Hello Testing

3rd Year | 10th Issue

৩০শে ফাল্গুন, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | 15th March, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

অ নু বা দ

প্রতি সংখ্যায় কবি অমিতাভ মৈত্র হাজির থাকবেন কিছু বিদেশী কবিতার বাংলা  অনুবাদ নিয়ে। এই সংখ্যায় কাহলিল জিব্রানের কবিতা।

উত্তর লেবাননের বিকারিতে ১৮৮৩সালে জিব্রানের জন্ম। বাবা ও মায়ের বিবাহবিচ্ছেদের পর বারো বছরের জিব্রান মায়ের সাথে আমেরিকায় চলে যান আর বস্টনের এক বস্তিতে থাকতে শুরু করেন। জিব্রানের অসাধারণ চিত্রাঙ্কণ দক্ষতা আর গুরুগম্ভীর বিষয়ে পড়াশোনার জন্য ঐ বয়সেই তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ছয় বছর হাই স্কুলে পড়াশোনার জন্য লেবাননে ফিরে যান। তারপর বস্টনে ফিরে আরবি সংবাদপত্রে নিয়মিত গল্প ও কবিতা লিখতে শুরু করেন। ১৯০৪সালে বস্টনে তাঁর ছবির প্রথম প্রদর্শনী। এর ক বছর পরেই তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘অল মিউজিকা’ প্রকাশিত হয়।

অ মি তা ভ  মৈ ত্র

কাহলিল জিব্রানের কবিতা

গারদ হিসাবে জায়গাটা হয়ত খারাপ নয়, কিন্তু আমার আর পাশের বন্দীর মধ্যে এই দেয়াল আমার ভাল লাগেনি। তবে এটাও বলি যে, আমি কিন্তু কোনোভাবেই নিন্দে করছি না ওয়ার্ডারের। এই গারদ যে বানিয়েছে তারও নয়।

কাকতাড়ুয়াকে একদিন বলেছিলাম— “একা মাঠে সারাজীবন দাঁড়িয়ে থাকতে তোমার নিশ্চয়ই খারাপ লাগে, ক্লান্ত লাগে।” হেসে বলল সে— “অন্যকে ভয় দেখানোর আনন্দ তুমি হয়তো জানো না। আমি উপভোগ করি আমার অস্তিত্ব।” একটু ভেবে বললাম— “এই তৃপ্তি হয়তো মাঝে মাঝে পেয়েছি আমিও।” হাসল সে— “পাওনি। যারা শুধু খড়ে ঠাসা, এই তৃপ্তি কেবল তাদের।” আমাকে তাচ্ছিল্য না প্রশংসা করছে সে, স্পষ্ট হল না। সরে গেলাম।

এক বছর পর আবার যখন দেখলাম সেই কাকতাড়ুয়াকে, সে তখন দার্শনিক হয়ে গেছে। দুটো কাক তাঁর টুপির নিচে বাসা বানাচ্ছে।

মাঝে মাঝেই আমার সাথে দেখা করতে আসেন দেবদূত আর শয়তান। দেবদূত এলে পুরনো একঘেয়ে একটা প্রার্থনা সঙ্গীত গাই, যাতে তিনি বিরক্ত হয়ে চলে যান। আর যখন শয়তান আসে আমি খুব প্রচলিত আর পুরনো একটা অপরাধ করার চেষ্টা করি। বিরক্ত মুখে চলে যায় শয়তানও।

দুটো খাঁচা আছে বাগানে। একটায় থাকে নিনাভা থেকে আনা সিংহ। আর অন্যটায় গান ভুলে যাওয়া এক ময়না।

প্রতিদিন সকালে ময়না সিংহকে বলে, “সুপ্রভাত, আমার বন্দী ভাই!”

একজন প্রাচুর্যে থাকা মানুষ আর একজন সর্বস্বান্তের মধ্যে পার্থক্য শুধু একদিনের অনাহার বা কয়েক ঘন্টা তৃষ্ণার।

এমনকি জীবনের মুখোশও একই রকম গভীর রহস্যময়।

দয়া আসলে অর্ধেক বিচার।

মায়ের হৃদয়ে স্তব্ধ হয়ে থাকে যে গান, শিশুর ঠোঁটে সুর হয়ে আসে সে।

আরও পড়ুন...