Hello Testing

4th Year | 3rd Issue | June-July

৩০শে আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 16th July, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

বি শে ষ  র চ না

ডঃ রূপক বর্ধন রায়

rupak2

কারাবাসের কবিতা: বাংলা অনুবাদে কবি ব্রায়টেন ব্রায়টেনবাখ

( গত সংখ্যার পর )

‘The Judas Eye’ বইয়ে ব্রায়টেনবাখ নিজেই কিছু কবিতার ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন। সে বই থেকেই এই পর্বের তিনটি কবিতা। রচনার সময় সম্বন্ধে কবি ও প্রকাশক কোনো মন্তব্য করেননি।

স্বপ্নটা

আমি স্বপ্ন দেখেছি: 

আমি এক সাদা দেওয়ালের কয়েদখানায় রয়েছি

যেখানে আমায় কেউ চেনে না যেখানে দালানগুলোয়

কন্ঠ অস্তিত্বহীন হয় যেখানে আলোর শীৎকার

আমার খুলি শনশন করে

আমি নিজেকে দেখেছি:

বিষ্ঠাক্রিয়ায় বালতির উপর উবু হতে মাছিরা

আসে গ্রীষ্ম রাত্রিদের সাথে

আলোরা সফেদ অগ্নিশিখার দীর্ঘশ্বাস নির্গত করে

আমি আমার নামকে দেখেছি:

পাঠকহীন তালিকাগুলোর তলানিতে স্থানান্তরিত 

হতে কয়েদখানার

শুভ্রতায় খোদাই করা বার্ষিক আংটির 

মাধ্যমে অধিক সতত অস্পষ্ট স্মরণ

 

আমি জেগেছি:

যখন সেই জুডাস-চোখ আমার দিকে গোড়ার চাহনিতে চেয়েছিল

এবং সিডার গাছ ও বিভ্রান্তি আর ল্যাণ্ডিং স্ট্রিপ

আর আঙুর-বন আর দারিদ্র

এবং  ভাষাটা কখনো এক পরিচিত আবছায়া-স্মরণ

যেন এই দুর্দশার বাইরেও আমি নিজেকে মনে রাখতে পেরেছি

 

এরপর আমি খুঁড়তে খুঁড়তে দুর্বোধ্যতার গভীরে প্রবেশ করি

আর ভাবি

ওহ শুধু যদি পারতাম

কেমন হত

আমায় যদি চড়তে হত দেওয়াল 

প্যারাফ্রেট থেকে গাওয়ার জন্য

‘শুভ সকাল দক্ষিণ-আফ্রিকা আমি তোমায় ভালোবাসি!’

 

সেই আগমন

ওরা আসবে, ওরা অনেকে, এতজন

যে যে-কোনো রকম গুনতিই হবে মূর্খামি, একটা ঢেউ

না সময় না পরিমাপ কোনোটাই বোঝে না,

মুখপাত্ররা চিৎকার করে ওঠে ‘পঙ্গপালের মতো!’

কিন্তু একটা জোয়ার-ঢেউয়ের পশ্চাদপদ স্ফীতির মত আসবে ওরা,

জাদু ঝর্ণার পথে চলা তীর্থযাত্রীর মতো

যেখানে ভার্জিন তার পা ধুয়েছিলেন,

এক রাজ্যাভিষেকের পথে জিপসিদের মতো,

শাখা বিস্তৃত পরিবারে তরু-অনুজের মতো

সেখানে যেখানে শিকড় বহু গভীরে জীবন্ত,

যা দখল করতেই হবে তার দিকে প্রাচীন ইজরায়েলিদের মতো,

জলমুখের দিকে উইনোদের মতো,

পরিযায়ী শ্রমিকদের মতো,

একত্রিত এক মানব ঘূর্ণির দিকে প্রবীণদের মতো,

পঙ্গপালের মত, ডানাবিশিষ্ট, জমিন-মুখী, চিমটেরা আর

তীক্ষ্ণদন্তেরা

ওরা আসে, প্রতিশ্রুত ও

একত্রিত ভূমির সমস্ত আউটপোস্টগুলো থেকে ওদের আসতেই হবে

ভুট্টা অথবা পশু অথবা যে কোনো জীবন্ত প্রাণী ধারণের পক্ষে দারুণ শোচনীয় 

যেখানে আবর্জনার স্তুপ শুঁকতে-শুঁকতে মৃত্যুর পেট হয় বাদামী

 

তোমাদের ঘেরাটোপের পরিধি প্রবিষ্ট হবে,

বিশৃঙ্খল পদ-সমূহে গুঞ্জিত হবে তোমাদের রাস্তা, 

তোমাদের উচ্চবিত্ত পাড়াগুলো শুনবে শিশু ভাষ্যের 

রণধ্বনি,

তোমাদের অ্যাপার্টমেন্ট গম্বুজেরা ভিত্তি অবধি টলমল করবে

আর তোমরা সময়ের উলটপুরান বোধগম্যে হবে অসমর্থ;

তোমাদের পোশাক পরিচ্ছদে ঘৃণ্য হুইস্কি ছিটিয়ে

পোষ্য মুরগীর দ্বারা শ্বাসরুদ্ধ হবে তোমরা আর প্রতিবাদে গুঙিয়ে উঠবে

যেহেতু স্বতঃসিদ্ধতা আর নিরাপত্তা ও কর্তৃত্বের পুরনো গঠনগুলো

আকাশের বুকে ‘পাই’ হয়ে যাবে হঠাৎই;

পারিবারিক রৌপ্য মাটি চাপা দিতে দিতেই দোষারোপের চেঁচামেচিতে

আশ্রয় নেবে তোমরা: মাটি কেমন অগভীর হয়ে ধরা দেয়!

গীর্জার সাদা-পলেস্তারার আশ্বাসনের পিছনে নিরাপত্তা, সর্বস্বান্ত 

কুসংস্কারে নেতৃত্ব, অকৃপণ দাতব্যের কারসাজিতে বোধোদয়

খুঁজবে তোমরা।

 

অঙ্গীকার

আমার সন্দেহ

তবে আমি তার জন্য আমার জীবন বাজি রাখবো না

যে ওখানে একটা দেশ আছে

এই ভুলভুলাইয়ার গতিশীল দেওয়ালের পশ্চাতে

এক কুমারীর সংশয় ঘিরে নীল ফিতে

 

আমি স্বপ্ন দেখি

আমি জানি না কেন

একটা জায়গার যা এক স্বপ্নের মতো বিস্তৃত

এবং বিয়ের গাউনের উপর আলোর মতো চায়ের দাগ

 

আর সদ্য থ্যাঁতলানো মস্তিষ্কের থেকে অসদৃশ নয় এমন টিলা 

এখনও ধূমপানরত আর সকালবেলা কম্পমান

বুড়িয়ে ছাই হওয়া স্বর্গীয় জ্বলন-রঙের 

পাহাড়

সূর্যের হাতে বরফ-শুভ্র-সম্পাদিত ড্রাগনের দাঁত

আর এই যে এ সমস্ত কিছুই ব্যাখ্যাতীত ভাবে রাতেই উদ্দীপ্ত হবে

 

যে একটা বিদ্যমান অশান্তির সাগর

উপকূলদের লিখে চলে যেখানে তিমিরা সন্তান প্রসবে আসবে

একটা সফেদ কম্পমানতা

এবং আম আর ন্যাসপাতিদের জন্য উর্বর অঞ্চল

ছোট্ট স্তন্যপায়ীদের বাতাসে খুটখুট করার

মতো মরুভূমিটাও

আর কখনও ক্ষয়িষ্ণু মুঠিটায় জং ধরা হাতলে

ওহ কী দম্ভ! অস্ত্র-ফলার মতো এক শহর

যে মন্দির বেষ্টন করা ফিতেকে ক্ষয়ে যেতে হবেই

আর চিন্তার লাগামহীন ছুট-

কারণ আমি কবিকে থোড়াই পরোয়া করি

কারণ আমি ঈশ্বর

এক দুর্ভেদ্য পাহারা

কিন্তু কিছু একটা আমায় ভাবায়

আমি জানি না ঝিলমিল 

এক বর্শা চিরে চলা ট্রেনের ব্যাপারে কিছু একটা

 

আর অসীমের মাঝে রেলপথ

আর লরিগুলো আর মক্ষী-কূপ আর ব্যথা

ক্রমশ

লেখক পরিচিতি :  GE Heathcare-এ বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত, ফ্রান্স-এর নীস শহরে থাকেন। টার্কি-র সাবাঞ্চি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করেছেন। এছাড়াও মার্কিন যুক্ত্রাস্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভারসিটি ও পি এইচ ডির পর বছর খানেক জার্মানির ফ্রনহফার সোসাইটিতে সায়েনটিস্ট হিসেবেও কাজ করেছেন। লেখালেখির স্বভাব বহুদিনের। মূলত লেখেন বিজ্ঞান, ইতিহাস, ট্রাভেলগ, সাহিত্য মনন নিয়েই। কলেজজীবনে বন্ধুরা মিলে “দেওয়াল” নামক কবিতা পত্রিকা চালিয়েছেন কয়েক বছর। এছাড়াও কবিতা, গদ্য প্রকাশ পেয়েছে একাধিক বাঙলা অনলাইন পত্র পত্রিকায়। লেখা লেখি ছাড়াও গান বাজনা, নোটাফিলি, নিউমিসম্যাটিক্সের মত একাধিক বিষয়ে রূপকের সমান আগ্রহ রয়েছে।

আরও পড়ুন...