Hello Testing

4th Year | 3rd Issue | June-July

৩০শে আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | 16th July, 2023

প্রচ্ছদ কাহিনী, ধারাবাহিক গদ্য, ছোটোগল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, স্বাস্থ্য, ফ্যাশান ও আরও অনেক কিছু...

ভি ন দে শে । পর্ব ১

সম্প্রতি ‘ইতিকথা পাবলিকেশন’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে কবি ঈশিতা ভাদুড়ীর একটি অসাধারণ দু’ ফর্মার ভ্রমণ বিষয়ক গদ্যগ্রন্থ ‘ভিনদেশে’। একাধিক বিদেশ ভ্রমণের টুকরো অভিজ্ঞতার  কিছু অংশ তিনি তুলে ধরেছেন সেখানে। এখানে প্রতি পর্বে  আমরা জানব তাঁর তেমনই আরও কিছু দারুণ অভিজ্ঞতার কথা।

ঈ শি তা  ভা দু ড়ী

অক্টোপাস টিকিট

হংকং-এ অক্টোপাস টিকিট খুব মজার লেগেছিল আমাদের। আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেনের প্লাটফর্মে ঢোকার মুখে মেশিন বসানো রয়েছে। যে ব্যাগের মধ্যে ওই টিকিট, সেটি মেশিনের সংস্পর্শে আনলেই পিক পিক করে আওয়াজ হয় এবং গেট খুলে যায়। বার হওয়ার সময়ও ওই এক পদ্ধতি। কি কান্ড! এতই শক্তিমান চুম্বকের খেলা।

আমাদের দেশে কলকাতা ছাড়া আর কোথাও মেট্রো ট্রেন চালু হয় নি তখনও । কলকাতার মেট্রোতেও স্মার্ট কার্ড চালু হয় নি তখনও, কাগজের টিকিট, অনেকসময়ই টিকিট ঢোকানো সত্ত্বেও গেট খোলার ব্যাপার নেই, টিকিট আবার ফেরৎ চলে  আসে, কখনও দুমড়ে মুচড়ে মেশিনের মধ্যেই আটকে থাকে, এরকমই ব্যাপার-স্যাপার দেখেই আমরা অভ্যস্ত ছিলাম। তো আমাদের পক্ষে প্রথম প্রথম ওই চুম্বক-খেলা বোঝা সম্ভব হয় নি। আমরা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ব্যাগ খুলতাম, তারপর ব্যাগ থেকে কার্ড বার করে ধীরে-সুস্থে মেশিনে ছুঁইয়ে তবেই ভেতরে ঢুকতাম। হংকং-এর মানুষজনের এত সময় নেই যে আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করবে, তারা অবশ্য আমাদের দেশের মানুষের মতো চিৎকার চেঁচামিচিও করতো না, আমাদের পেছন ছেড়ে অন্য গেট ধরতো। দু-একবারের পর থেকে আমরাও অবশ্য তাদের মতো চলতে চলতেই বন্ধ ব্যাগ ছুঁইয়ে দিব্যি প্লাটফর্মে ঢুকে যেতে শিখলাম।

একদিন ল্যান্টাও দ্বীপে গেলাম, টুংচুং আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশনে নেমে দেখি ‘এক্‌জিট’ গেট খোলা, মানুষজন অবশ্য তবুও তাদের টিকিট মেশিনে ছুঁইয়ে পিকপিক করে আওয়াজ হওয়ার পর তবেই বার হচ্ছে। আমরা তাজ্জব, গেট খোলা, তবু ওরা কেন যে কার্ড ছোঁওয়ায়! আমাদের মেট্রোর গেট যখন খোলা থাকে আমরা তো দিব্যি বার হয়ে যাই। তো এখানেও খোলা গেট দিয়ে আমরা দিব্যি বার হয়ে গেলাম, টিকিট ছুঁইয়ে তবেই তো ঢুকেছি, বার হওয়ার সময় গেট যখন খোলা তখন কার্ড ছোঁয়ানোর কোনোই কারণ দেখলাম না।

যাইহোক ঘুরে ফিরে এরপর আমরা যখন ফের টুংচুং স্টেশনে ট্রেন ধরার জন্যে ঢুকতে গেলাম, মেশিনের সংস্পর্শে কার্ড আনলেও মেশিন পিক পিক করে না মোটেই, তার বদলে লিখে দিচ্ছে ‘ইনভ্যালিড টিকিট’। তিনদিনের টিকিট দুদিনের মাথায় বলে কিনা ‘ইনভ্যালিড’! আমাদের তো মাথায় হাত, সঙ্গে সঙ্গে কাস্টোমার রিলেশন কাউন্টারে ছুট্‌, সে তার মেশিনে কি দেখলো কে জানে! তারপর দুবার আওয়াজ করিয়ে বলল ‘যাও, এবার যেতে পারবে’। কি হয়েছিল প্রশ্ন করলে সে বলল, ‘তোমরা তো গেট দিয়ে বার হওয়ার সময় মেশিনের সংস্পর্শে কার্ডটিকে আনোই নি অর্থাৎ তোমরা তো বারই হও নি গেট দিয়ে, তো ভেতরে ঢুকবে কি করে! যাইহোক আমি অ্যাক্টিভেট করে দিয়েছি, এখন তোমরা নিশ্চিন্তে যেতে পারবে’। বাপ্‌ রে বাপ্‌ অক্টোপাসের বাঁধন কি সাঙ্ঘাতিক!

আরও পড়ুন...