Categories
2023_june&july kobita

সম্পা পাল

ক বি তা

স ম্পা  পা ল

এরপর আর বাক্য থাকে না

এ যাবৎ যা লিখেছি তাতে কোনো রিয়ালিজম নেই।
শুধু পুষে রাখা তীব্র আকাঙ্খা!
অথচ আমার কোনো নিজস্বী নেই, আপন সংখ‍্যা নেই।

স্বপ্নের মধ্যে হিপোক্রেসি খুঁজি।
ধ‍্যানের মধ্যে গৌতম বুদ্ধ।

এভাবেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছে প্রত‍্যেকটি দরজা
উড়ে যাচ্ছে একদল গাছ
উড়ে যাচ্ছে শাড়ির আঁচল, ওড়নার কিনারা।
সরে যাচ্ছে মানুষগন্ধ।

এরপর আর বাক্য থাকে না…

 

এক তরুণীর দুটো চোখ

প্রথমটি মুদ্রিত পৃষ্ঠা!
তুমি প্রচ্ছদ ভেবে উলটে গেছ
অথচ স্বর থেকে স্বরের দূরত্বেও একটি কাগজ গনতন্ত্রিক হয়ে ওঠে।

দ্বিতীয়টি একটি গাছবাড়ি!
যার ঠিকানায় শব্দ পোস্ট করোনি দুঃসাহসিক হবার ভয়ে!
আসলে সব দুঃখই আপেক্ষিক।

তৃতীয়টি একটি আড়াল!
পালিয়ে গেছো একটির পর একটি মাইলস্টোন।
সঞ্চয় ছিল শুধু এক তরুণীর দুটো চোখ …

আরও পড়ুন...

Categories
2023_june&july kobita

রবীন বসু

ক বি তা

র বী ন  ব সু

বিমূর্ত প্রভেদ

সম্প্রসারিত বিকেল খুলে দিল গিঁট

হাওয়ার মশারি থেকে উড়ে যায় ঘুম

বদ্ধ ঢাকনা খুললেই গন্ধের চিৎকার

ক্লেদাক্ত ভূমিকা থেকে মানুষের দল

সরে আসে, বাহ্যজ্ঞান তিরোহিত হয়

আরও এক পঙ্কিল আবর্তে সেঁদিয়ে 

ধুন্ধুমার বেধে যায়, এইবার তর্পণ

সাদা কাক উড়ে যায় শস্যহীন দিন

বালির উৎসবে মাতে স্মৃতি পরম্পরা

আমাদের গিলে খায় পোড়াদগ্ধ কাঠ

তবু সম্প্রসারিত যে বিকেল তির্যক

চাহনি নিয়ে হাঁটছে, তার গায়ে দেখি

সম্ভ্রমহীন পোশাক আর চক্রাবক্রা

উল্লসিত প্রাচুর্যের পরত প্রলেপ

টেরাকোটা সেজে ওঠে বিমূর্ত প্রভেদ

তবু, বানানো গল্পেই রয়েছে বিভেদ।

 

ভগ্ন অবলোকন

একটি স্বচ্ছ ধারণা থেকে বেরিয়ে

আরও একটি অ-স্বচ্ছ ধারণা গিলে নিলে

জটিলতা বেড়ে যায় দ্রুত; সাবধানে

পা ফেললেও অভিকর্ষ বলের থেকে 

ঠিকরে ওঠে যাবতীয় প্রচেষ্টা; নিমিত্তের 

ফাঁক গলে যে সন্ধ্যাতারা উঠে এল ধীরে

তার পালকের হাওয়া পৃথিবীকে অতিক্রম

করে অন্য গ্রহের দিকে ধাবিত হলে 

নাম সংকীর্তন শুরু করে নক্ষত্রেরা; অনন্ত 

আলো কিংবা অন্ধকারের কোল ঘেঁষে

সাংসারিক প্রণিপাত পড়ে থাকে, পড়ে আছে 

পরিত্যক্ত হাড়ের টুকরো বিষাদ-মালা ও

অবৈতনিক কোনো পরিশ্রমের দীর্ঘশ্বাস।

এই যে গ্রন্থিত পরম্পরার সুবিশাল আয়োজন

প্রক্ষিপ্ত ইচ্ছার কাছে হেরে যাওয়া প্রতিদিন

নির্লিপ্ত সুখের ঘরে তালাচাবি এঁটে দিয়ে

দীর্ঘ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ে সময়ের মেগাস্থিনিস 

স্যাণ্ড্রাকোটাস রাজদরবার আর পাটলিপুত্র

চেয়ে আছে স্থির দৃষ্টি ইতিহাসের ভগ্ন অবলোকনে।

আরও পড়ুন...

Categories
2023_june&july kobita

শোভন মণ্ডল

ক বি তা

শো ভ ন  ম ণ্ড ল

একটি চুম্বনের ইতিবৃত্ত

একটা বিশাল আকারের চুমুকে জমিয়ে রেখেছি বহু বছর

গার্লফ্রেন্ডকে দেওয়া হয়নি,  সে তখন অন্য চুম্বনে মিশে গিয়েছিল

আমার স্ত্রীর আলার্জি, চুম্বন-ফোবিয়া,  হোমিওপ্যাথি চলছে

 

জমানো আছে  ঠোঁটের দেরাজে আজও

বয়স হচ্ছে।  কী করি তাকে নিয়ে। ভাবনা হয়।

 

 যে মেয়েটি বাড়ির কাজ করে,  ফুল গাছে জল দ্যায়,

তাকে দেবো?  ভেবেছিলাম দু’ একবার, তারপর দেওয়া আর হলো না।

 

চুমু তো চাইমিন নয়। বেচা যায় না। লোনও হয় না

ডলার, পাউন্ড, দিনেমার, কিংবা ইউরো তো দূর অস্ত, রুপিয়া ভি নেহি মিলেগা

 

স্ত্রীর বান্ধবী, বাঁকা চোখে তাকায়, চোখে নেশা আছে

কোয়া-ঠোঁট, আদুরে টোল।

ওকে কি মানাবে এই চুমু? নিজেকে জিজ্ঞেস করি।

একটা সেনসেশন হয় বটে! তবে শিহরন তো আসছে না!

 

কখনো মনে হয়, মেট্রোর লেডিস সিটে বসা আধুনিকার গালে রেখে আসি এই চুম্বন

কখনো ভাবি, ওই যে ডাগরডোগর মেয়েটা,  কলতলায় জল ভরছে, ওকে?

 

হাঁপিয়ে উঠছি

এদিকে ছটপট করে মরছে প্রিয় চুমু

 

চুমুর কি নিত্যতা সূত্র বলে কিছু হয়?

ফিজিক্সের প্রফেসর, বন্ধু আমার, বললো, হয় তো

শোনা মাত্রই চুমুকে ঠোঁট থেকে টেনে নামিয়ে, কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ছড়িয়ে দিলাম

 

ছড়িয়ে দিলাম আমার প্রিয় শহরের প্রতিটি কোণে কোণে

আর গড়ে উঠুক চুমুর পীঠস্থান

 

মঞ্চ

একটা অলৌকিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছি প্রিয় বান্ধবীদের

বান্ধবী মানে— সৃজা, সম্পূর্ণা, সমর্পিতা আরও কয়েকজন

ওদের অঢেল সময়

সর্বক্ষণ এই মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে।

পিএনপিসি করে

 

আমার সময় কম

পারফরম্যান্স শেষ হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিতে হবে ডায়াস

মজুরি বুঝে নিতে হবে

 

তারপর খুলে ফেলতে রাজার পোশাক…

আরও পড়ুন...

Categories
2023_june&july kobita

রূপক চট্টোপাধ্যায়

ক বি তা

রূ প ক  চ ট্টো পা ধ্যা য়

মে দিবস 

বমি থেকে একদিন ঘেন্নার জন্ম হয়েছিল,

আর বদ পুরুষের নোখর থেকে

আলজেরিয়ার, সোমালিয়া, সুদান!

 

ঈশ্বর এখানেই থেমে থাকেননি

সমুদ্র মাখা শতছিন্ন গেঞ্জির ভেতর 

লৌহটান পেশির খাঁজে খাঁজে শ্রম দিয়ে

বললেন— যাও তুমি শ্রমিক হও!

অথচ কী আশ্চর্য 

কিছু মুখচোরা পুরুষ 

তখনও শুধুই প্রেমিক হতে চেয়েছিল!

 

সংসার

নিজের শবদেহই তো কিনে নিয়েছি তোমার কাছ থেকে।

অথচ এক পয়সা কানাকড়ি ছাড় দিলে না।

 

প্রান্তিকায় কুসুম আভাস, মৃদু চন্দ্রপাতে রামধনু, 

রেশম নরম বাতাসের আগে কুহু বিগলিত বেলায়

এমন শবদেহ নিয়ে কত কত জন্ম স্বাদে

বেঁধেছি ঘর। তুমি জানতেও চাওনি!

 

শুধুই বানিজ্যিক আঙুলের টানে

শবদেহ টেনে টেনে তুলে গেলে তুমুল মতান্তরের

মেঘমল্লার!

আরও পড়ুন...

Categories
2023_june&july kobita

মধুছন্দা মিত্র ঘোষ

ক বি তা

ম ধু ছ ন্দা  মি ত্র  ঘো ষ

অস্ফুট কবিতার পান্ডুলিপি

হাওয়ার নকশা তোলা 

রূপালি বালির প‍্যালেটে

নীল জলের স্ফটিক স্বচ্ছতা 

ভ্রমণের এজমালি চেয়ে

ভেসে গেছি সাগরবেলায়

 

স্বরচিত হয়ে যাচ্ছি 

পরের পৃষ্ঠায় লিখে রাখছি সমুহ গন্তব্য 

একলা পাখির মতো ডানা খুলে 

উব হয়ে বসি

 

স্থিতধী শুনে যাই

দূর অন্তরীপের পায়ে

ঢেউ ছলকানো ছলাৎছল

 

আর আমি,

পর্যটন অছিলায় দু’হাত পেতে বসে থাকি

চিনতে চিনতে, দেখতে দেখতে পৌঁছে যাই

ধীবর বস্তি, উজ্জ্বলরঙা নৌকা, বসতবাড়ি, গ্রাম

অনাঘ্রাতা আরও কত আদিম সৈকত 

 

দিন শেষে সফেদ বালুকণাগুলি

পরিশ্রান্ত পদক্ষেপে খসে যায়

 

আরও পড়ুন...

Categories
2023_june&july kobita

অন্তরা দাঁ

ক বি তা

অ ন্ত রা  দাঁ

অপত্যসুখ

 

এক দুঃখ ছাড়া আর কীই বা পেলাম

নিজের মত করে?

 

তোমাকে ছুঁতে গেলে এখন

পেরোতে হয় কানাগলির ক্ষত

 

অথচ অপারগতার পাঁচিলে পা ঝুলিয়ে বসে থাকে চক্ষুষ্মান অপেক্ষা

 

যেন শীত বিকেলের আলো

ঝুপ করে মিলিয়ে যাবে!

 

ইস্কুলবেলায় ঘন্টা বাজলে

আমার কেমন যেন আলুথালু আনন্দ হতো!

 

এখন যেমন হয় তোমার রিং-টোনে

অথচ তুমি আমায় মুক্তি দাওনি ইস্কুল দিয়েছিল!

 

তুমি আমায় বড় করে দিলে

টেনে বাড়িয়ে দিয়েছ গন্ডী

 

ইদানীং হোঁচট খেতে খেতে শিখে গেছি কেমন করে সোজা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় রোদ-বৃষ্টিতে

 

তোমার পাশে দাঁড়িয়ে যদি

একবার মেপে নিতে চাই আজ কতটুকু ছাপিয়ে গেছ আমায়! দেবে?

 

তোমার কাঁধের দিকে উন্মুখ চেয়ে থাকি, কত উঁচু!

ভাগ্যিস!

আমি কোথায় দ্বিধা রাখতাম বলো? 

 

আর মাথা?

সন্তান বড়ো হলে সে আশ্র‍য় হয়ে যায়

 

আজকাল আমি অকাতরে তোমার ছায়ায় জিরিয়ে নিই।

আবার দুঃখ পাব বলে।

 

 

 

তোমার শহরে গোধুলি আলোতে হাঁটতে হাঁটতে দেখি

কাটা দাগের মত বিক্ষত সন্ধ্যা নামছে কালচে হয়ে

সিগন্যালের সন্ধ্যাতারা তবু সংকেতবহ

বসন্ত আছাড়িপিছাড়ি অশোকে-পলাশে

মৃত্যু কাঁধে নিয়ে রাস্তা পেরোয় জীবন

এক জীবনে বাঁচতে আমার কম পরে যায় তাই

জন্মান্তরের গিঁট বেঁধে রাখি আঁচলময়

মাথা নীচু করে নিরীক্ষণ করি পথের বালি-কাঁকড়

পোকা-মাকড়

উত্তর কিম্বা দক্ষিন

পূব অথবা পশ্চিম

কম্পাসে একমাত্র তুমি— গন্তব্য আমার

এক সমুদ্র নোনা ঢেউ আজীবন ছুঁতে চায় বালিয়ারি

চাঁদ শুধু পাঁজি দেখে হিসেব রাখে

কবে পড়ছে পূর্ণিমা

জোয়ারের টান!

 

ঠিক যেমনটা তুমি কর।

আরও পড়ুন...

Categories
2023_june&july kobita

সন্দীপন দাস

গু চ্ছ ক বি তা

স ন্দী প ন  দা স

দ্য ব্লু প্যালেস     

অনেকদিন হলো কোনো গল্প শোনাতে গিয়ে কেঁদে ওঠোনি তুমি

আর আমারও মুক্তি ঘটেনি

দেখেছি আমার চারপাশের অন্ধকার ফুঁড়ে উঠে এসেছে এক প্রেমের কাহিনী

যেখানে শূন্যতা প্রেমিক, প্রেমিকা তুমি…

অনেকবার ব্রেক-আপ হয়েছে তোমাদের, তারপর আবার মাটির টানে,

চোখ উপড়ে নেওয়া চেনা কোনো তূণের টানে ফিরে এসছো তুমি

তোমার এই বারবার ফিরে আসাটা মেনে নিতে পারেনি

নদী, জঙ্গল, মনখারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকা পিরামিডও…

এমনকি মনকেমনের মেঘ দু’হাতে হাওয়ায় ওড়াতে ওড়াতে

সাহারা ক্রস করে গ্যাছেন ডিরেক্টর

সূর্য অস্ত গ্যাছে,আবার একরাশ অন্ধকার গ্রাস করেছে আমায়

আমি আর সহ্য করতে পারিনি… শহর ঘুমোলে চুপিচুপি উঠে গ্যাছি

সারাগায়ে অন্ধকার নিয়ে

তুমি আলো হয়ে আসবে বলে…

 

কতদিন কোনো ভাঙ্গা ইমারতের গল্প শোনাতে গিয়ে

কেঁদে ওঠোনি তুমি

আর…

pujo_16_sketch2

ভলক্যানো

আকাশ মেঘলা, মনখারাপ করে শুয়ে আছে নদী

একটা সারস উড়ে এসে বসে ঠোঁটে এক অদ্ভুত আলো নিয়ে

অন্ধকার তা দ্যাখে, দ্যাখে সন্ধেমণি ফুল, মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবও…

কিন্তু কেউ সেই আলো ছুঁতে পারে না

শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দ্যাখে তুমি কি নিপুণতায়

ওই আলো নিয়ে মেখে নাও তোমার সারা শরীরে

আর তারপর…

তারপর ঠোঁটে করে সমস্ত মনকেমন,মেঘরঙা ইচ্ছে

আর সম্রাটের জন্মান্তর নিয়ে উড়ে যাও কোনো এক

ভলক্যানোর দেশে…

আমার সমস্ত ফেরা মিথ্যে হয়ে যায়

দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখি আকাশ মেঘলা,

মনখারাপ করে শুয়ে আছে চোখ হারানো একটা সারস…

pujo_16_sketch2

মোচন

তোমার অপেক্ষায় আলো ছুঁয়ে থাকি…

 

রাত নামে…

আলনায় বাবার লুকানো ঝাঁপি থেকে লাফ দিয়ে বেরোয় একটা সাদা বেড়াল

মিউ মিউ করতে করতে জীবন শোঁকে আনাচ-কানাচ

রাতের ভাত চাপিয়ে ঝিমটি কাটেন মা

আমার কেমন যেন শীত শীত করে…

তাই দেখে বিড়ালটার খুব অভিমান হয়

ও লেজ উঁচু করে ভাতের হাঁড়ির সামনে

মা আধপোড়া কাঠ নিয়ে ছুটে যান…

ভাত তখনও ফোটে…

সাদা ধোঁয়া থেকে বার হয়ে আসে ক্ষুধার্ত বাঘিনী

আমার ঘেঁটি ধরে নিয়ে যায় আলোর সাম্রাজ্যে

আমার চোখে-মুখে ধাঁধা লেগে যায়

আমি রা কাটতে পারি না… মুখ থুবড়ে পড়ি

তাই দেখে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ো তুমি

ভাবো, এই বুঝি নির্বাণ পেয়ে গেলে…

 

ভোর রাত হয়ে আসে

মুখে রক্ত নিয়ে আমি এখন খিদেপেটে শুধু মা’কে ছুঁয়ে থাকি…

pujo_16_sketch2

ব্যাধ

তুমি ফেরত চেয়েছিলে চেনা পথ, মশগুল সন্ধে, সব না বলা কথাদের… 

ফেরত চেয়েছিলে সেই নদীটিকেও যার কিনারে বসে

তুমি এক এক করে নাম দিয়েছিলে ঘরফেরত পাখিদের, বন্ধুদের, সন্ধের গানকেও… 

সেই নদীটি, যে নদীটির আড়ালে আমাদের ছোঁয়াচে ডাকনামগুলো

আজও অনর্গল মুখ লুকিয়ে সারারাত কাঁদছে ঈশ্বর হবে বলে… 

সেই নদীটি যে কখনো তোমায় বলেনি নিজের হারিয়ে ফেলা নাম, অচেনা শহরের সমস্ত রাস্তা কিংবা 

চেনা শহরের সমস্ত খোলা জানলাদের কথাও … 

তুমি সত্যি সত্যি সেদিন ফেরত চেয়েছিলে এই অসম্ভব বেলাশেষের আলো, তোমার ঈশ্বর আর

লেখা এ কবিতা… 

আর আমি?… আমি আজও এই মরে যেতে চাওয়া

নদীর কিনারে দাঁড়িয়ে তোমায় কিছুই ফিরিয়ে দিতে পারিনি… 

কিচ্ছুটি না… 

এমনকি আমাকে দেওয়া তোমার সেই

ভালোবাসার ডাকনামটিও…

pujo_16_sketch2

সম্রাজ্ঞী

সকাল মৃত্যু লেখেনি, লিখেছে বিকেল

সেই বিকেল গাছেদের শরীর থেকে খুলে

নেওয়া পোশাক… ঝুঁকে পড়া সাঁকো

ঘোলা জল ছুঁয়ে রেখে যাওয়া এলোমেলো আলো

আদিদেবতার আদিম রহস্য… 

 

প্রতিটি সন্ধেই আহত ঘোড়া; অল্প আলোতে গলিতে

গলিতে গান ফেলে রাখে কারা? 

মুখ লুকিয়ে কাঁদে সন্ধেমণি ফুল, মাটির খিদে… 

 

একা হয়ে আসছে নিয়ন আলো

একা হয়ে যাচ্ছে উজান-ভাঁটির দেশ

দাঁড়িয়ে থাকা আস্তাবল, ধানখেত, পথের পোস্টার শিশুটিও… 

 

তুমি মৃত্যু নিও না, আলোটুকু নাও

কারন তোমাকে বোঝার মতো

সন্ধে এখনও নামেনি… 

আরও পড়ুন...

Categories
2023_june&july kobita

কৌশিক সেন

গু চ্ছ ক বি তা

কৌ শি ক  সে ন

টেকনিক্যাল ফল্ট

ডাউনলোড করেছি ধীরে ধীরে

দারুচিনি, লবঙ্গের ঝাঁঝ

শাপিত ফাল্গুন

রুআফজার রঙ

 

শেফালীকে বোলো,

যেন ওয়াইন কালার লিপস্টিক ছুঁইয়ে নেয়

ফিনিশিং টাচে!

pujo_16_sketch2

আলোকিত পদক্ষেপে অনেকটাই পথ

স্নেহভাজন প্রেমিকার নাভিতে স্থলপদ্ম লাগিয়েছি,

নিপুণ হাতে মুছে ফেলেছি পেঁয়াজ-পান্তার স্মৃতি।

 

এখন শুধুই কাচের চুড়ি বাজে,

ছেনালিতে ভরে গেছে ঘরবসত

গোস্ত বিরিয়ানির গন্ধে ভরে গেছে মীনাবাজার।

pujo_16_sketch2

স্থির রাখো,

এ রতিক্লান্ত শরীরে আর কোনো ভাষা নেই।

ধীরে ধীরে স্পীড কমে যায় সমস্ত চলাচলের।

 

স্পর্শসুখ বলে কিছু নেই যেন,

টাচস্ক্রিনে কোনো অনুভূতি হয়না আর।

বোধের সীমানায় অন্তর্বাস ছেড়ে এসেছি,

দেখা যাক!

pujo_16_sketch2

বাঁজা স্থলপদ্মে ফুল ফোটেনি কোনোদিন,

জলের ভাঁজে ভাঁজে কলঙ্ক।

 

শেফালীকে বোলো,

লিপস্টিক মুছে নিতে

হলুদ বাল্বের আলোয় যেন জুড়ে নেয়

ড্রেসিং আয়নার ভাঙা টুকরোগুলি।

 

ফিরে আসবো একদিন,

ততদিনে ডাউনলোড হয়ে যাবে

অখণ্ড আকাশ।

pujo_16_sketch2

আরও পড়ুন...

Categories
2023_may kobita

প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত

গু চ্ছ ক বি তা

প্র সে ন জি ৎ  দা শ গু প্ত

ওম

কে বলে শীতকাল ট্রামে কাটা পড়া কবির রক্তের মত জমাট? সে সব রুমানি কথা, ছোড়িয়ে জনাব! এ’দেশে শীত আসে না আর। বহুদিন লা-পতা৷ কৌন জানে কঁহা, কোন ভিরান পাহাড়ি রাস্তায়, ধুলোমাখা একচিলতে ঝোপড়িতে গুসসা করে মুখ লুকিয়েছে, মাগি! শুধু এই বদনুমা হাইওয়ে, বুড়া অজ্গর, ফন্ ছুপিয়ে বসে থাকে। সর্দ কী মৌসম আসলে, টেঁটুয়া দাবাতে চায়, মাদর্ জাত! 

 

লেকিন হাম ভি কামাল কা ড্রাইভার হাঁ, মরণফাঁদ এড়িয়ে ঘোরাই স্টিয়ারিং আর দেশী দারু’তে কুল্লা করে থুক্ দিই ওর মুখে, মাছির মত ভিনভিন্ করে কাঁদে, আমি তাকাইও না, ঘরে জেনানি আছে সাব! সে আমায় ভালোবাসে, আমি তার শরীর, বাচ্চা হবে, ডুগডুগি বাজাব, নাচব হারামি লৌন্ডার সাথে। শুধু বাসিরুটি সবজির মত কিছু রুখা-সুখা খোয়াব, এই সড়ক, বেশ্যাবাড়ি আর পুরনো ধাবার ভাট্টির গনগনে আঁচ, আমাদের বলে যায়, উহ্ ছোকরি আসেনি ফিরে। আরাবলী অঙ্গার ঘেঁটে লিখে রাখি গুমসুদা রিপোর্ট, তাপ পোহাই না।

 

এ’দেশে শীতকাল নেই জনাব! আছে ভুখ্, কর্জদার, আর ট্রাকের ফেঁসে যাওয়া টায়ারের মতো নসিব। এ সব জেনে কী হবে, বাবুমশাই, শায়েরি…

 

pujo_16_sketch2

টান 

হে আমার ভূতগ্রস্ত দুপুর, 

আমায় পুকুরপাড়ে নিয়ে চলো – 

 

যেখানে কেউ আসে না এ-সময়

 

পাড়ার বিধবামহল জানে, 

অতৃপ্ত কিছু মায়া কুহকিনী

অতন্দ্র পাহারা দিচ্ছে, 

 

নিষিদ্ধ জাদুটোনায় গলে পড়া মুখ

 

কাছে গেলে জল থেকে উঠে আসে হাত, 

শাঁখা-পলা, এয়োতি চিহ্ন…

 

পা টেনে ধরে, তলিয়ে নিয়ে যায় জলজ ব্যূহে

 

আর আমি খাবলে ধরি মাটি

গুল্মকাদাজলে বিঁধে যায় নখ

 

হে আমার ভূতগ্রস্ত দুপুর, 

জল ঢালো, 

 

ইহজন্মের মাটি ধুয়ে যাক…

pujo_16_sketch2

দেহি মে

দশ হাজার আলোকবর্ষ পেরিয়ে তোমার কাছে আসি, মহাবিদ্যা! 

 

সানুগ্রহে রেখেছি পুরনো ক্ষতের মুখে ক্ষয়ে যাওয়া হননচিহ্ন, চক্রান্ত বিমিশ্রন, সান্ধ্য কোলাহলপ্রিয় বেশ্যাভূমি, বন্ধ্যা কুকুরীদের মাৎস্যন্যায় আর রতিক্রিয়া শেষে; যাবতীয় বাজারের থলি। শীতার্ত দুপুরে যৌনগন্ধী রোদের মত তুমি পালং, হরিদ্রা ও খলসে মাছের রক্তমাখা ভাতে নৈবেদ্য সাজাও; আর আমি জিভ চাটি। লেহন করি কাব্যভূমি, স্তাবকবৃন্দের গান, এই কাম জরা ক্ষুধার ব্রহ্মাণ্ড খুচরো বাবদ দিয়ে যাব তোমায়৷ তুমি তা দিয়ে খণ্ড খণ্ড মাংসপিণ্ড ছড়িয়ে বায়স সন্ধানী, তর্পণের পর যেভাবে স্রোতস্বিনী টেনে নেয় নাভিমূল, আমি হাত পেতে থাকি দক্ষিণা লোভাতুরা, জরায়ুদগমে। 

 

দশ হাজার আলোকবর্ষ পেরিয়ে এসেছি দুয়ারে তোমার, বিদ্যেধরী, আমাকে দেহান্ন দেবে না?

pujo_16_sketch2

আত্মজ

তোমাকেই বই ভেবে পড়ি

অনাঘ্রাত পঙক্তিমালা যেন

 

পাতা ওলটাই, ঘ্রাণ নিই, আঙুলের দাগ

রেখে যাই সস্নেহে; বালিশের পাশে

চশমা খুলে স্পর্শ করি আখর 

 

ঘুম হয়ে নেমে আসো ঘুমের ভিতর

পাঠোদ্ধার করো, অবোধ্য যা কিছু আবদার

 

শোনো, ব্রহ্মাণ্ড ছাই হওয়ার আগে

একটা বইঘর দিয়ে যাব তোমায়

 

আদরের অপ্রকাশিত বর্ণমালা যত

ধুলো ঝেড়ে তুলে রেখো তুমি…

pujo_16_sketch2

আরও পড়ুন...

Categories
2023_may kobita

পিন্টু পাল

গু চ্ছ ক বি তা

পি ন্টু  পা ল

ক্লাসরুম 

দু-পা, ভেবো না এতো, ঢুকে যাও 

 

কুচিকুচি কাগজ ? 

দেওয়ালে রয়েছে কি সূত্রের সংকেত ?

 

দ্যাখো, টগবগে কোলাহল

মাঠ হতে 

উড়ন্ত ফড়িং-এর মতো ওড়ে 

 

এসো বন্ধু 

আরেকবার একসাথে 

এক 

হতে শিখি 

pujo_16_sketch2

চক 

কালো বোর্ডের নিচেই 

ছড়ানো  

গুঁড়ো গুঁড়ো অনুতাপ 

 

হয়তো কিছুক্ষণ পর 

এটুকুও উড়ে যাবে—

 

মনে হয় স্যর, তাই 

বারবার 

চক হাতে 

আমাদের থামিয়ে

বলতেন— ‘না, না, আরো একটু থাক!’

pujo_16_sketch2

ইউনিফর্ম 

রাস্তায় সাদা জামা আর নীল প্যান্ট দেখলে 

কেমন যেন করে ওঠে বুক! 

দাঁড়াই

মনে হয় কে যেন 

শুধায়— বন্ধু, কেমন আছো? 

 

দু-চোখে বিষাদশিশির ঝরে 

 

বলি— প্রাণহীন দেবদারুর মতো 

আমি শুধুই 

আজ এক কাঠ

pujo_16_sketch2

টিফিন 

যতটুকু খেতে পারি, তার চেয়ে বেশিই

দিতে চাইতো মা 

 

মনে পড়ে 

দৌড়াতে দৌড়াতে 

কলমিগাছের ডাল ভেঙে 

কান মুলে 

মা

চিৎকার করে বলত—

‘আজও টিফিন খাসনি?’

 

স্মৃতিই, হয়তো, 

মেঘের শব্দের মতো 

মাঝেমাঝে বেজে ওঠে

 

তারপর

যতবার টিফিন খুলি 

ভেসে ওঠে মা 

 

pujo_16_sketch2

আরও পড়ুন...