বি শে ষ র চ না । পর্ব ৮
নারীবাদের দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় থেকে তার পরবর্তী পঞ্চাশ বছরের ফরাসী ও মার্কিনি বিশিষ্ট মহিলা কবিদের এক গুচ্ছ জানা অজানা কবিতা নিয়ে হাজির হয়েছেন বর্তমানে কর্মসূত্রে ফ্রান্স নিবাসী ম্যাডিকেল আল্ট্রাসাউণ্ডের তরুণ বিজ্ঞানী…
Marie Etienne বর্তমান যুগের একজন সুবিখ্যাত ফরাসী কবি ও ঔপন্যাসিক। এতিয়েন ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বিখ্যাত ফরাসী নাট্য পরিচালক Antoine Vitez- এর সহকারী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। আন্তোয়ানের কাজ তাঁকে তাঁর নিজের ডক্টরাল থিসিসের পড়াশোনার সময়েই মুগ্ধ করেছিল। এতগুলো বছরের একত্রিত কোল্যাবোরেশানের ফলশ্রুতি – এতিয়েনের বিশ্বখ্যাত বই “Antoine Vitez: le roman du theatre”। এরপর অবশ্য কবি ও লেখিকা এতিয়েনকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। এর পরবর্তী সময়ে, অর্থাৎ ২০০২ সালে রচিত “Roi des cent cavaliers” বইটিকে Marylin Hacker ইংরেজিতে অনুবাদ করেন, যার নাম হয় “King of a Hundred Horsemen”। ২০০৯ সালে বইটি “PEN Award of Poetry in Translation” পুরষ্কার পায়। বইটির গুরত্ব সম্পর্কে হ্যাকারের নিজের উক্তি- “… could be variously classed as fiction, memoir, and cultural history, some partaking of all three.” PEN ছাড়াও এতিয়েন পেয়েছেন ১৯৯৭ সালের “Mallarme Prize”।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাজ-
রাত্রি নামার পরেই
সেই নারীর মতো
লোকে বলে যাকে সোনালী ক্রসের কাছে বিরাট কাঠ-ব্রীজের উপর
দেখা গেছে, যা দৈর্ঘ্যে বেশ বড়। একটা দেওয়ালের উপর রাখা যেটা মূল আর্কওয়ের থেকে মুখ উঁচিয়ে আছে,
দ্বিতীয়টা
দুটো প্যারিশের মাঝে সীমান্ত চিহ্নিত করে আর শুল্ক দপ্তরও
জল কত শান্ত আর আমি কত প্রায়শই ঘোলাটে হয়ে পড়ি
বলেছিল নারী
আমি এখানে কত একা বোধ করি, কত পরিত্যক্ত
ক’টাই বা নৌকো আমার উপর দিয়ে বয়ে যায়
সত্য, এটা অথবা ওটা, তবে অন্তঃসার নয়। একটা পেঁয়াজ কাটো, তুমি দেখবে
ওটা গলে যাবে।
গণনা সঠিক হওয়ার জন্য সমস্তটা বলতে হবে; একের সাথে আরেক সংযুক্ত প্রাচীন
পাথরের ফাটল ধরা, আশাহীন উদয়, একটা দিন আর
তারপর আরেকটা এবং আরেকটা
কি ক্লান্তি। বালতিদের আসা যাওয়া ক্লান্তিকর।
বলছি কি। একটা স্মৃতিচিহ্ন অবধি নয়। কখনও সখনও পটকা-বাজি
আত্মহারা হয়ে আমি কখনও কোথাও যাই না।
নিজের অভ্যন্তরীন সুতো দেখানো দস্তানার মত উলটো পালটা হয়ে, শীঘ্রই আমি
আমার প্রয়াত শব্দরা, এবং আমায় মোড়ানো প্রণয়ী চাদর
ছাড়া কিছুই থাকবো না
ওর পুরুষাঙ্গ এখনও বেশ শক্ত, এ যেন ওর বিয়ের দিন। কেবল
একটা কাঁধ ছায়া ছুঁয়ে ফেলে। পুরুষেরা আশেপাশে বসে আছে। ওদের
হাত টেবিল চাপড়াচ্ছে
গলিটা বড়-রাস্তায় পেকে ওঠে। এক একাকী পরিত্যক্ত পাখি।
আঁখি-পল্লবের কমলাভাব
ওরা বলে এক নারী বিলীন হয়েছিল
এক উলটো-পথগামী পুরুষ
তাকে বদ্ধ রাখে
তাকে ধাক্কা দেয়
লয়ার নদী তার বালুকাবৃত সৈকত
অনাবৃত করে যেখানে পাখিরা
ডালপালার মত
অন্ধকার আকাশটা
বাসারই সংযুক্তি
ইতিমধ্যে উৎসব নিজের ছন্দে চলেছে পদমর্যাদা ও প্রত্যেকের দায়িত্ব অনুযায়ী
তৈরি আইনের মতে প্রতিষ্ঠিত অনুপাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত প্রতিনিধি বা বিশ্বস্ত
শিক্ষক কর্মীসভার সকল সদস্য উচ্চ-পদস্থ সভ্যদের সামনে
হিপোক্রাস সুরা কেক এইসব স্তূপাকৃত ছিল
ঈশ্বরের নামে
এবং সেই সম্প্রতি মৃতা
মাননীয়ার স্মৃতিতে
যার নাম রাসিন
বুদ্ধিদীপ্ত ও যার খোঁজ করে জল
যিনি সম্প্রতি চলে গেলেন
সতেরোই জুলাই সন এক হাজার…
তাঁর কাজের মাঝে
রেখে গেলেন এক
সাধারণ নারীর দৈনন্দিন
চিরন্তন প্রতিচ্ছবি
নদীর তীরে ব্রীজের পাশে যার
খোঁজ মেলে অথবা অন্য কোনো লোডিং ডকে
যাকে শুল্কগ্রাহকেরা চিরস্থায়ী করে রাখবে
যা অনুচ্চারিত
অথচ পরিচিত
সত্য ঘটনা অথবা শ্রুতি
* ক্রমশ
লেখক পরিচিতি : GE Heathcare-এ বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত, ফ্রান্স-এর নীস শহরে থাকেন। টার্কি-র সাবাঞ্চি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করেছেন। এছাড়াও মার্কিন যুক্ত্রাস্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভারসিটি ও পি এইচ ডির পর বছর খানেক জার্মানির ফ্রনহফার সোসাইটিতে সায়েনটিস্ট হিসেবেও কাজ করেছেন। লেখালেখির স্বভাব বহুদিনের। মূলত লেখেন বিজ্ঞান, ইতিহাস, ট্রাভেলগ, সাহিত্য মনন নিয়েই। কলেজজীবনে বন্ধুরা মিলে “দেওয়াল” নামক কবিতা পত্রিকা চালিয়েছেন কয়েক বছর। এছাড়াও কবিতা, গদ্য প্রকাশ পেয়েছে একাধিক বাঙলা অনলাইন পত্র পত্রিকায়। লেখা লেখি ছাড়াও গান বাজনা, নোটাফিলি, নিউমিসম্যাটিক্সের মত একাধিক বিষয়ে রূপকের সমান আগ্রহ রয়েছে।