ারে, মজাদার চানা জোরগরম।

পশ্চিমবাংলাকে জগদীশ বলে ওয়েএএএএস্ট বেঙ্গল, বামপন্হীরা সুযোগ ওয়েএএএস্ট করেছে, তারপর যারা এলো তারা ওয়েএএএস্টকে সুযোগ দিয়েছে, যারা জঙ্গলে লুকিয়ে বিপ্লব করছে তারা নিজেদের জীবন ওয়েএএএস্ট করছে। কোথায় খাবে, খাওয়াবে, তা নয়, কেবল বাকতাল্লা। জগদীশের ওয়েস্টলাইন পাছার দ্বিগুণ হতে চলল।

প্রেগনেন্ট বলে অমরিন্দর তিন পেগ মাত্র সিঙ্গল মল্ট খেয়েছিল, ঘুষের। জাঠনি, মাতাল হয় না, মাতন লাগে।

আমি বাড়ির বাইরে ড্রিংক করতে পারি না, যুৎসই মনে হয় না, নিজেকে অগোছালো না করে, লুঙ্গি পরে, ঠ্যাঙ ছড়িয়ে, একা-একা, চুপচাপ, বসে ড্রিংক করি।

ক্রমশ

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug bangladesher_kobita

হাসিবুল আলম

গু চ্ছ  ক বি তা

হা সি বু ল  আ ল ম

hasibul

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব

ধরো,

কোথাও একটা দিয়ে তোমার শোবার ঘরে ঢুকে 

পড়েছে— অস্বস্তি। তোমার বালিশের পাশে চোখ

বড়ো বড়ো করে খেমটা নাচ নাচছে— মহাপৃথিবী।

কিংবা মিমস।

হয়তো ভাবছো— আফ্রিকার কোনো খেতে না

পেয়ে শুকিয়ে যাওয়া প্রেমিকার কথা। কিংবা

লাস ভেগাসও ভাবা যায়।

প্রলুব্ধ ডলারের ভেতর থেকে একটা চিরকালীন 

সাদা-কালো’র 

জর্জ ওয়াশিংটন হয়ে তুমি বন্দি— ছটফট করছো।

ছটফট করছো। 

তোমার কাছ থেকে প্রতিদিন একটু একটু করে

ঘুম হারিয়ে হেঁটে হেঁটে চলে যাচ্ছে অন্য কোনো

প্যারালাল ইউনিভার্সে— যেখানে যাবার বাহন

বিলুপ্ত হবার পরেই মানুষেরা আবিষ্কার করেছে

স্পেসশিপ।

তুমি ভাবছো— একবিংশ শতাব্দীতে কেউ ঘুমায় না।

কারও বন্ধুও হয় না।

তোমার জীবনের সমস্ত অর্জন অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্টের

কৌটোবন্দি হয়ে টাইম লাইনে ঘুরছে।

তুমি স্ক্রল করে করে তোমার গ্রামের বাড়িটা খুঁজছো।

খুঁজে চলেছো— একটা নিরালা নদী। 

অক্রূর ভাঁটফুল।

 

ধরো, তুমি বেঁচে আছো। ধরো, তুমি মরে গেছো—

তিনশ’ বছর আগে…

 

সংসারের গান

পৃথিবীর এই পাশে— এই বাঁকে— জ্যোতির্বিজ্ঞানের এক

ঘুপচিতে বসে তোমার সাথে দেখা।

কিছুদূর

এগিয়ে গেলেই নিঃসঙ্গতার দোকান হাতের

ডানে রেখে, একটা গলি ছিল— আশ্চর্যের।

মিস করে গেছি।

ধাক্কা খেতে খেতে দেখেছি শোরুম— আনন্দের।

ফুটপাতের দু’পারে

ছড়িয়ে ছিল— বিস্তীর্ণ হুল্লোড়, হৈচৈ, রকমারি বিজ্ঞাপন—

মানবিক সংকট। হাহাকার।

বিভিন্ন রঙে ঝলমল করতো— হাসি বিপণন কেন্দ্র।

বাহারি দাঁত। দাঁতের মাজন।

গরম গরম পরিবেশন করা হতো— প্রত্যাশা,

প্রত্যাখ্যান আর যুদ্ধ।

মানুষেরা হুমড়ি খেয়ে পড়তো— মূল্যহ্রাসের কৌতুকে।

দু’পয়সায় বিক্রি হতো এক লাঠি সুখ-লজেন্স। কিস্তিতে কেনা

যেতো— ঘুম।

অল্প কিছু সুদে এখানে সব কিছু ভাড়া দেওয়া হতো—

এই পৃথিবীতেই।

 

সব কিছু ফেলে পৃথিবীর এই পাশে— এই বাঁকে— আমি তোমার

কাছে এলাম। মহাজাগতিক দিনপঞ্জিতে অল্প কয়েকটা দিন

তোমার সাথে সঙ সাজবো বলে;

অথচ রাজনৈতিক বক্তব্যের মতোই

কোটি কোটি বছরের এই চক্রে— তুমিও সামান্য এক ‘সময়-নষ্ট’।

 

তুলনামূলক বিজ্ঞান 

ঘাস। সবুজ ঘাস। 

ঘাসের ওপর বসলেই মানুষেরা 

ঘাস ছেঁড়ে দু’হাতে। 

আচ্ছা,

ঘাসেদেরও কি কখনো

ইচ্ছে হয় না দু-একটা মানুষ ছিঁড়ে দেখতে? 

মানুষের ভেতরে মানুষ কতটুকু ঘাস?

কতখানি বদমাশ?  

 

শান্তি কাকা এবং ভোগবাদ বিষয়ক

শান্তি কাকা। আমাদের শান্তি কাকা।

সেই কোন ছোটবেলায় তাঁকে দেখেছিলাম—

মনে নেই ঠিকঠাক।

পিঠে একটা কালো দাগ ছিল— ডানপাশে।

কিংবা বামপাশেও হতে পারে।

কাকা বলতেন, এ হচ্ছে জন্মদাগ;

পৃথিবীতে নাকি আসতে চাননি তিনি।

জোর করে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে।

শাস্তিস্বরূপ সেই দাগ বয়ে বেড়াচ্ছেন এই জন্মে।

 

সারারাত সমুদ্রে মাছ ধরে সকালে 

ডাঙায় ফিরতেন তিনি।

ডাঙায় তাঁর ভাড়া করা ঘর। সমুদ্রে ছিল বাড়ি।

আমাদের সাথে গল্প করতেন, তাঁর বাড়ির গল্প।

বাড়িতে অন্ধকার। রাক্ষুসে বাতাস। 

সেখানে ‘সুদিন’ দুইদিন থাকতো, তো দশদিন 

থাকতো না। 

তথাপি তিনি সুখী ছিলেন।

এমনকি রূপচাঁদার সাথে পিরানহার বিয়েতে

আমাদেরও নিয়ে যাবেন বলে কথা দিয়েছিলেন!

 

শান্তি কাকা কখনো মাছ খেতেন না।

বলতেন, মাছেরা তাঁর সন্তান;

সন্তানদের বিক্রি করে খাওয়ার অপরাধবোধে

কাকা আমৃত্যু মৎস্য পূজারী ছিলেন;

আর প্রাণপণ ঘৃণা করে গিয়েছেন— নিজের জিভকে। 

 

পাগল বিষয়ক কর্মশালা

মাঝে মাঝে রাতে পাগল হয়ে যেতাম আমরা।

হয়তো সেদিন শুক্লা দ্বাদশীর রাত কিংবা মাথার ওপরে একা পঞ্চমীর চাঁদ।

আমরা স্রেফ পাগল হয়ে যেতাম। আমরা মানে, আমি আর আমার বন্ধুরা।

এ-ওর দিকে তাকাতাম। এ-ওকে দেখতো।

আর প্রচণ্ড হাসাহাসি করতাম আমরা নিজেদেরকে নিয়ে। 

 

কে কতোটা চোখে কম দেখে আজকাল? 

কারা কারা উচ্চতায় সবচেয়ে সবুজ? 

কার মাথার চুল নিয়মিত উড়ে যাচ্ছে আকাশে?

কাকে দেখতে কতোটা শুকনো লঙ্কা দেখায়? 

কে সবচেয়ে বেশি হাসে আমাদের মধ্যে? 

গতরাতে ঘুমোতে গিয়েও সারারাত ঘুমায়নি কে? 

 

নিজেরা নিজেদের দিকে আঙুল তুলে তুলে এসব বলতাম আর 

হাসাহাসি করতাম আমরা— আমাদেরকে নিয়ে মাঝেমাঝেই। 

এবং

চেয়ে চেয়ে দেখতাম— অসুখ ভর্তি মাথা নিয়ে এক-একজন 

উঠে যাচ্ছি ওপরে।  

 

পাগল হওয়া দরকার। আসলেই দরকার। 

মাঝেমাঝে পাগল হওয়া— জীবনের জন্য বেশ চমৎকার।

 

অক্রূর ভাঁটফুল 

তোমার ঠোঁটে বাতাস, জীবন জোগাচ্ছে— সামান্য অক্সিজেন, 

বেঁচে থাকা এরকমই, যেরকমভাবে থার্মোমিটারে, পারদে; 

মানুষ— রেখা টানা জ্বরে, জিনতাত্ত্বিক চিত্রে, 

সম্পাদ্যে-উপপাদ্যে, কেমন অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে, পিথাগোরাস, 

মেন্ডেল, কোপার্নিকাস, পাতাল কিংবা মহাকাশ,

এক পাতা অ্যাসপিরিন খেয়ে, ঝিম মেরে থাকে; 

জোড়ে-বিজোড়ে-সজোরে, কাকে কতোটুকু, সকালে-আকালে, 

কাছে পাওয়া যাবে? মৃত্যু তোমার, দুই কাঁধে থাকে, আমাকে 

ছোঁবে না, টাঙানো সাইনবোর্ড, মানুষের চোখ— ওদিকেই 

বেশি টানে; ধূমপানই স্বাস্থ্যকর, কেউ কি জানে? ধোঁয়ারা 

কতোটা— যত্নসহকারে, দুঃখগুলোকে, নির্মাণাধীন মানুষের 

ভেতরে, ধামা চাপা দিয়ে, হেঁটে যেতে বলে; হাঁটতে-হাঁটতে, 

কাঁদতে-কাঁদতে, সন্ধ্যা ৭টায়, ভূগোল বইয়ের ৫৭ পাতায়, 

ইথিওপিয়ায় তুমি; গৃহযুদ্ধ দেখবে, প্রেতরা সেখানে—

যুদ্ধ করে, যুদ্ধ করে, যুদ্ধ করে; হাতির দাঁতের অলংকার, 

অবগোলাপ, সাবমেরিন, ইথিওপিয়া কিংবা ঢাকায় তুমি,

সন্ধ্যা ৭ টায়— মানুষ মরে, মানুষ মরে, মানুষ মরে; গাড়িচাপা, 

ছুরিকাঘাত, আত্মহত্যা; তোমার ঠোঁটে বাতাস, 

মানুষ হাঁপাচ্ছে, এখন দরকার— অক্সিজেন, কিংবা ভাঁটফুল, 

সামান্য ভাঁটফুল, অক্রূর ভাঁটফুল।

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug bangladesher_kobita

মোহাম্মদ হোসাইন

বাং লা দে শে র  ক বি তা

মো হা ম্ম দ  হো সা ই ন

বিষণ্ণ দেয়াল

একটা বিষণ্ন দেয়াল এসে দাঁড়িয়ে থাকে।

মানুষের মতো। 

আমার ভুল ভাঙে না।

 

চশমা হেঁটে যায়

চশমার সক্ষমতা মানুষের চে’ বেশি

দূরবর্তী কোনো নদী হয়তো মানুষ চেনে

পা চেনে। দেয়াল বোঝে না। 

 

চিরদিন মানুষ সঙ্গীহীন ছিল

চিরদিন মানুষ বিষণ্ণই থেকেছে… 

 

কামফুল

অজস্র কামফুল ফুটে আছে।

অজস্র কাম ফল 

গূঢ়ার্থ জানে বৃক্ষ, জানে পাখিদল

সমুদ্রও ঢেলে দেয় তীব্র কামের ফেনা 

শামুক ও ঝিনুকের লালায়

বজ্রের কাম লুকনো মেঘে মেঘে

নাদে ও নিনাদে…

 

মৃত যে সেই কামহীন

সেই উগরে দেয় ক্রোধ, লোভ ও মাৎসর্য

শ্রীহীন এ সংসার তাই! 

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug bangladesher_kobita

নাদরাতুন নাঈম

বাং লা দে শে র  ক বি তা

না দ রা তু ন  না ঈ ম

হলুদ শরীর 

রেণুর মতো উড়ে যাওয়া বয়স 

হলুদ থাকে বিস্তর 

সবুজের মতো প্রাচীন ঘ্রাণ ছুঁয়ে ঝরনা

ঝরে মাটির শরীরে–

মোমের মতো 

পালকের মতো 

পাপড়ির মতো 

ঝরে পড়ে ঝিলমিল

পানির প্রাচীরে আঙুল ছুঁয়ে বসন্ত বলে,

আজ আর অভিমান করবো না 

আজ আর কাঁদবো না 

আজ আর মরতে চাই না 

একদিন হলেও–

আমার মৌমাছির মতো বাঁচা উচিত।

 

দুঃখ

মুখ বুজে থাকা বিড়ালের মতো দুঃখ

অসীম হতে থাকে,

পাথরের প্রস্রবন চিরকাল অলীক কল্পনা

তবুও ভাবি– একটা কুলকুল জলপ্রপাত 

তেষ্টা ফুরাবে।

ক্রসরোডে পড়ে থাকা স্মৃতির ছাই

কখনো নড়বে না 

থমকে থাকে–

যেভাবে থমকে থাকে অন্ধকারের ক্রিয়ালাপ।

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug kobita

শুভায়ু দে

ক বি তা

শু ভা য়ু  দে

বেবিশাওয়ার

লালবুক মাছরাঙার মতো জলের দিকে চেয়ে আছে উপোসী চোখ। বেদনার গিরগিটি, সমুদ্রের সামনে কেমন শোক ভুলে যায়। পিপাসা সামনে এলে চাতকও ড্রেনের জল চেখে দেখে।

 

পোয়াতি রোদের মুখ মুনবাথে চকমক, গড়িয়ে পড়েছে বালি। আগুন ঠাণ্ডা হয়। আত্মারা ডুবে যায় সান্ধ্যস্নানে।

 

চিঙ্গারি কোই ভড়কে…

পথচলতি গানে আগুন ধরায় সান্ধ্যবিড়ি। আগুনের নাম নেই, ঘাম নেই, শাম নেই, নেই রে। হলুদ মফস্বলে বেদনাঘন্টার পাশে ঘুমিয়ে পড়েছে অতন্দ্রিলা। বিকেলের হ্যারিকেনে পুষে রাখা সহস্র জোনাকি আমাকে বিদ্যাসাগর বানাবে। মজুর শ্রমিকঘরে অকালে রাত্রি আসে, ঘেমে যায় বিছানাচাদর। তবু কেউ প্রেমে পড়ে, আগুন জেনেও। অসম নেশার বিষ ভাই কাটে, কাটে বোন। ব্যাখ্যা জানে না কোনো ভাস্কো-ডা-গামা।

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug kobita

অর্ণব মুখোপাধ্যায়

ক বি তা

অ র্ণ ব  মু খো পা ধ্যা য়

ফিরে যেতে হবে বলে

ফিরে যেতে হবে বলে আসিনি কখনো,

শুধু ফিরে যেতে হবে বলে বাড়াইনি এক পা-ও,

যদি জানতে চাও কোথায় ছিলাম, এ ক’টা দিন—

একথোকা বোগেনভিলিয়ার গল্প করব। 

পিয়াৎজা দেলা’র ডোম থেকে উড়ে যাওয়া 

একথোকা পায়রার কথোপকথন, যে যুবক—

খুব তাড়াহুড়ো, সাইকেল মাটিতে ফেলে দৌড়!

তার একথোকা ভালোবাসার গল্প করব। 

আমার জন্যে পিরিচে সাজিয়ে দেওয়া জলখাবার,

আর একথোকা ক্ষুধার্ত মুখের কাছে

ফিরে যেতে হবে বলে আসিনি কখনো,

শুধু ফিরে যেতে হবে বলে বাড়াইনি এক পা-ও। 

 

একটা ফুলের তোড়া

তার হাতে ছিল একটা ফুলের তোড়া,

লাল রিবনে বিদায় উপহার, খবর পেয়েছে

দূর পাল্লার মেঘ, পাখিদেরও নাকি ইনসমনিয়া!

 

ছিপছিপে নদী, জানলায় জমা বেলুন বেলুন মেঘ,

দু’কোয়া ঠোঁট তোমায় ছুঁয়েছিল— জাহ্নবী নামে 

ডাকলে বুঝি তাকে!      

 

শীতের ঘর, ফায়ারপ্লেসের এক-দু’ফোঁটা ঘাম,

লাল রিবনে বিদায় উপহার, আর ক’টা দিন 

থাকলে না পাশাপাশি—

 

ফাঁকা ফাঁকা ঘর, কয়েকটা বই, পড়ে থাকা বার্বান,

রিবন খুলে মধ্যরাতের চুরুট,

তার হাতে ছিল একটা ফুলের তোড়া।

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug kobita

রাজু দেবনাথ

ক বি তা

রা জু  দে ব না থ

এলিজি

যে নেই, তার না-থাকা প্রতিধ্বনিত হতে থাকে

এই মহাবিশ্বের প্রতিটা কণায় 

 

হৃদয়ের ছায়াপথে– এক স্তব্ধ হাহাকার

অনন্তের দিকে হেঁটে যায়!

 

স্তব্ধতার গুদামঘরে

পুরনো ফাইলের মতো এই সব মৌনতাগুলো

সময়ের ধুলোবালি, মাকড়সার জাল মেখে

স্তব্ধতার গুদামঘরে অবহেলায় পড়ে থাকে

 

প্রয়োজন ছাড়া কেউ ফিরেও তাকায় না

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug kobita

গার্গী সেনগুপ্ত

ক বি তা

গা র্গী  সে ন গু প্ত

পুরনো লেখার পাশে

এতোটুকু লেখা হলে বিষাদের কাছে ফিরে আসি
গান রেখে গেছে গাছ জানালার পাশে
উঠে আসে ব্রহ্মনাদ কৈশিক নেশায়।

এতোই কঠিন ছিল বঙ্কিম ভুরুর চিহ্ন খোঁজা!
এতোই কঠিন ছিল বলা, ‘অভিমানী, ফিরে এসো’…

চুঁইয়ে নামছে রস

               অব্যর্থ লেখারা মধুকোষ। 

 

বইমেলা

সাজিয়ে রেখেছে সব
আতসকাচের সিঁড়ি, রঙচঙে মাটির পুতুল
প্রাচীন শহর আর, ধ্বংসাবশেষ।
কেউ কেউ সাজিয়েছে মেঘের মিনার,
বজ্রপাতে মুঠো ভরা কারো বা স্বভাব।
কারো কাছে আছে জাদু, উলটিয়ে দিলে
বিষাদসিন্ধু, তরঙ্গের পিঠে।
কেউ খুব পরিপাটি, সাজানো গোছানো
আবহাওয়ার পূর্বাভাস  
ফর্মার ফরমায়েসে বিছিয়ে রেখেছে।

বন্ধুজন এরা সব, নিরীহ পাতায় লেখা
ছন্দবদ্ধ চন্দ্রাহত দুরন্ত কীর্তন
মাঠ যেন মাতিয়ে রেখেছে।

আরও পড়ুন...

Categories
2022_aug kobita

শ্রীতন্বী চক্রবর্তী

ক বি তা

শ্রী ত ন্বী   চ ক্র ব র্তী

উন্মুখ 

সহসা আলোভেদে চিনে নাও সুখ, 

ছেঁড়া ছেঁড়া তুলো মিলে পিলসুজ বারোয়ারী 

কাশফুল, ধানগোলা আকাশের বুক।

 

চেনো তো ভ্রুকুটি সবটুক, 

চেনাশোনা পাঁচতারা, বসন্তবৌরি 

আল্পনা, পানপাতা, চির-উন্মুখ।

 

দূরবর্তী

কোথাও কোথাও শ্যামকাঞ্চন মেঘের আকুলতায় তোমার নাম লিখে রেখেছিলাম,

মথিত মাটিতে বীজরোপণ চলছিলো, 

তোমার ছায়ার সুগন্ধে উন্মনা স্থলপদ্মগুলো আরো ভরন্ত হয়ে উঠছিলো, 

খুঁট-জড়ানো বিড়ম্বনার মাঝে সন্ধ্যাতারা ফুটে ওঠা দেখেছিলে? 

স্থল থেকে জল, জল থেকে নক্ষত্রপুঞ্জ, 

নক্ষত্রের রিক্ততা থেকে বিন্দু বিন্দু সূর্যপ্রলাপ,

সূর্যের মতিভ্রম?

নাকি তুমি আরো দূরবর্তী হয়ে উঠছিলে!

আরও পড়ুন...